28 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ৭:৫৬ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
উদ্ভিদপ্রাচুর্যে সমৃদ্ধ মধ্যযুগের আতমোড়া
প্রাকৃতিক পরিবেশ

উদ্ভিদপ্রাচুর্যে সমৃদ্ধ মধ্যযুগের আতমোড়া

উদ্ভিদপ্রাচুর্যে সমৃদ্ধ মধ্যযুগের আতমোড়া

প্রায় ৪০০ বছর আগেও কবির পর্যবেক্ষণ থেকে বাদ যায়নি এমন অবহেলিত একটি বুনো ফুল। ফুলের সৌন্দর্য অবশ্যই জয় করেছিল কবির মন। অথচ একবিংশ শতাব্দীতে এসে এখনো আমাদের কাছে অচেনাই থেকে গেছে ফুলটি।

প্রধান কারণ কারও অজানা নয়, দুষ্প্রাপ্যতা! সাধারণ মানুষ এখন শুধু প্রয়োজনীয় উদ্ভিদই আশপাশে দেখতে চায়। সেই অর্থে এ গাছে না আছে কোনো স্বাদু ফল, না আছে কোনো দারুমূল্য।



কয়েক বছর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম প্রান্তে ঝোপঝাড়ঘেরা মাঠের ধারে গাছটি প্রথম দেখি। সাপের ভয়ে ওদিকটায় কেউ খুব একটা যায় না। তাতে প্রকৃতির জন্য লাভ হয়েছে। কারণ, সেখানে প্রাকৃতিকভাবেই নির্বিঘ্নে অনেক তৃণ, বীরুৎ, লতাগুল্ম জন্মে। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতিও আছে।

কোনো কোনোটি আবার বর্ষজীবী। সেখানে আতমোড়া গাছটি দেখে চিনতে প্রথমে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। পাতা বেশ বড়। প্রায় শুকনা একটিমাত্র ফুল পত্রকোণে ঝুলে আছে। ভালোভাবে খুঁটিয়ে দেখে নিশ্চিত হই, এটি আসলে আতমোড়াই। আরেক নাম পিকরঞ্জি। পরে অবশ্য আরও দু-একটি গাছ খুঁজে পেয়েছি।

একসময় চট্টগ্রাম জেলার চুনতি অভয়ারণ্য ও মধুপুর জাতীয় উদ্যানে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মাত। তবে উল্লিখিত দুই প্রাকৃতিক আবাসে ব্যক্তিগত অনুসন্ধানে গাছটি খুব একটা চোখে পড়েনি। জানামতে, এই গাছ মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে সংরক্ষিত আছে।

স্থানীয়দের কাছে আগাছা হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় এ গাছ জ্বালানি হিসেবেই বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। এ কারণে আমাদের প্রাকৃতিক বন থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। সম্ভবত ফলের গড়নের কারণেই ইংরেজি নাম ইন্ডিয়ান স্ক্রিউ ট্রি।



আতমোড়া (Helicteres isora) গুল্ম বা ছোট আকারের পত্রমোচী গাছ, ৩ থেকে ৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। গোড়া থেকে শাখা বের হয়। পাতা ডিম্বাকৃতির, ১০ থেকে ১২ সেমি লম্বা, ওপরের পিঠ খসখসে, নিচের পিঠ রোমশ, কিনার সামান্য খাঁজকাটা।

পত্রকোণে কমলা লাল রঙের ৪ থেকে ৫ সেমি লম্বা ফুল হয়। বৃতি নলাকার, ৫টি অসমান খণ্ডকযুক্ত, পুংকেশর ১৫টি। ফল শীর্ষের চঞ্চুসহ সর্পিলাকারে পাকানো, মসৃণ ও মোচড়ানো গড়নের। ফুল ও ফলের মৌসুম বৈশাখ থেকে পৌষ অবধি বিস্তৃত।

গাছের ছাল উদরাময় ও আমাশয়ে কাজে লাগে। বাকল থেকে উৎকৃষ্ট মানের দড়ি তৈরি হয়। গাছের শিকড় এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, ইরাক এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

সেখানে প্রধানত পরিপাকতন্ত্র, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, সংক্রমণসহ বিভিন্ন সমস্যায় কাজে লাগে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ফলের নির্যাস ব্যাকটেরিয়া ও ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

গাছটি প্রজাপতির প্রিয় আবাস। বীজ থেকে বংশবৃদ্ধি হয়। এই গাছ ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অস্ট্রেলিয়ায় সহজলভ্য।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত