সৌন্দর্যে মন মাতানো প্রাকৃতিক লীলাভূমি নিঝুম দ্বীপ
বঙ্গোবসাগরের কোল জুড়ে আর মেঘনা নদির মোহনায় জেগে উঠা নোয়াখালীর একমাত্র বিচিন্ন দ্বীপ উপজেলাহাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ অঞ্চল। উত্তাল সাগরের কোলে সবুজ প্রকৃতির এক মায়াবী ভূখণ্ড নিঝুম দ্বীপ। দ্বীপের সৈকতে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত, চিত্রল হরিণের ছোটাছুটি আর কেওড়া, বাইন, গেওয়া বনের দ্বীপ নিঝুম দ্বীপ।
২০০১ সালের ৮এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার পুরো দ্বীপটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১৩ সালে দ্বীপটি জাহাজমারা ইউনিয়ন থেকে পৃথক হয়ে স্বতন্ত্র ইউনিয়নের মর্যাদা লাভ করে।
নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর ওসমান,বাউল্লারচর, আবার কেউ কেউ একে ইছামতীর চরও বলত। এ চরে প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ীর স্থানীয় নাম) পাওয়া যেত বলে একে ইছামতির চরও বলা হত।
বর্তমানে নিঝুম দ্বীপ নাম হলেও স্থানীয় লোকেরা এখনো এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেই সম্বোধনকরে। মূলত বাল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর এবং মৌলভির চর এই চারটি চর মিলিয়ে নিঝুম দ্বীপ।
৭০ দশকে পরীক্ষামূলকভাবে বনবিভাগ চার জোড়া হরিণ ছাড়র। নিঝুম দ্বীপ এখন হরিণের অভয়ারণ্য। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের হরিণ শুমারি অনুযায়ী হরিণের সংখ্যা ২২,০০০। নোনা পানিতে বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপ কেওড়া বনের অভয়ারণ্য।
ম্যানগ্রোভ মধ্যে সুন্দরবনের পরে নিঝুম দ্বীপকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বলে অনেকে দাবি করেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার সমুদ্র সৈকতে আসছে ছবি-ভিডিও তুলছেন। যা ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক ফাতেমা শাম্মি বলেন, নিঝুম দ্বীপের প্রাকৃতি পরিবেশ নি:সন্দেহে অসাধারণ। এইপ্রাকৃতিক পরিবেশটার পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব শিল্প নগরীও উন্নয়ন করা সম্ভব যাতে করে বন নষ্ট না হয়, সমুদ্র সৈকত নষ্ট না হয় সাথে মানুষের নিরাপত্তা অবশ্যই।
আরেক পর্যটক বলেন, সরকার যদি ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে যাত্রীরা ভালোভাবে আসা-যাওয়া করতে পারবে।
স্থানীয় পর্যটক আরিফ মাহমুদ বলেন, পর্যটন শিল্পটাকে আমরা যদি গতিশীল করতে পারি,পর্যটকদের আমরা যদি নিরাপত্তা দিতে পারি, রাস্তাঘাট, হোটেল-মোটেল যদি তৈরি হয় তাহলে হাতিয়া হবে আমাদের একটা বিশাল অর্থনৈতিক জোন।
হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বলেন, নিঝুম দ্বীপের মানুষ পর্যটকদের সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সরকার বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মোহাম্মদ সেলিম হোসেন বলেন, নিঝুম দ্বীপের যে সুন্দর্যটা আছে যদি আরেকটু ঢেলে সাজানো যায় একই এখনকার অবকাঠামো গুলো যেমন , রাস্তা চারপাশের বেরিবাধ সম্পন্ন করাযেতো।
তাহলে শীত মৌসুমে ও পর্যটন মৌসুমে যে পর্যটক আসে তার চেয়ে কয়েকগুণ পর্যটক আসা সম্ভব হতো। কিন্তু নিঝুম দ্বীপ দুর্গম ও বিচ্ছিন্ন এরিয়া যা চাইলে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ জন্য বড় ধরনের যে প্রকল্প দরকার ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে এলজি আইডি ও সড়ক বিভাগ কাজ করছেন।