ক্রমশ ধেয়ে আসছে শক্তিশালী সৌরঝড়
এমন এক বিরল শক্তিশালী সৌরঝড় (Solar Storm) ধেয়ে আসবে পৃথিবীর দিকে, যার ধাক্কায় রাতারাতি ভেঙে পড়তে পারে সারা বিশ্বের ইন্টারনেট যোগাযোগ। ছিদ্র হয়েছে সূর্যের গহ্বরে। সেই ছিদ্র পথেই সৌরঝড় বেরিয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। প্রতি ঘণ্টায় গতি প্রায় ১৬ লক্ষ কিলোমিটার এবং তা কয়েক সপ্তাহ, এমনকী কয়েক মাসও বিপর্যস্ত থাকতে পারে। এক নতুন গবেষণায় এমনই দাবি করা হয়েছে।
সৌরঝড় ঠিক কী? সূর্য লাগাতার পৃথিবীর দিকে তড়িচ্চুম্বকীয় কণা ছুঁড়ে মারতে থাকে। এর ফলে তৈরি হয় সৌর বাতাস। সেই বাতাসকে পৃথিবী তার মেরুদেশে পাঠিয়ে দেয়।
ওই সৌর বাতাসের থেকে কোনও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয় না আমাদের গ্রহকে। কিন্তু একশো বছরে একবার সৌর বাতাস থেকে সৃষ্টি হয় সাংঘাতিক সৌরঝড়ের। গবেষকদের আশঙ্কা, এর ধাক্কায় বড়সড় ক্ষতি হতে পারে পৃথিবীর।
আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, এমনই এক সৌরঝড় আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীতে।
‘সোলার সুপারস্টর্মস: প্ল্যানিং ফর অ্যান ইন্টারনেট অ্যাপোক্যালিপ্স’ নামের ওই গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, এই ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে ১.৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত।
তবে এর ফলে স্থানীয় ইন্টারনেট পরিকাঠামোর ক্ষতি হবে না। অপটিক্যাল ফাইবারবাহিত পরিষেবার ক্ষেত্রে বিপদ না থাকলেও আসল সমস্যা সমুদ্রের তলায় অবস্থিত কেবল লাইনের ক্ষেত্রে। যদি সেগুলি ওই সৌরঝড়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেক্ষেত্রে আন্তর্দেশীয় পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে।
এক গবেষকের কথায়, ”আমাদের পরিকাঠামো এখনও খুব বড়সড় সৌর বিপর্যয়কে সামলানোর মতো মজবুত নয়। এর ফলে কতটা ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আমাদের ধারণাই নেই।”
জানা যাচ্ছে, শেষবার ১৮৫৯ ও ১৯২১ সালে এই ধরনের শক্তিশালী সৌরঝড় পৃথিবীকে সামলাতে হয়েছিল। কিন্তু এখনকার ডিজিটাল যুগে এই ধরনের সৌরঝড় কখনও হয়নি।
ঠিক যেমন অতিমারীর জন্য সেভাবে প্রস্তুত হওয়া যায়নি, সেভাবেই এই ধরনের সৌরঝড়ের ক্ষেত্রেও তেমনই হতে পারে বলে আশঙ্কা। গবেষকরা জানাচ্ছেন, ভয়ংকর সৌরঝড়ের ক্ষেত্রে ১৩ ঘণ্টার মতো সময় পাওয়া যাবে।