সম্প্রতি পাকিস্তানে হঠাৎ হানা দেয় পঙ্গপাল বাহিনী। এতে দেশটির কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয় এবং অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পাকিস্তানের পর ভারতেও হানা দিয়েছে পঙ্গপাল। সেদিক থেকে বাংলাদেশেও পঙ্গপাল আক্রমণের আশঙ্কা করছেন কৃষি অধিদপ্তর। তবে তা এবছর এর চেয়ে আগামী বছরই বেশি হবার সম্ভাবনা বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক এজেডএম ছাব্বির ইবনে জাহান।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, সোমবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি চিঠিতে পঙ্গপালের আক্রমণ সংক্রান্ত সতর্কতা ও প্রস্তুতি রাখার কথা জানানো হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, পাকিস্তান ও ভারতের পর বাংলাদেশেও আসতে পারে এই পঙ্গপাল।এ বছরে তেমন ঝুঁকি নাই। তবে আগামী বছরের জন্য সতর্ক হতে হবে।কেননা পঙ্গপাল বাতাসের উষ্ণতার গতি অনুযায়ী এরা চলাফেরা করে এবং এক জায়গার খাবার ফুরালেই নতুন জায়গার খোঁজ করে তারা। আর এ কারণেই কৃষি অধিদপ্তর আশংকা করছেন বাংলাদেশেও আক্রমণ করতে পরে এই পঙ্গপাল। তবে পঙ্গপালের আক্রমণ ঠেকাতে সরকার, জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন ফাও এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তারা। গত ৫৫ বছরের মধ্যে পঙ্গপালের আক্রমণ হয়নি এ অঞ্চলে।
জানা যায়, গত বছরের শেষে সোমালিয়া, কেনিয়া এবং ইথিওপিয়াসহ কয়েকটি দেশের কৃষি ক্ষেতে আক্রমণ চালিয়েছে পঙ্গপাল। এতে সে সকল দেশের কৃষকদের মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, পশ্চিম আফ্রিকায় ২০০৩-০৫ সাল পর্যন্ত সময়ে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার সমমূল্যের ফসলের ক্ষতি করেছে এই পঙ্গপাল বাহিনী। এ বছরের শুরুতে পাকিস্তানে পঙ্গপালের উৎপাতে দেশটিতে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভারতে ও পঙ্গপালের আক্রমণের খবর জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, পতঙ্গ সাধারণত একা থাকলে বেশ নিরীহ থাকে, কিন্তু দলবদ্ধ অবস্থায় থাকলে এরা ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে । জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন ফাও এর তথ্যমতে, এক বর্গকিলোমিটার আকারের পঙ্গপাল এক সঙ্গে যে খাবার খায় তা দিয়ে ৩৫ হাজার মানুষকে এক বছর খাওয়ানো সম্ভব। একটি বড় পঙ্গপাল দিনে ১২০ মাইল পর্যন্ত জমির ফসল খেয়ে ফেলতে পারে। কেবল খাবারই খায় না তারা একই সঙ্গে প্রজননের কাজটিও করে থাকে এরা।