দূষণ কমাতে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরালো লাহোর
হঠাৎ আকাশ ছেড়ে যায় মেঘে। ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। স্বস্তি ফেরে জনজীবনে। মধ্য ডিসেম্বরের শীতে এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হলেন পাকিস্তানের লাহোরের মানুষ।
তবে এ মেঘ আর বৃষ্টি—কোনোটাই প্রাকৃতিকভাবে হওয়া নয়। মূলত, ভয়াবহ মাত্রার দূষণ ঠেকাতে সোমবার লাহোরে ঝরানো হয় কৃত্রিম এই বৃষ্টি। দেশটির ইতিহাসের এটাই প্রথম ঘটনা।
জনবহুল লাহোরে বায়ুদূষণ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় নিয়মিত শুরুর দিকে থাকে লাহোরের নাম।
পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, বায়ুদূষণের মাত্রা কমাতে কৃত্রিমভাবে এই বৃষ্টি নামানো হয়েছে। এতে সহযোগিতা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেন, লাহোরের অন্তত ১০টি জায়গায় ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টি ঝরানো হয়েছে। যেখানে বৃষ্টি ঝরেছে তার আশপাশের ১৫ কিলোমিটার বা ৯ মাইলের মধ্যে এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
লাহোরের বাতাসের মান কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমেই খারাপ হয়েছে। দিনের বড় একটি সময়জুড়ে ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে থাকছে লাহোর। দূষণ ঠেকাতে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিদিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের আগে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সপ্তাহে বাড়তি দুদিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যালয়। কিন্তু কমেনি দূষণ। এরপর কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরানোর উপায় বেছে নিল পাঞ্জাব সরকার।
মহসিন নাকভি জানান, লাহোরের জন্য কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরানোর যন্ত্র ‘উপহার’ দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ১০ থেকে ১২ দিন আগে তা আকাশপথে এসে পৌঁছেছে। সেই সঙ্গে এসেছে একটি বিশেষজ্ঞ দল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অত্যধিক গরম কমাতে মাঝেমধ্যেই কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টি ঝরানো হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানের আবহাওয়ার আচরণ বদলাচ্ছে।
সেই সঙ্গে নগরায়ণসহ বিভিন্ন কারণে দূষণের মাত্রা বাড়ছে। যদিও বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে পাকিস্তানের দায় ১ শতাংশের কম। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ ১০ দেশের একটি পাকিস্তান।