36 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সন্ধ্যা ৬:১৫ | ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
গাছপালা ও জলাভূমি কম থাকায় ঢাকার তাপমাত্রা বেশি
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবেশ বিশ্লেষন পরিবেশ রক্ষা

গাছপালা ও জলাভূমি কম থাকায় ঢাকার তাপমাত্রা বেশি

গাছপালা ও জলাভূমি কম থাকায় ঢাকার তাপমাত্রা বেশি

ঢাকার ২০ শতাংশ স্থানে গাছপালা থাকা উচিত হলেও আছে মাত্র ২ শতাংশে। তুলনামূলক এক চিত্রে দেখা গেছে, ঢাকার অদূরে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শতাংশ এলাকায় গাছপালা ও ২২ শতাংশে জলাভূমি।

এ কারণে একই সময় ঢাকার চেয়ে সেখানকার তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম থাকে। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা পার্ক এলাকার তুলনায় ঢাকার বাণিজ্যিক এলাকায় তাপমাত্রার থাকে ২ ডিগ্রি বেশি।

অথচ ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূপ্রাকৃতিক গঠনের কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকার কথা। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বেশির ভাগ সময় ৩ ডিগ্রি কম থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্ধেক এলাকাজুড়ে থাকা ২৭ হাজার গাছ ও প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকায় থাকা জলাভূমি তাপমাত্রা কম থাকার পেছনে ভূমিকা রাখছে। এখানে লাগানো গাছের বড় অংশ একাশিয়া ও আকাশমণির মতো আগ্রাসী প্রজাতির।

চলতি মাসে চূড়ান্ত করা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএসের এক গবেষণা সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে গবেষণাটি হয়েছে।



এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে ১৯৮৯ থেকে ২০২০ সাল, অর্থাৎ ৩১ বছরে ৫৬ শতাংশ গাছপালা কমেছে।

এখন এ শহরের মাত্র ২ শতাংশ এলাকাজুড়ে সমৃদ্ধ ও পরিবেশবান্ধব প্রজাতির গাছপালা ও লতাগুল্ম টিকে আছে। আর মোট বৃক্ষ–আচ্ছাদিত এলাকা রয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ।

গবেষণা সমীক্ষার ফলাফলে বলা হয়, মূলত ১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকায় গাছপালা ও জলাভূমি দ্রুত কমতে থাকে আর কংক্রিটের উঁচু ভবন ও অবকাঠামো বাড়তে থাকে। ঢাকার তাপমাত্রাও দ্রুত বাড়তে থাকে এ সময় থেকে। সেই সঙ্গে বাড়তে শুরু করে গরমের অস্বস্তিও।

ঢাকার মতো শহরে ২০ শতাংশ এলাকাজুড়ে গাছপালা থাকা উচিত। এটি হলে শহরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু ঢাকায় তাপমাত্রা দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে। তাই ওই সময়ে এই শহরে বৃক্ষরাজি কী পরিমাণ কমল, তা বুঝতেই সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একাধিক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকার চেয়ে ঢাকার মতিঝিল ও ফার্মগেট এলাকার তাপমাত্রা সব সময় ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান—বৃক্ষ–আচ্ছাদিত এসব এলাকাতেও মূলত আগ্রাসী প্রজাতির গাছ বেশি। তারপরও গাছের কারণেই এসব এলাকায় তাপমাত্রা কম থাকছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা শহরে কত নতুন নতুন আবাসিক এলাকা হচ্ছে, সেখানে শুধু ২০ শতাংশ এলাকায় গাছ লাগানো গেলে স্থানীয় মানুষের জন্য তাপমাত্রা সহনীয় রাখা ও ছায়া দেওয়া সম্ভব। আর পরিবেশবান্ধব গাছ লাগালে এ সুবিধা আরও বেশি।’

ঢাকায় তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণ

বন বিভাগের হিসাবে দেশের ১৪ শতাংশ এলাকাজুড়ে গাছপালা রয়েছে। আর ঢাকা শহরের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৯ শতাংশ। তবে বিশ্বের বনজ সম্পদ পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচ’–এর চলতি মাসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ঢাকার ৫ দশমিক ৯ শতাংশ এলাকায় রয়েছে গাছপালা।

অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার সময় তেমন গাছপালা ছিল না। পরে পরিকল্পিতভাবে গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।

ঢাকার তুলনায় এখানকার তাপমাত্রা সব সময় ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম হওয়ার প্রধান কারণ বৃক্ষ। ঢাকা শহরে আমরা যদি শুধু গাছ লাগানো বাড়াতে পারি, তবু তাপমাত্রা কমানো যাবে। সেই সঙ্গে শহরবাসী, বিশেষ করে এখানকার নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য ছায়া ও খাবারের জোগানও এসব গাছ থেকে আসতে পারে।’

ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএস ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গ্রীষ্মকালের শুরু থেকে দেড় মাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও ঢাকা শহরের তাপমাত্রার পার্থক্য পরিমাপ করেছে। বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ১ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাকে।

তাতে দেখা যায়, ২০২১ সালে জাহাঙ্গীরনগরের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪৭ ডিগ্রি। ঢাকায় ছিল ৩৯ ডিগ্রি। ২০২২ সালে ছিল যথাক্রমে ৩৪ ডিগ্রি ও ৩৭ দশমিক ২৬ ডিগ্রি, ২০২৩ সালে ৩৭ ডিগ্রি ও ৩৮ ডিগ্রি এবং এ বছর (২০২৪) ৩৩ ডিগ্রি ও ৩৬ ডিগ্রি।

এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন বস্তি এলাকা ও রাস্তার পাশে গাছ লাগানো শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে আরও গাছ লাগানো হবে।

তবে নগরবাসীকে তাদের ছাদ, বারান্দা ও বাড়ির পাশের খালি জায়গাতেও গাছ লাগাতে হবে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে পারব বলে আশা করি।’

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত