38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৪:৫২ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশের সুরক্ষায় পর্তুগালে লিথিয়াম খনির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ
আন্তর্জাতিক পরিবেশ

পরিবেশের সুরক্ষায় পর্তুগালে লিথিয়াম খনির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ

পরিবেশের সুরক্ষায় পর্তুগালে লিথিয়াম খনির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ

বর্তমানে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সর্বত্র ব্যাটারির চাহিদা বাড়ছে৷ আবার সেই ব্যাটারির জন্য প্রয়োজনীয় লিথিয়াম উত্তোলন পরিবেশের ক্ষতি করছে৷ পর্তুগালের একটি অঞ্চল এমন উভয় সংকটে পড়েছে৷

প্রত্যেক দিন সকালে নেলসন গোমেস মনে দুশ্চিন্তা নিয়ে গোয়ালে যান৷ আর কতদিন তিনি গরু পালন করতে পারবেন, সে বিষয়ে তাঁর মনে সংশয় রয়েছে৷ কারণ পর্তুগালের উত্তর-পূর্বে কোভাস দো বারোসোয় লিথিয়ামের খনি চালু হলে মানুষ আর চাষবাস ও গবাদি পশু পালন করতে পারবে না৷



গোমেস বলেন, ‘যা বোঝা যাচ্ছে, এখানে বিশাল মাত্রায় কর্মযজ্ঞ শুরু হবে৷ পাহাড়ে বিস্ফোরণ ঘটবে, খনির কারণে বিশাল পরিমাণ বাড়তি পানির চাহিদা দেখা দেবে, বিকট শব্দও এড়ানো যাবে না৷ আমরা একেবারে পাশেই থাকি৷’

গোটা গ্রাম এমন হুমকির মুখে খনির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে৷ প্ল্যাকার্ড ও সাইনবোর্ডে তাদের স্লোগান ‘খনি নয়, জীবন চাই’ অথবা ‘সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করবো৷’

নেলসন গোমেস ও তার প্রতিবেশীরা এক নাগরিক উদ্যোগ শুরু করেছেন৷ কার্লোস গনসালভেসও তাতে যোগ দিয়েছেন৷ মৌমাছি পালনকারী হিসেবে তিনি শুধু তাঁর সাড়ে চারশো মৌচাক নিয়েই চিন্তিত নয়৷ কার্লোস বলেন, ‘এখানে খনি হলে গোটা গ্রামের জনসংখ্যার চাহিদার সমান পানি খরচ হবে৷

সেই পানি কোথা থেকে আসবে? আমাদের তো সেই পানি নেই৷ একটি পাহাড়ি নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা যায় বটে, কিন্তু এমন নদী বার বার শুকিয়ে যায়৷’

পর্তুগালে ইউরোপের সবচেয়ে বড় লিথিয়ামের ভাণ্ডার রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ কোভাস দো বারোসোয় ইতোমধ্যেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷

কিন্তু সেই সম্পদ স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের জন্য অভিশাপের মতো হয়ে উঠছে৷ এমনকি জেলা সদর বোটিকাসে মাত্র এক ব্যক্তিকে পাওয়া গেল, যিনি এই প্রকল্পের পক্ষে৷ তাঁর মতে, লিথিয়িমের খনির অনুমতি দেওয়া উচিত৷ সবসময়ে শুধু পরিবেশের কথা না ভেবে অর্থনীতির কথাও ভাবতে হবে৷

পর্তুগালের সরকারও সেই সম্পদের সদ্ব্যবহার করতে চায়৷ সে দেশের পরিবেশ ও জলবায়ু সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছে, যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘গ্রিন ডিল’ মেনে চলা বাধ্যতামূলক৷ ইউরোপের নিজস্ব লিথিয়ামের জোগানের ক্ষেত্রেও পর্তুগাল অবদান রাখতে চায়৷



কোভাস দো বারোসোর প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণেও অদূর ভবিষ্যতে লিথিয়াম উত্তোলনের কাজ শুরু হতে পারে৷ সেখানে আগেই কোয়ারৎসের খনি রয়েছে৷ মূলত বয়স্ক মানুষের সেই জনপদে প্রতিরোধ খুবই দুর্বল৷ ভিলা গার্সিয়ার মানুষের কাছে খনি নতুন কিছু নয়৷

পাশের ট্রানকোসো এলাকায় জোসে আলমেইদা ও তাঁর বন্ধুরা ফ্লায়ার বিতরণ করছেন৷ তাঁরা সেখানকার মানুষের চোখ খুলে দিতে চান, তাঁদের বোঝাতে চান৷ কারণ লিথিয়াম খনি আরও বড় আকারে প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপ করবে৷

জোসে বলেন, ‘খনির বাসিন্দাদের জন্য এর পরিণাম কী হবে, সে বিষয়ে যথেষ্ট জানানো হয় নি৷ মানুষকে ধোঁয়াসায় রেখেই নেপথ্যে যা করার করে নেওয়া হচ্ছে৷’

২০ কিলোমিটার দূরে পিনইয়েলের মেয়র এমনকি পর্তুগালের সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে চান৷ রুই ভেন্তুরা বলেন, বছরের পর বছর ধরে এলাকার ৪০ শতাংশ জমিতে নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া বিনিয়োগকারীদের মনে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে৷

সেইসঙ্গে ইউরোপীয় স্তরে তিনি কম ধ্বংসাত্মক বিকল্প সন্ধানের পক্ষে সওয়াল করছেন৷ রুই বলেন, ‘আমরা সবাই লিথিয়ামের গুরুত্ব বুঝি৷

কিন্তু লিথিয়াম ছাড়াও যে অন্য পথ রয়েছে, সেটাও আমরা জানি৷ আমাদের সে বিষয়ে আরও গবেষণা চালানো উচিত৷ বিজ্ঞানীদের সেই কাজ করতে দিতে হবে৷ ইউরোপ মুখে সে কথা বললেও সেই লক্ষ্যে কাজ করছে না৷’

মাত্র চার বছর আগে জাতিসংঘ পর্তুগালের উত্তরে কোভাস দো বারোসোকে কৃষি সংস্কৃতি ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷

প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে জীবনযাত্রাই সেই সম্মান এনে দিয়েছে৷ গ্রামের মানুষ সেই মর্যাদা হাতছাড়া করতে চান না৷ কারণ তাঁরাও তো নিজেদের মতো করে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করছেন৷

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত