এই শতাব্দীর শেষে ৩টি হিমবাহের মধ্যে ২টি বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
বিশ্বে যেভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বাড়ছে তাতে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবের পরিণতি আগামী দিনে আরও খারাপ হতে চলেছে। নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীর সব অঞ্চলে উপস্থিত হিমবাহের পরিমাণ হ্রাস পাবে।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অনেক প্রভাবের মধ্যে একটি হল ধীরে ধীরে হিমবাহের ক্ষতি। বর্তমানে জলবায়ু সংক্রান্ত গবেষণার জেরে দেখা যাচ্ছে বিশ্বে গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কারণে দ্রুত বরফ গলে যাচ্ছে। সম্প্রতি নাসার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২৮ বছর পর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে প্রায় এক ফুট।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার একটি বড় কারণ হল দুই মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া। ক্রমাগত গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে এই অবধারিত বিপর্যয় নেমে আসতে চলেছে পৃথিবীতে। এমতাবস্থায় এখনই যদি সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে এই গভীর সংকটের জন্য মানুষই দায়ী থাকবে।
এবার নতুন গবেষণায় উঠে এল আরও এক তথ্য। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে হিমবাহের ক্ষতি হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। ১০০ বছর পর বিশ্ব তার হিমবাহের ২৬ এবং ৪১ শতাংশ হারাতে পারে। অর্থাৎ পৃথিবীর তিনটি হিমবাহের মধ্যে দুটি হিমবাহ কমে যাবে।
সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহকারী অধ্যাপক ডেভিড রউনস গবেষণার মাধ্য়মে এমনটা অনুমান করেছেন। গবেষকরা দেখেছেন যে, এইভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বাড়তে থাকলে এক দশকের মধ্যে পৃথিবীর ৮০ শতাংশেরও বেশি হিমবাহ শেষ হয়ে যাবে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, বেশিরভাগই ছোট হিমবাহগুলি শেষ হবে। অর্থাৎ হিমবাহগুলির উচ্চতা এক বর্গকিলোমিটারেরও কম হবে। কিন্তু তাদের ক্ষতির প্রভাব স্থানীয় জলবিদ্যা, পর্যটন, হিমবাহের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উপর পরবে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে থাকলে মধ্য ইউরোপ, পশ্চিম কানাডা ও আমেরিকায় এর অসীম প্রভাব পড়বে। এসব এলাকায় পুরোপুরি সমস্ত হিমবাহ শেষ হয়ে যাবে।
জাতিসংঘের কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (COP-27) এর আলোচনায় এবিষয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন শুধুই কমাতে নয় নির্গমন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে ৩০ থেকে ১০০ বছর সময় লাগবে।