কৃত্রিম সূর্য বানাল চীন, তাপমাত্রা দেড়শ মিলিয়ন ডিগ্রির বেশি
অনলাইন ডেস্ক: কৃত্রিম সূর্য তৈরি করেছে চীন। গত ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার সফলভাবে এইচএল-২ এম টোকামাক পারমাণবিক চুল্লি চালু করা হয়েছে। চুল্লিটি চীনের বৃহত্তম ও সবচেয়ে উন্নত পারমাণবিক ফিউশন পরীক্ষামূলক গবেষণা যন্ত্র। এই চুল্লিতে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ তাপ ও শক্তির কারণে একে ‘কৃত্রিম সূর্য’ বলা হয়।
চীন ২০০৬ইং সাল থেকেই পারমাণবিক ফিউশন চুল্লির (মিনিয়েচার) ছোট সংস্করণ তৈরির কাজ করছিল এবং এবার তার পূর্ণরূপ তৈরি করে আবার সেটি চালুও করে ফেলল তারা। এই কৃত্রিম সূর্যের ফলে দেশের পরমাণু শক্তি গবেষণার ক্ষমতা বহু গুণ বেড়ে গেল বলে দাবি চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের।
কৃত্রিম সূর্য কোনো সাধারণ পারমাণবিক চুল্লি নয়। পারমাণবিক অস্ত্র বা বিদ্যুৎ চুল্লিগুলোতে নিউক্লিয়ার ফিশন পদ্ধতিকে কাজে লাগানো হয়। এই প্রক্রিয়ায় যাতে পারমাণবিক নিউক্লিয়াসগুলো ক্রমাগত ভাঙতে থাকে।
কিন্তু কৃত্রিম সূর্যতে কাজে লাগানো হচ্ছে নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়া, যা পারমাণবিক নিউক্লিগুলোকে একীভূত করে। কৃত্রিম সূর্যের ক্ষেত্রে গরম প্লাজমা ফিউজ করার জন্য এতে একটি শক্তিশালী চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এর ফলে একশত পঞ্চাশ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা তৈরি হতে পারে, যা সূর্যের কোর অংশের উত্তাপের চেয়ে দশ গুণ বেশি।
অন্যান্য সংবাদ:
চীনের বৃহত্তম ও আধুনিক এই নিউক্লিয়ার ফিউশন এক্সপেরিমেন্টাল রিসার্চ ডিভাইসের মাধ্যমে দূষণহীন শক্তিশালী উৎস উন্মুক্ত করা সম্ভব বলে মনে করছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা। গরম প্লাজমা দ্রবীভূত করতে এই এটি ব্যবহার করে একটি শক্তিশালী চৌম্বকীয় ক্ষেত্র, এর ফলে এর তাপমাত্রা একশত পঞ্চাশ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস টপকে যেতে পারে।
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে এই চুল্লির অবস্থান। গত বছরের শেষদিকে এটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। চীনা বিজ্ঞানীদের আশা, যন্ত্রটি একটি শক্তিশালী ক্লিন এনার্জি, অর্থাৎ গ্রিনহাউস গ্যাসবিহীন শক্তির উৎসের সম্ভাবনা খুলে দিতে পরে।
চীনা সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলি বলছে, পারমাণবিক ফিউশন শক্তির বিকাশ যে শুধুমাত্র চীনের কৌশলগত শক্তির চাহিদার সমাধান করবে তা-ই নয়, ভবিষ্যতে চীনের জ্বালানি ও জাতীয় অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্যও এটি অত্যান্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
তবে ফিউশন প্রক্রিয়া অত্যন্ত কঠিন এবং ব্যয়বহুল। কৃত্রিম সূর্য চালু করতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ২ হাজার ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার।