নদীতে পলিথিন দূষণ দূর করতে খালে নেট বসানোর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
শহরের কলকাখানার বর্জ্যে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পলিথিনমুক্ত রাখতে নদীর সংযোগ স্থানে থাকা খালগুলোর মুখে নেট বসানোর পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে এক আলোচনা সভা করা হয়।
বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি, চট্টগ্রাম বন্দরের বিস্ফোরক এবং ঝুঁকিপূর্ণ দ্রব্যাদির মজুদ, রক্ষণাবেক্ষণ, হ্যান্ডলিং, পরিবহন আইন এবং নীতিমালা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, কর্ণফুলী নদীর যেসব খাল দিয়ে এসব বর্জ্য আসে, সেই খালগুলোর সাথে নদীর সংযোগস্থলে নেট দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সেখানে সুইস গেট করুক বা যাই করুক, সেখানে পলিথিন পরিষ্কার করার জন্য লোক লাগবে। কথা ছিল সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এটা পরিষ্কার করবে। মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে মিটিংও করেছিল। কিন্তু ফলাফল কিছু পাওয়া যায়নি। এজন্য বলা হয়েছে বন্দরের নিজ খরচে এই কাজটি করা হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (BUET) এক গবেষণায় বলেছে, কর্ণফুলীর অনেক স্থানে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বর্জ দুই থেকে সাত মিটার আকারের স্তর জমেছে।
২০১৯ সালের মে মাসে কর্ণফুলীর নাব্যতা ফেরাতে ২৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সদরঘাট থেকে বাকলিয়ার চর খনন’ প্রকল্প শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চার বছরের এ প্রকল্পটি ২০২৩ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বরে ৩টি ছোট ড্রেজার দিয়ে খননকাজ শুরু করা হয়। কিন্তু নদীর তলদেশে জমে থাকা এসব পলিথিনের কারণে সেই কাজ থেমে যায়।
শহরের বর্জ্যে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী।এ বছরের জানুয়ারিতেও কর্ণফুলীর বর্জ্য ও পলিথিন অপসারণ নিয়ে এক আলোচনা সভা করে সংসদীয় কমিটি। ওই বৈঠকে বুড়িগঙ্গা ও কর্ণফুলী নদীর আবর্জনা এবং পলিথিন অপসারণ করার জন্য জরুরিভিত্তিতে ‘গ্র্যাব ড্রেজার’ সংগ্রহ করে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।
এদিকে বৈঠকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশকে কিভাবে পলিথিনমুক্ত রাখা যায় এবং সেজন্য সুপরিকল্পিত কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা নির্ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনার জন্য নৌমন্ত্রী এবং সচিবকে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি।