পাঠ্যবইয়ে নদী ও পরিবেশদূষণ অধ্যায় নিয়ে বিভিন্ন মতামত
প্রথম থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে নতুন করে নদী ও পরিবেশদূষণ–সংক্রান্ত অধ্যায় যোগ করা নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোয় নানা মত দেখা দিয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বিদ্যমান পাঠ্যবইয়ে প্রতি শ্রেণিতে পরিবেশদূষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে, নতুন করে কিছু যোগ করার নেই। আর নদী রক্ষা কমিশন বলছে, পরিবেশদূষণের ধরন পাল্টেছে। সে অনুযায়ী নতুন অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
২০১৯ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশের নদ-নদীর জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ঐতিহাসিক রায় দেন। ২৮৩ পৃষ্ঠার ওই রায়ে বলা হয়, দেশের সব নদী এখন জীবন্ত সত্তা। ওই রায়ে পাঠ্যপুস্তকে নদী বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন আদালত।
২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর নদী রক্ষা কমিশনের সভায় প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে নদী–সংশ্লিষ্ট বিষয় পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়।
চলতি বছরের ২১ জুলাই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৪৬তম সভায় সিদ্ধান্ত হয় প্রথম থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ‘নদীদূষণ ও পরিবেশদূষণ’ অধ্যায়টি নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
নদী রক্ষা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, পাঠ্যবইয়ে পরিবেশদূষণ–সংক্রান্ত অধ্যায় সংযোজনের কোনো পদক্ষেপ সম্পর্কে তাঁদের জানা নেই।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কিংবা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কেউই তাঁদের কাছে কোনো অগ্রগতিমূলক প্রতিবেদন পাঠায়নি। তাঁরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার তাগিদ দিয়েছেন।
১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সচিব মনজুরুল কাদের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠান। পাঠ্যবইয়ে পরিবেশদূষণের বিষয় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়।
নতুন প্রজন্মকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে পাঠ্যবইয়ে দ্রুত তা অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয় চিঠিতে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে নদীদূষণের বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় হতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে অনুরোধ করা হলেও আজ পর্যন্ত ওই বিষয়ে কোনো অগ্রগতি প্রতিবেদন পায়নি কমিশন।