জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ ও সুইডেন একসাথে কাজ করবে
গত রবিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সভায় দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানো, বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ ও সুইডেন। সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী পের ওলসন ফ্রিধ ও এসব অঙ্গিকার করেন।
প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনা, টেকসই পরিবেশ, স্থলজ ও জলজ প্রাণীসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন প্রকার দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বাংলাদেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা বিষদভাবে।
আলোচনাকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, যুগ্মসচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) মির্জা শওকত আলীসহ মন্ত্রণালয় ও সুইডেন দূতাবাসের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী পের ওলসন ফ্রিধকে অভিবাদন জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম সারির দেশগুলোর অন্যতম সুইডেন।
স্বাধীনতার সাথে সাথে সুইডেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতার সম্পর্ক বিরাজমান।’
তিনি এসময় বাংলাদেশে সুইডিশ সরকারের অর্থায়নে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। মন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার মন্ত্রণালয় সারাদেশে ১ কোটি বৃক্ষের চারা রোপণ করেছে, যা পরিবেশ সংরক্ষণে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে পরিবেশ মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ‘ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি ফোরাম’-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাছাড়াও ‘গ্লোবাল সেন্টার অভ্ অ্যাডাপটেশন’-এর আঞ্চলিক অফিস ঢাকায় স্থাপনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে।
সভায় দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ধরিত্রীকে বাঁচাতে সুইডেনের জোরালো অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সাথে তার দেশ নিবিড়ভাবে একযোগে কাজ করবে।
তিনি বাংলাদেশ সরকার গৃহীত ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০ ও অষ্টম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনার প্রশংসা করেন। সুইডিশ মন্ত্রী এসময়, মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলন ‘স্টকহোম+ ৫০’ কনফারেন্সে অংশগ্রহণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ