জলবায়ু সংকট নিরসনে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ
জলবায়ু সংকট নিরসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ৯৯টি দেশে লাখ লাখ মানুষ সমন্বিতভাবে বিক্ষোভ করেছেন।
করোনা মহামারীর পর গত শুক্রবার প্রথম জলবায়ু সংকট নিরসনে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। যুক্তরাজ্যের গ্ল্যাসগোতে জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন কোপ-২৬ অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে বিশ্বব্যাপী এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো।
জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুদিন। এর মধ্যেই এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে। গ্রেটা থুনবার্গ সেখানে এক লাখের বেশি মানুষের একটি জনসমাবেশে অংশ নিয়ে বলেন, জলবায়ু সংকট নিরসনে কোনো রাজনৈতিক দলই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেনি।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিশ্বের মোট ১ হাজার ৮শ শহরে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউরোপ, আফ্রিকা এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
মেক্সিকো সিটিতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর দাবিতে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত তেল কোম্পানির সামনে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ১২টি শহরে তিনদিনব্যাপী বিক্ষোভ করেছেন পরিবেশবাদীরা। জলবায়ু ইস্যুতে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে লন্ডনে পার্লামেন্টের সামনেও বিক্ষোভ করা হয়েছে। এছাড়াও বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে কানাডা, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায়।
জার্মান পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভস্থল থেকে পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, ‘আমরা চাইলে এখন পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দিতে পারে। বিশ্বের সর্বত্র এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যাচ্ছে। আমরা হতাশ ও রাগান্বিত।
আমাদের অবকাঠামোগত পরিবর্তন দরকার। একই সঙ্গে দরকার সামাজিক পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারব।’ জার্মানিতে পরিবেশবাদী বিক্ষোভকারীরা গত জুলাইয়ে দেশটিতে বৃষ্টিপাতে ১৮০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন।
শুধু পরিবেশবাদীরা নয় জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসকেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যর্থ পদক্ষেপ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে সম্প্রতি। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমরা কয়েক আলোকবর্ষ দূরে।’
গুতেরেসের এই হতাশাই বলে দিচ্ছে, জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থাগুলোও রাজনীতির কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। তার মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কার্বন নির্গমন কমানো দরকার।
কিন্তু যে হারে দেশগুলো আগাচ্ছে তাতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কেবল মাত্র ১৬ শতাংশ কার্বন নির্গমন কমানো সম্ভব হবে।