30 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ২:৩১ | ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
কে থামাবে রাতের শব্দ দূষণ?
পরিবেশ দূষণ

কে থামাবে রাতের শব্দ দূষণ?

কে থামাবে রাতের শব্দ দূষণ?

রাজধানীর বনশ্রী আবাসিক এলাকা। কথা হয় সি ব্লকের এক নং রোডের বাসিন্দা মিনহাজুল আবেদীনের (ছদ্মনাম) সঙ্গে। ভোরের আগেই ইদানিং ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তার। বাসার কাছেই শুরু হয়েছে নতুন ভবন নির্মাণকাজ।

ক’দিন ধরে চলছে পাইলিং। গভীর রাতে বিকট শব্দে ট্রাকগুলো নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আসে। নির্লিপ্তভাবে সেগুলো নিচে ছুড়ে ফেলতে থাকে শ্রমিকরা। সঙ্গে আছে তাদের চিৎকার-হট্টোগোলও। ভোররাতের নিয়মিত বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এটা।



এ নিয়ে আবার কিছু বলার জো নেই মিনহাজের। কারণ তিনি ভাড়াটিয়া। তাদের সমস্যা সমাধানের কেউ না থাকলেও, এলাকার বাড়িওলারা আবার একজোট। সঙ্গত কারণে তাই চুপচাপ শব্দ দূষণ হজম করেন তিনি।

শান্তিনগরের মিনাবাজারের পাশের গলি। ভবন নির্মাণের কাজ চলছে বেশ অনেক দিন ধরেই। পাশের এক বাসায় থাকেন রিনা বেগম (ছদ্মনাম)। বয়স ষাটের ঘরে। একবার ঘুম ভাঙলে সহজে আসে না।

কিন্ত অনেক দিন ধরেই চলছে বাড়ি নির্মাণের কাজ। ভয়াবহ শব্দ দূষণের শহুরে জীবনকে মেনে নিয়েই আধোঘুমে দিন কাটছে রিনা বেগমের।

দূষণের সঙ্গে উটকো ঝামেলা হিসেবে রিনার ঘরে যোগ হয়েছে ধুলোর অত্যাচার। প্রতিদিনই বাসায় ধুলোর স্তর জমে। অনেক দিন ধরেই পোহাচ্ছেন এ যন্ত্রণা। ধুলোর কারণে রিনা বেগমের কাশিটাও ইদানিং বেড়েছে।

রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকার চিত্র এমনই। রাস্তায় মেট্রোরেল-এক্সপ্রেসওয়ের কাজতো চলছেই। বাড়ির পাশে দিন-রাত চলতে থাকা যান্ত্রিক গুঞ্জনটাকেও জীবনের অংশ মেনে চলতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক গবেষণা থেকে জানা যায়, রাজধানীর জিরো পয়েন্ট দেশের সবচেয়ে বেশি শব্দ-দূষিত এলাকা। দিনে সব সময় এখানে ৮০-৮৫ ডেসিবেল থাকে শব্দের মাত্রা। কাছের পল্টন বাস স্ট্যান্ড, সার্ক ফোয়ারা, শাহবাগও শব্দ দূষণের তালিকায় এগিয়ে।

নির্মাণকাজের জন্য কোথায় কেমন শব্দ দূষণ হচ্ছে তা নিয়ে তেমন কোনও গবেষণা নেই কারও। তবে গত সাত মাস ধরেই নাগরিকরা রাতে নির্মাণকাজের শব্দ দূষণের অভিযোগ করছেন বলে জানা গেছে। এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হতে দেখা যায় না কোনও কর্তৃপক্ষকেই।



বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, রাতের শব্দদূষণ শিশু, বয়স্ক ও গর্ভবতী মায়েদের ওপর তীব্র প্রভাব ফেলছে। দিনে যারা শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছেন তাদের শ্রবণক্ষমতা ২৫ ভাগও কমে যেতে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে সজাগ হওয়ার পারমর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, ‘টাইলস কাটা, পাইলিং, অনবরত ইট ভাঙার মেশিন চলা ও রেডিমিক্স বহনকারী ট্রাকের কারণে শব্দ দূষণ বেশি হচ্ছে। ৯৯৯-এ ফোন করে সাধারণ নাগরিকরা রাতের এ ধরনের শব্দ দূষণের অভিযোগ করছেন বলেও আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।’

রাতের শব্দ দূষণ বন্ধে করণীয় জানতে চাইলে বলেন, রাতে নির্মাণকাজের বিপক্ষে আইন নেই। কিন্তু সেটা জরুরি কাজের ক্ষেত্রে। আইনের ফাঁক গলে এখন অনেকেই দ্রুত কাজ সারতে রাতেও নির্মাণকাজ চালাচ্ছেন। যতদূর সম্ভব নাগরিক সংকট সামলে কাজ করা উচিত।

পবার সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আগে শব্দ দূষণ পিক আওয়ারে বেশি হতো। এখন সারা দিনই দূষণ হয়। এখন শব্দের সঙ্গে ভাইব্রেশনও হচ্ছে। হর্নের যন্ত্রণাতো আগে থেকেই। দিনের তুলনায় রাতেই এটা বেশি হচ্ছে। যানবাহনের শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীতেও নির্মাণকাজের জন্য এখন শব্দ দূষণ হচ্ছে। রাতে ঘুমানোর জন্য মানুষ নীরবতা চায়। কিন্তু নির্মাণ সামগ্রী আনলোডের কারণে ১০০ ডেসিবেলের বেশিও শব্দ হচ্ছে।’

তিনি মনে করেন, ‘যারা শব্দ দূষণ করে তারা যেমন নিয়মের ধার ধারে না, তেমনি যারা এই আইন মানাবে তাদেরও গরজ নেই।’

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত