ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চৌমুহনী শহরে
পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। স্থানীয়দের উদাসীনতা ও পরিকল্পনাহীনতার জন্য দিন দিন আবর্জনার শহরে পরিণত হচ্ছে চৌমুহনী। যেখানে-সেখানে ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এই শহর।
নোয়াখালীর প্রথম শ্রেণির পৌরসভা চৌমুহনীর সিঙ্গার রোডের বিপরীতে খালি জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকা ময়লার স্তূপের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।
এতে ডেল্টা জুট মিল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কাশেম মিয়ার মার্কেট, ডেল্টা জুট মিল শ্রমিক কলোনি, সিঅ্যান্ডবি অফিস কর্মচারীদের বাসা, সিঙ্গার রোডের বাসাবাড়িতে বসবাসকারী লোকজন ময়লা-আবর্জনার স্তূপের দুর্গন্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিমজ্জিত হচ্ছে।
এ ছাড়া মাইজদী-চৌরাস্তা সড়কের পাশে অন্য এক স্তূপের গন্ধে বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মৎস্য ও পশুসম্পদ অফিস, নোয়াখালী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বেগমগঞ্জ কৃষি প্রশিক্ষণায়তনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দুর্গন্ধে হাঁচি-কাশি, বমি, মাথা ঘোরাসহ কয়েকটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
ডেল্টা জুট মিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আবদুল্যাহ মো. ফারুক বলেন, ময়লা-আবর্জনা স্তূপের দুর্গন্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ বিষয়গুলো পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হলে মাঝে মাঝে বন্ধ থাকে। পরে আবার তাদের কর্মকা- চালিয়ে যায়। কপালে দুর্গতি থাকলে করার আর কিছুই থাকে না।
বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী আবুল কাশেম জানান, করিমপুর রোডে ময়লার-আবর্জনার দুর্গন্ধে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য, বাসাবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হলেও পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিব মোর্শেদা বেগমের নেতৃত্বে কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ট্রাকভর্তি করে বেশি বেশি ময়লা ফেলা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকা- ব্যাঘাত ঘটাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
চৌমুহনী পৌরসভা দৈনিক কয়েক টন ময়লা ফেলার জন্য বড় ধরনের কোনো স্থান নেই। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু না করে করিমপুর রোড, মাইজদী রোডে ময়লা ফেলা হচ্ছে।
যা দুর্গন্ধ বের হওয়ার আগেই কেরোসিন ঢেলে ময়লার স্তূপে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কথা যারা বলে, তারা হিংসা করে গুজব ছড়াচ্ছে।
চৌমুহনী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিব মোর্শেদা বেগম বলেন, পৌরসভার খালি জায়গা ভরাট করে ভিটিতে পরিণত করা হলে উন্নয়নমূলক কর্মকা- করতে সহজ হবে। কিন্তু একটি মহল নানাভাবে গুজব ছড়িয়ে স্বার্থসিদ্ধি হাসিল করতে চায়। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কিছু করা হচ্ছে না।
একজন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বলেন, চৌরাস্তার উত্তরে কালা পোলসংলগ্ন স্থানে খালি জায়গা আছে। ওই স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পুড়ে ছাই করলে পাশে খালে ছাইগুলো ফেলে দিলে দুর্গন্ধ বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ অনেকাংশে কমে যাবে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পৌরসভার লোকজন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।