বিশাল জলাধার খোঁজ মিললো আন্টার্কটিকার গর্ভে
উষ্ণায়নের অভিশাপ সেই যে লেগেছে পৃথিবীর বুকে, তা থেকে যেন মুক্তি নেই। হিমবাহ গলছে, পাতলা হচ্ছে ওজোন স্তর। বাড়ছে কার্বন নিঃসরণ, উষ্ণতার আঁচে জ্বলছে ধরিত্রী। রোজ রোজই বাড়ছে উষ্ণতা।
গবেষণা বলছে, হিমবাহ গলনের মধ্যেই লুকিয়ে আসল বিপদ। সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় শহরগুলিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। এবার তাঁরা শোনালেন আরও বড় সাবধানবাণী।
জানালেন, আন্টার্কটিকার গর্ভে লুকিয়ে বিশাল আকারের জলাধার। যাতে ডুবে যেতে পারে ১৮২ মিটার লম্বা ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ বা গুজরাটের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি!
নয়া গবেষণা অনুযায়ী, বরফাঢাকা মেরুদেশের গর্ভে যে পরিমাণ জল রয়েছে, তা ভূতলে বেরিয়ে এসে যে হ্রদ তৈরি হবে, তার গভীরতা হবে কমপক্ষে ৮০০ মিটার। আর সেই কারণেই বলা হচ্ছে, ১৮২ মিটার উঁচু ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ ডুবে যাবে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও স্ক্রিপস ওশানোগ্রাফির গবেষকরা যৌথভাবে এই গবেষণা করেছেন।
স্ক্রিপসের তরফে ক্লো গুস্তাফসন জানিয়েছেন, ‘আন্টার্কটিকায় বরফের স্রোতের গতিপ্রকৃতি বোঝা খুবই গুরুত্বপূ্র্ণ। এর ৯০ শতাংশ বহমান। বরফের নিচে অন্তঃসলিলা জলস্রোত বইছে বলে আমাদের অনুমান।’
আন্টার্কটিকার অভ্যন্তরে ঠিক কত পরিমাণ জল রয়েছে, সে সম্পর্কে ধারণা হল ঠিকই, কিন্তু সঠিক পরিমাণ জানা সম্ভব নয়। তা মানছেন বিজ্ঞানীরাই। ইলেকট্রোম্যাগনেটিক প্রযুক্তির সাহায্যে তা চেষ্টা করা হয়েছিল।
তাতে উপরিতলের ১০০ থেকে ২০০ মিটার পর্যন্ত পরিমাপযোগ্য, বাকিটা নয়। আসলে মেরুপ্রদেশের আবহাওয়ায় এই প্রযুক্তি ভালভাবে কাজ করে না বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানী হেলেন আমান্দো ফ্রিকার।
কারণ, খানিকটা জলস্তরের পর আবার বরফের পাত রয়েছে। সেই কারণে জলের পরিমাপ ঠিকমতো বোঝা সম্ভব নয়। গবেষকরা জানাচ্ছেন, মেরুদেশের গর্ভে জলের ভাণ্ডার ঠিক তেমনই, যেমনটা অন্য কোনও গ্রহ কিংবা চাঁদের মধ্যে রয়েছে। এই জল থেকেই অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়।