30 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৪:০২ | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
লবণাক্ততা বাড়বে ঢাকার চারপাশের এলাকা
পরিবেশ গবেষণা পরিবেশ বিজ্ঞান পরিবেশ বিশ্লেষন

লবণাক্ততা বাড়বে ঢাকার চারপাশের এলাকা

লবণাক্ততা বাড়বে ঢাকার চারপাশের এলাকা

পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেছেন, প্রকৃতি বদলাচ্ছে। আমাদের অবশ্যই প্রকৃতিকে বুঝতে হবে। ষড়ঋতুর দেশে বাংলাদেশ আজ চার ঋতুতে পরিণত হয়েছে।

আষাঢ়েও এখন আর বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায় না। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল সমুদ্রগর্ভে বিলীন হলে লবণাক্ততা বেড়ে আরও ভেতরে ঢুকে যাবে। রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিংয়ের বিকল্প নেই। মানুষকে সচেতন হতে হবে। কমিউনিটি বেজড অ্যাডাপটেশন নিয়ে কাজ করতে হবে, বাড়াতে হবে কমিউনিটির অংশগ্রহণ।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে পরিবেশ সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) আয়োজনে ‘উপকূলের জীবন-জীবিকা: সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক এই জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সংলাপ অনুষ্ঠানে সভাপতির আলোচনায় আর্চবিশপ বিজয় নিসফরাস ডি’ক্রুজ বলেন, উপকূলের মানুষের কান্না আমরা শুনতে পাই। আমরা সংঘাতে না জড়িয়ে আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতে হবে আমাদের সবাইকে।

উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার সাবেক সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত নারী আসন) অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার বলেন, যারা নদী ধ্বংস করছে, যারা খাল দখল করছে, তারা এই সমাজেরই, আমাদেরই পরিবারের। এরা সব সময় ক্ষমতার আশপাশেই থাকে, এরা ব্যবসায়ী। নদী ও পরিবেশ রক্ষায় সুধীজন ও সমাজের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদী দখল করে প্রস্তুত করা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। নদী দখল করে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না। নদী বাঁচাতে হবে। পরিবেশ বাঁচাতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নানা অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে উপকূলীয় মানুষের ভালোভাবে টিকে থাকা এখন অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে।



সংলাপে অন্য আলোচকরা বলেন, লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া এই অঞ্চলে বেড়েছে সুপেয় পানির সংকট। সুন্দরবন উপকূলে ৭৩ শতাংশ পরিবার সুপেয় পানির পরিবর্তে খারাপ পানি খেতে বাধ্য হয়। গত ১২ বছরে বাস্তুচ্যুত হয়ে উপকূল অঞ্চলের ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ।

গত ৩৫ বছরে উপকূলীয় অঞ্চলে আগের তুলনায় লবণাক্ততা বেড়েছে ২৬ ভাগ, যার পরিমাণ ২ পিপিটি থেকে বেড়ে ৭ পিপিটিতে দাঁড়িয়েছে আর তার প্রভাব পড়েছে কৃষি খাতে। লবণাক্ততা বাড়ার কারণে বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও, বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ আর কমছে জন্মহার।

তারা আরও বলেন, উপকূলে গর্ভবতী মায়েদের প্রি-একলাম্পশিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের হার ৬ দশমিক ৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। জাতীয়ভাবে দেশে জন্মহার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ হলেও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে জন্মহার মাত্র শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ। এ ছাড়া নারীদের জরায়ু রোগ, গর্ভকালীন ঝুঁকি এমনকি অপরিণত শিশু জন্ম দেওয়ার হারও বেড়েছে।

জাতীয় সংলাপে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে আসা জলবায়ুর অভিঘাতে ভুক্তভোগীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি, বর্জ্য থেকে পানিদূষণও ইলিশের অভয়াশ্রমের প্রবেশপথে নানা প্রকল্পে ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভরা মৌসুমে ইলিশের দেখা না মেলার মূল কারণ।

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা-সংলগ্ন সমুদ্রে দীর্ঘ ডুবোচর, রাবনাবাদ, আগুনমুখা, আন্ধারমানিক এলাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ায় ইলিশের আনাগোনা কমে গেছে। কক্সবাজার সংলগ্ন মাতারবাড়ি অঞ্চলে উপকূলীয় মৎস্য সম্পদ ও মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) সহ-আহ্বায়ক শারমীন মুরশিদ, এম এস সিদ্দিকী বেসরকারি সংস্থা ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভের গবেষণা এবং কর্মসূচি বাস্তবায়ন ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল ফারুক, সুন্দরবন রক্ষায় আমরার সমন্বয়ক নূর আলম শেখ, চুনতি রক্ষায় আমরার সমন্বয়ক সানজিদা রহমান এবং উপকূল অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতিনিধিরা।

সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন উপকূল রক্ষায় আমরার সমন্বয়ক জনাব নিখিল চন্দ্র ভদ্র। সংলাপে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত