প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় মেক্সিকোর লুপ্তপ্রায় নেকড়ে বাঁচানোর উদ্যোগ
বিশ্বজুড়ে মানুষের লোভ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জ্ঞান না থাকার কারনে সৃৃষ্ট তাণ্ডবের ফলে পৃথিবী হতে অসংখ্য প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে৷ মেক্সিকোর লাজুক প্রকৃতির ধূসর নেকড়েও এই তান্ডবের শিকার। তবে সাম্প্রতি এই ধূসর নেকড়ে প্রজাতিটির বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা চলছে৷ প্রাকৃতিক পরিবেশে এদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে৷
নেকড়ে বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিয়ান আগিলার যিনি এ বিষয়ে বেশ সফল ও জনপ্রীয়, সাম্প্রতি তিনি এমন এক জায়গার সন্ধান পেয়েছেন যেখানে প্রায় ৩৫টি মেক্সিকান ধূসর নেকড়ে বসবাস করছে৷ নেকড়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি মেক্সিকোর চিহুয়াহুয়া প্রদেশে এই প্রজাতির পুনর্বাসনের উদ্যোগে সহায়তা করছেন৷ তবে প্রশ্ন হচ্ছে এই ধূসর নেকড়েগুলি কি তাঁর ডাকে সাড়া দেবে?
কানিস লুপুস বাইলেয়ি প্রজাতির এই নেকড়েগুলো অত্যন্ত লাজুক৷ সিয়েরা মাদ্রে অক্সিদেন্তাল পর্বতশ্রেণির প্রায় ২০ কোটি হেক্টার এলাকায় এদের খুজে পাওয়া কঠিন৷ তবে তার ভিতর একটি জায়গায় এই নেকড়ের অস্তিত্ব টের পাওয়া যাচ্ছে৷ ক্রিস্টিয়ান আগিলার বলেছেন, ‘‘এখানে নেকড়ের অসংখ্য স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে৷ দেখে তাজাই মনে হচ্ছে৷ সম্ভবত প্রাণীগুলি খুবই কাছাকাছি কোথাও রয়েছে৷ বেঁচে আছে, খোরাকের খোঁজ করছে এবং সেটা অবশ্যই খুব ভালো খবর৷”
ক্রিস্টিয়ান আগিলার যে ক্যামেরা ফাঁদ পেতেছিলেন, তাতেও সেই প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ ক্যামেরা অসংখ্য ছবি ও ভিডিও তুলেছে৷ নেকড়েগুলি হৃষ্টপুষ্ট থাকায় আগিলার বেশ সন্তুষ্ট৷ এ সব ভালো খবর৷ কারণ ধূসর মেক্সিকান নেকড়ে লুপ্তপ্রায় প্রাণীর বিষ্ঠা দেখেও আগিলার নিশ্চিন্ত হলেন যে তাতে শিকার করা প্রাণীর লোমও দেখা যাচ্ছে৷
নেকড়ের প্রিয় খাবার হিসাবে হরিণ, কাঠবিড়ালি ও ইঁদুরের সঙ্গে সঙ্গে জংলি টার্কিও এই প্রাণীর শিকারের তালিকায় রয়েছে৷ ল্যাবে পরীক্ষার জন্য ক্রিস্টিয়ান নেকড়ের বিষ্ঠা সংগ্রহ করেন৷ একটির মধ্যে হরিণ এরও লোম রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন৷ এ দিন অনেক নমুনা পাওয়া গেল৷ ক্রিস্টিয়ান আগিলার বলেন, ‘‘যথেষ্ট খাদ্য পেলে নেকড়ে আর গরু শিকার করে না৷ গবাদি পশু পালকদের সঙ্গে সংঘাত একেবারেই কমবে বলে আশা করা যায়৷”
সেই সংঘাত মেক্সিকোর এই নেকড়ে প্রজাতির অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছে৷ গবাদি পশু পালক ও জমির মালিকরা প্রকৃতির কোলে এই প্রজাতি প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল৷ এককালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অঞ্চল থেকে মেক্সিকোর দক্ষিণ পর্যন্ত এই প্রাণী অবাধ বিচরণ করতে পারতো৷
দুই দেশের একাধিক সংগঠন জোট বেঁধে মূল প্রাকৃতিক পরিবেশে নেকড়ের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ জিনগত বৈচিত্র্য ও বর্তমান পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেবার ক্ষমতার প্রতিও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে৷
গোরেৎকি/গার্সিয়া/এসবি