এলএনজি একটি অপেক্ষাকৃত পরিবেশবান্ধব জ্বালানি এবং বিশ্ববাজারে এটি পর্যাপ্তভাবে পাওয়া যায়, কিন্তু এটি একটি ব্যয়বহুল জ্বালানি। জাপান, কোরিয়া ও অন্যান্য উন্নত অর্থনীতির দেশে নিজস্ব জ্বালানির অবর্তমানে আমদানি করা এলএনজি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার এখন বাংলাদেশের। সেই কারণেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। এলএনজি এখানে একটি বড় চালিকাশক্তির হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। এমনটাই মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ হাফিজুল আলম।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের চালান এখন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। সেই বিবেচনায় আগামী ৫-৭ বছরে খুব বড় ধরনের কোন পরিবর্তন না আসলে বাজারদর বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই। একইসঙ্গে, এলএনজি কয়লা এবং তেলের চাইতে পরিবেশের দূষণও কম করে। দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির জন্য এখন আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণ এবং স্বস্তা জ্বালানি উৎস, দুটোই দরকার। সেই দিক থেকে রয়েছে এলএনজি আমদানি বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ।’
আগামী বছর নাগাদ ১০ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে চায় সরকার। বিশ্ববাজারে জ্বালানিটির ব্যাপক সরবরাহ এবং কমদামের কারণেই সরকার এর আমদানির পরিমাণ বাড়াতে চাইছে। এই লক্ষ্যেই পেট্রোবাংলা স্পট এলএনজি ক্রয়ের দরপত্র আহবান করে। ওই দরপত্রে সাড়া দেয়া কোম্পানিগুলোর মাঝে থেকেই ১৭টি কোম্পানিকে দরপত্রে অংশগ্রহণের উপযুক্ত বলে চিহ্নিত করেছে দেশের জ্বালানিখাতের শীর্ষ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি । পেট্রোবাংলার অভ্যন্তরীণ সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শর্টলিস্টিং প্রক্রিয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করে।
সাম্প্রতিক শর্টলিস্টিং প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রীপরিষদের অনুমোদন পাওয়া মাত্রই পেট্রোবাংলা নির্বাচিত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে এলএনজি কেনার চুক্তি করবে। তারা আরো জানান, স্পট মার্কেট অনুসারে আমরা যখন এলএনজি কেনার দরপত্র আহবান করি তখন মোট ৪৩টি কোম্পানি এতে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। সেখান থেকেই ১৭টি কোম্পানিকে বাছাই করা হয়েছে।
বাছাইকৃত এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- মিতুশি, মারুবেনি, এওটি এনার্জি, ওসাকা গ্যাস, ডায়ামন্ড গ্যাস, সামিট ওয়েল অ্যান্ড শিপিং, এক্সেলরেট এনার্জি, জেরা, গ্যাজপ্রম, ট্রাফিগুরা, উডসাইড পেট্রোলিয়াম, এনি, প্রেট্রোনাস, সিনোক, নেনাইরে এবং শ্যাভরন।
বিশ্ববাজারের পাশাপাশি সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে এশিয়ার স্পট মার্কেটেও এখন এলএনজির মূল্য কমেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্যাসের চালান এখন খুবই বেশি। একইসঙ্গে, এই অঞ্চলের বৃহৎ অর্থনীতিগুলোর প্রবৃদ্ধির গতি কমে আসায় জ্বালানিটির চাহিদাও কমছে। চলতি মাসের গোঁড়ার দিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার ১৯৭০ সালের পর সবচেয়ে নিচে নামতে চলেছে বলে পূর্বাভাষ দিয়েছে বাজার গবেষণা সংস্থা আইএইচএস মার্কিট