চারদিকে টলমল পানি, পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ, শুভ্র কাশবন আর সাদা মেঘের ভেলায় অনন্য সৌন্দর্যে ঘেরা রূপসী ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’ যেন তার রূপসৌন্দর্যে প্রতিনিয়তই মন্ত্রমুগ্ধ করছে পর্যটকদের।সাধারণত শীতে এর অপূর্ব নৈসর্গিক আর নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে পর্যটকরা এখানে ভিড় জমায়।
সাগর ও বলেশ্বর নদের মোহনার সংযোগস্থলে নয়নাভিরাম জলরাশি তার মধ্যবর্তী স্থানে বিশাল বিস্তীর্ণ এক চর বিদ্যমান, যার নাম বিহঙ্গ দ্বীপ। কয়েক বছর আগে জেগে ওঠা ওই চরে পরিযায়ী পাখিদের নির্ভয় বিচরণ। চরের পশ্চিমে নদীর তীরঘেঁষা ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের নিসর্গ মায়াময় হাতছানি।শীত এলেই দর্শনার্থীরা সাগর ও নদের সংযোগস্থলে সময় কাটাতে ভিড় করেন। শীতে পাখির নির্ভয় বিচরণ প্রাণময় করে তোলে নিভৃত চরাচর।
৫০০ একর জুড়ে চরটির একদিকে সাদা বালু আর একদিকে লাল বালুর মিশেল। আর প্রাকৃতিকভাবে চরজুড়ে শুভ্র শোভন কাশ ফুলের সমারোহ। সম্প্রতি সেখানে বন বিভাগের সৃজিত বনায়ন নতুন শোভা বর্ধন করেছে। শীত বিকেলটা এখানে অন্য এক প্রশান্তির আবহ এনে দেয়। সাগর মোহনায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যাস্ত।
বন বিভাগ এ চরের বনাঞ্চলে হরিণ আর বিপন্ন নানা প্রাণীবৈচিত্র্য অবমুক্ত করে সেখানে অভয়ারণ্য গড়ে তুলছে। ফলে প্রতিদিন পর্যটকরা এখানে এসে জল হাওয়া আর প্রাণ প্রকৃতির শোভন রূপ দর্শনে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, ৫০০ হেক্টর জমি জুড়ে দ্বীপটির পরিধি ক্রমবর্ধমান। পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা স্লুইস গেট এলাকা অথবা রুহিতা গ্রাম থেকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট নদীপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় খুব সহজে যাওয়া যায় এ দ্বীপে। তাঁদের মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানে গড়ে উঠতে পারে একটি পর্যটন স্পট। আর পাথরঘাটার রুহিতা গ্রামের বলেশ্বর নদের তীর থেকে বিহঙ্গ দ্বীপে যাতায়াতে রজ্জু পথ অথবা রোপওয়ে স্থাপন করতে পারলে বিস্ময়কর রূপ পাবে এ বিহঙ্গ দ্বীপ।
সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট গড়ে তোলার দাবিতে দ্বীপের নাম ফলক ও জাতীয় পতাকা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক পর্যটকদের আকর্ষণে শুভ সূচনা করেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। পাথরঘাটার উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, আমরা এটিকে দ্বীপ বিহঙ্গ নামে পরিচিতির জন্য জনসংযোগ চালাচ্ছি। আশা করি এটি সরকারের নজর কাড়বে ও অবকাঠামো উন্নয়ন হবে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির বলেন, গত বছর আমি বিহঙ্গ দ্বীপ ঘুরে দেখেছি। এর উন্নয়ন হলে এলাকার আরো একটি পর্যটন স্পট বাড়বে। এ বিষয়ে পাথরঘাটা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সেখানে বনভূমি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হতে পারে।