31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১:০৯ | ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
প্লাস্টিকের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ রক্ষাকারি মাটির তৈজসপত্র
পরিবেশ রক্ষা

প্লাস্টিকের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ রক্ষাকারি মাটির তৈজসপত্র

প্লাস্টিকের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ রক্ষাকারি মাটির তৈজসপত্র

‘বাব দাদার হাতে মাটির তৈজসপত্র বানানো শিখছি। এখন স্বামীর সংসারে ২১ বছর ধরে এই কাম (কাজ) করি। দুই মেয়ে এক ছেলেও এই কাম করে। তাও সংসার চলে না।’ কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারী সদরের সোনারায় ইউনিয়নের উত্তর মুসরত কুকাপাড়া গ্রামের কুমার পাড়ার নমিতা পাল (৩৯)।

নমিতা পালের স্বামী খগেন্দ্র পালও (৪৫) এই পেশায় রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিকের ভাড়া পাতিল বের হয়ে হামার মাটির জিনিস কেউ নেয় না। বছরে একবার পহেলা বৈশাখ, হিন্দুদের বিয়া বাড়ি ও বিভিন্ন পূজা-পার্বণে একটু বেচা-কেনা হয় এখন তাও হয় না। এক সময় এই ব্যবসার কদর ছিল। বাড়িতে এসে পাইকাররা বায়না দিয়ে যেত এখন আর সেই দিন নাই। কামাই খুব হইত। এখন পেট চলে না।’



জানা গেছে, সোনারায় ইউনিয়নের মুসরত কুকাপাড়ায় রয়েছে এই শিল্পের প্রায় ৬৫টি পরিবার। এ ছাড়া জেলায় বিচ্ছিন্নভাবে ২৩০টি পরিবার এই পেশায় রয়েছে। কিন্তু মাটির অভাব, প্রয়োজনীয় পুঁজি ও পরিকল্পিত উদ্যোগের অভাবে অস্তিত্ব সংকটে এই জেলার মৃৎশিল্প।

উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর ন্যায্য মূল্য না থাকায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা অন্য পেশায় যেতে বাদ্য হচ্ছেন। সাত পুরুষের ঐতিহ্যবাহী পেশাকে কোনও রকমে ধরে রেখেছেন অনেকে। বাজারে প্রচলিত প্লাস্টিক সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে তারা এখন কোণঠাসা। ফলে গ্রাম বাংলার এই শিল্পের ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি তাদের দুর্দিন যাচ্ছে।

মৃৎশিল্পী বিকাশ চন্দ্র পাল (৪০) বলেন, ‘পুরুষদের প্রধান কাজ মাটি কিনে সেগুলো কাদা করা ও ভাটায় পোড়ানো। এরপর এসব সামগ্রী নিজ হাতে তৈরি করেন বাড়ির নারী ও ছেলে-মেয়েরা। তৈরি সামগ্রী বাজারে বিক্রি করি আমরা। কিন্তু দিন দিন চাহিদা কমে যাওয়ায় এখন হাত পড়েছে কপালে।’

জেলা শহরে মাটির তৈজসপত্র বিক্রি করতে আসা কৈলাস চন্দ্র পাল বলেন, ‘মাটির তৈরি হাঁড়ি, পাতিল, কলস, সারোয়া, পেচি, তাওয়ার এক সময় খুব চাহিদা ছিল।

বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা সামলানো যেত না। এখন হাটে আসা যাওয়ার ভাড়াই উঠে না। আগে গরমে পানি রাখার একটি কলস বিক্রি হতো ৩০-৪০ টাকা। এখন ফ্রিজ বের হয়ে কলসের কোনও চাহিদা নাই। হঠাৎ এক-আধটা বিক্রি হয়, তাও পানির দামে দিতে হয়।’

সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদ তালুকদার বলেন, ‘কুমারপাড়ার ওই পরিবারগুলো বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করায় তাদের কোনও সমবায় সমিতি নাই। তাদের এক জায়গায় করে সমবায় সমিতির মাধ্যমে সহযোগিতা করা যেতে পারে।’



এ ব্যাপারে নীলফামারী ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের ব্যবস্থাপক (বিসিক) হোসনে আরা খাতুন বলেন, ‘এ শিল্পের লোকজনদের সমিতির মাধ্যমে আর্থিকভাবে সহায়তা করা যেতে পারে।

তবে মাটির তৈরি জিনিশপত্রের আদলে তৈরি করছে প্লাস্টিক পণ্য নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রতিনিয়ত ব্যবহার কমছে মাটির তৈরি পণ্য সামগ্রীর। এতে বিপাকে পড়েছে এই শ্রেণী পেশার মানুষ। আমাদের শর্ত পূরণের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করা যেতে পারে।’

জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারিভাবে কোনও ধরনের সহায়তার সুযোগ থাকলে তা অবশ্যই করা হবে। এটি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য আর ওই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে কুমাররা (মৃৎশিল্পীরা)।’

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত