হঠাৎ করে বারাণসীতে সবুজ হয়ে যাচ্ছে গঙ্গার পানি! বাড়ছে আতঙ্ক, কী বলছে বিজ্ঞানীরা?
গত বছর লকডাউনে জনজীবন নিস্তব্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে পরিবেশের দূষণ অনেকটা কমে গিয়েছিল। গঙ্গা (Ganga) বা তার পার্শবর্তী এলাকাগুলিতেও এর প্রভাব কীভাবে পড়েছিল দেখেছিলো সবাই। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই একেবারে উল্টো দৃশ্য।
করোনার ২য় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর থেকে দেখা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে গত বছরের সেই পুরনো স্বচ্ছতোয়া চেহারা আর নেই। বরং গঙ্গার পানির রংই যেন বদলে গিয়েছে। একাধিক গঙ্গাঘাটে দাঁড়িয়ে নদীর দিকে নজর দিলেই দেখা যাচ্ছে গঙ্গার পানি সবুজ হয়ে গিয়েছে ।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, যদি আরও দীর্ঘ সময় ধরে জলের রং এমন থাকে তাহলে বিষয়টি অবশ্যই বিশ্লেষণ করে দেখা উচিত। এক্ষেত্রে জল বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে গঙ্গাকে ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে বারাণসীর সাধারন মানুষের। সব মিলিয়ে দেখা যায় ৮৪টি ঘাটে গঙ্গার পানির একই অবস্থা।
রাম বাবু নামের এক স্থানীয় বাসিন্দার মতে, গঙ্গার জলে সবুজ রং হওয়াটা খুব নতুন কিছু নয়। সাধারণত বেশি বৃষ্টি হলে বর্ষার সময়ে পুকুর থেকে শ্যাওলা গঙ্গার জলে এসে জমে। কিন্তু সেটা কিছু অল্পসংখ্যক ঘাট থেকে দেখা যায়। এবার তা ৮৪টি ঘাটে ছড়িয়ে পড়েছে। জল থেকে একটা বাজে পঁচা গন্ধও পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বেনারসের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ‘মালব্য গঙ্গা রিসার্চ সেন্টার’-এর সভাপতি বিডি ত্রিপাঠী বলেছেন, ‘‘সাধারণত পুকুর অথবা খালের জলে এই ধরনের সবুজ রং চোখে পড়ে। কিন্তু গঙ্গার জলে এমন দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়ে না। তবে সাধারণত জলের গতি কম থাকলে এমনটা হতে পারে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে জলের রংটা যদি এমনই থেকে যায় তাহলে জলে, নিউরোটক্সিন মাইক্রোসিস্টিন মিশতে পারে। এর ফলে জল বিষাক্ত হয়ে উঠবে।’’
এদিকে পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলেছেন, বর্ষার সময় আশপাশের পুকুর অথবা খাল থেকে শ্যাওলা ভেসে চলে আসে গঙ্গায়। সেখানে ফসফেট, সালফার পেয়ে তারা অতি দ্রুত বেড়ে ওঠে। কেবল জলাশয় নয়, ক্ষেত কিংবা সেচের পানির থেকেও আসতে পারে।
তবে পরিবেশবিজ্ঞানীরা এর থেকে খুব বেশি ভয়ের কিছু নেই বলেই জানিয়েছেন। এটা একটা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা প্রায় প্রতি বছরই মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এমনটা দেখা যায়, তাই খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু এই পানিতে গোসল করলে চর্মরোগ হতে পারে আর তা পান করলে যকৃতের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে।