বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে নারীর তুলনায় পুরুষের ভূমিকা বেশি
সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু সংক্রান্ত উষ্ণতা বৃদ্ধিতে নারীর তুলনায় পুরুষের আমিষযুক্ত খাবার গ্রহণ ৪০ শতাংশের বেশি।
নারীর তুলনায় পুরুষ মাংসজাতীয় আমিষ খাবার ৪০ শতাংশ বেশি গ্রহণ করে। যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুসারে, নারীর চেয়ে পুরুষের এই বেশি আমিষযুক্ত খাবার জলবায়ু সংক্রান্ত উষ্ণতা বৃদ্ধিতে বেশি দায়ী।
গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্য-সম্পর্কিত নির্গমনের এক-চতুর্থাংশই কফি, অ্যালকোহল, কেক এবং মিষ্টির মতো ঐচ্ছিক খাদ্য ও পানীয় থেকে আসে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, টেকসই খাদ্যকে উৎসাহিত করার নীতিগুলো উদ্ভিদভিত্তিক খাবারে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এতে পানীয় ও মিষ্টিজাতীয় খাবার থেকে সরে আসার আরও বেশি সুযোগ তৈরি হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য খাদ্য উৎপাদন ৩০ শতাংশ দায়ী। আগের বেশ কিছু গবেষণায় দেখানো হয়েছে, জলবায়ু বিপর্যয় রোধে ধনী দেশগুলোতে মাংস খাওয়া ব্যাপকভাবে কমাতে হবে।
কারণ, মাংস খাওয়া বেড়ে যাওয়ায় মিথেন গ্যাস নির্গমন ও পশুপালন সম্পর্কিত বন উজাড় বেড়েছে। নতুন গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে পিএলওএস ওয়ান সাময়িকীতে। এতে ৩ হাজার ২০০ খাদ্যের সঙ্গে কার্বন নির্গমন সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ২১২ জনের খাদ্যাভ্যাসের তথ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
গবেষণার সময় তাঁরা তিন দিন ধরে খাবার ও পানীয় গ্রহণের তথ্য রেকর্ড করেন। এতে দেখা যায় প্রাণিজ পণ্যগুলো গড় খাদ্যের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় অর্ধেকের জন্য দায়ী। এর মধ্যে মাংস ৩১ শতাংশ ও দুগ্ধজাত পণ্য ১৪ শতাংশ দায়ী। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য পানীয় ১৫ শতাংশ আর কেক, বিস্কুট ও মিষ্টান্ন দায়ী ৮ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা যায়, নিরামিষ খাদ্যাভ্যাসের তুলনায় আমিষ খাদ্যাভ্যাসের কারণে ৫৯ শতাংশ পর্যন্ত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বাড়ে। এর মধ্যে পুরুষের খাদ্যাভ্যাস গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে দায়ী ৪১ শতাংশ। কারণ, পুরুষ বেশি মাংস খান ও পানীয়তে অভ্যস্ত।
যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হলি রিপিন এ গবেষণার নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘পৃথিবী রক্ষায় আমরা সবাই কিছু করতে চাই। এ জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন একটি উপায় হতে পারে। এ জন্য লাল মাংস খাওয়া বাদ দেওয়ার পাশাপাশি মিষ্টি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।’