হাতি রক্ষায় বন্দি হাতিকে নির্যাতন বন্ধ করতে হবে
বাংলাদেশের বন্দি (ক্যাপটিভ) হাতিরা বংশ পরম্পরায় দাস হয়েই বেঁচে থাকছে উল্লেখ করে এসব হাতির ওপর নির্যাতন বন্ধে বন বিভাগের জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছে ‘পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’।
সেইসঙ্গে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোকে একযোগে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
এতে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান স্থপতি রাকিবুল হক এমিল বলেন, ‘এশিয়ান হাতি বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত মহাবিপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত। বাংলাদেশ এশিয়ান হাতির আদি নিবাস ও বিচরণের জন্য একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে প্রধানত তিনটি ক্যাটাগরিতে এশিয়ান হাতি রয়েছে যেমন পরিযায়ী হাতি, বাংলাদেশের বনাঞ্চলে বসবাসকারী হাতি এবং বন্দি হাতি।
এর মধ্যে কিছু হাতি দিয়ে দেশের পথেঘাটে দোকানে দোকানে ঘুরে চাঁদা তুলতে এবং মাহুতের হাতে থাকা ধাতব হুক লাগানো লাঠি দিয়ে আঘাত করার দৃশ্য দেখা যায়। এভাবে হাতিটিকে যন্ত্রণা দিয়ে কথা শুনতে বাধ্য করানোর কাজে এই হুক ব্যবহার হয়।
বর্তমানে এই দৃশ্য নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার মাঠঘাট বাজারে।
হাতির পিঠে বসে থাকা কিশোর বয়সী মাহুতটি বেপরোয়া হয়ে ধাতব ছকটি দিয়ে সজোরে আঘাত করতে থাকে হাতিটিকে দোকানে দোকানে হেঁটে চাঁদা তোলার জন্য। বহুদিন ধরে প্রশাসনের বিনা বাধা ও বিনা প্রশ্নে এই অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ফলে তাদের সাহস কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।’
২০১৯ সালের ৩ মে র্যাবের একজন ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে আটক করে দুটি হাতি চিড়িয়াখানায় পাঠান। কারাদণ্ড দেওয়া হয় মাহুতদের। সে বহুরই জুলাই মাসে বাংলাদেশে পাস হয় প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯।
যেখানে উল্লেখ করা হয়, কোনও প্রাণীকে ধাতব কিছু দিয়ে আঘাত করাও প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা হিসেবে গণ্য হবে, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ঘটনা উল্লেখ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এরপর প্রায় তিন বছর পার হলেও অন্যান্য বন্দী হাতির উপর নির্যাতন ও চাঁদাবাজি বন্ধে বন বিভাগকে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর বাস্তব প্রয়োগ, বন্দী হাতি দখলে রাখা ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করারও দাবি জানায় সংগঠনটি। তারা বলছে, বন অধিদফতর এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের যৌথ উদ্যোগে হাতির প্রতি অত্যাচার বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।