32 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ২:০৭ | ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
প্রাকৃতিক বৈরী প্রভাবের ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে
জলবায়ু

প্রাকৃতিক বৈরী প্রভাবের ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে

প্রাকৃতিক বৈরী প্রভাবের ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে

প্রকৃতির গতিপ্রকৃতি পাল্টে যাওয়ায় জনজীবনে এসেছে পরিবর্তন। প্রতিনিয়ত মানুষকে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। শুধু জীবনধারণের প্রয়োজনে। প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে টিকে থাকতে হচ্ছে।

জনজীবন এখন আর প্রকৃতির ওপর নির্ভর করতে পারছে না। বরং প্রকৃতি তাদের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বছরের পর বছর মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।



প্রাকৃতিক বৈরী প্রভাবের ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে। এসব পরিবর্তনের জন্য বিশেষজ্ঞরা বৈশ্বিক উষ্ণতাকে দায়ী করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতির চেহারা বদলে যাচ্ছে বিশেষ করে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের। প্রতিনিয়ত সেখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে। টিকে থাকতে হচ্ছে সংগ্রাম করে। উপকূলের মানুষের।

উপকূলের দীর্ঘ এলাকায় প্রতি বছর দুর্যোগে হাজারো মানুষের প্রাণ যায়। কোটি কোটি টাকার সম্পদহানি ঘটে। সময়ের ধারাবাহিকতায় পরিবেশ উদ্বাস্তুতে পরিণত হওয়া পরিবারগুলো ভাসমান দিন কাটায়।

তারা অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করে। সময়ের বিবর্তনে উপকূল অঞ্চলের জীবনধারায় এসেছে নানা পরিবর্তন। প্রতিটা মানুষের পেশা বদলে যাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে যারা মাছ বিক্রি করতো তারা অন্যান্য পেশার দিকে ঝুঁকছে। কেউ কেউ শহরের দিকে পা বাড়ায়। কৃষকরা আর চাষাবাদের দিকে এগোয় না।

চাষাবাদের মাধ্যমে দিনাতিপাত করা কষ্টকর হয়ে ওঠে। তারা পৈতৃকভূমি হারিয়ে ফেলছে। ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানিরও সংকট দেখা যায়। এরই মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার ভয়াবহতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে উপকূলবাসীর জীবন-জীবিকার ধরন। প্রভাব পড়ছে সুন্দরবনের ওপর। প্রকৃতির রুদ্ররূপে সুন্দরবন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীল মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অকাল বৃষ্টি, খরা মারাত্মক প্রভাব ফেলছে সব ধরনের পেশায়। মৌসুম কখনও এগিয়ে আসছে কখনও বা পিছিয়ে যাচ্ছে।

দেশের উপকূলের ১৯ জেলায় প্রায় ৪ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। যা দেশের আয়তনের ৩২ শতাংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ এসব এলাকায় প্রকৃতির মতিগতি দ্রুতই বদলে যাচ্ছে।



মানুষের বেঁচে থাকার সুযোগগুলো হ্রাস পাচ্ছে। প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল গরিব মানুষের দুঃখ ও দারিদ্র্য দুই-ই বাড়ছে। এ সবকিছুই হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য। যা সাধারণ মানুষ এখনো টের পাচ্ছে না।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর গতিপথ পরিবর্তন, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, খরা, বন্যা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ৩৫ মিলিয়ন বা সাড়ে তিন কোটি মানুষ গৃহহারা হয়ে যাবে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু সংক্রান্ত গবেষক প্রফেসর নরম্যান মাইরিস তার গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী ৪০ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুতির শিকার হবে। আর সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুতি ঘটবে বাংলাদেশেই।

প্রতিনিয়ত তাপমাত্রা অধিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হচ্ছে বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি। আর বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হলো গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রতিক্রিয়া।

সাধারণত সূর্য থেকে যে তাপশক্তি পৃথিবী পৃষ্ঠে আসে তার কিছু অংশ পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে এবং অধিকাংশ বিকরিত হয়ে পুনরায় বায়ুমণ্ডলে চলে যায়। কিন্তু বায়ুমণ্ডলে ব্যাপক পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন প্রভৃতি গ্যাস জমা হওয়ার ফলে ভূপৃষ্ঠের তাপ বিকিরণ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং এসব গ্যাস তাপ শোষণ করে। ফলে দেখা যায়, ক্রমাগত ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ উত্তপ্ত হচ্ছে।

গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো যেমন- কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড এবং সালফারের অন্যান্য অক্সাইড, নাইট্রিক অক্সাইড, ক্লোরোফ্লুওরো কার্বন ইত্যাদি। গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো পৃথিবীর স্থান থেকে তাপ বিকিরণ করে। এই তাপ ইনফ্রারেড বিকিরণ রূপে, গ্রহের বায়ুমণ্ডলে এ গ্যাসগুলো দ্বারা শোষিত এবং নির্গত হয়।



ফলে বায়ুমণ্ডল এবং পৃষ্ঠকে উষ্ণ করে। পৃথিবীতে স্বাভাবিকভাবেই গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণযুক্ত বায়ুমণ্ডলে পৃষ্ঠের কাছে বায়ু তাপমাত্রা প্রায় ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৫৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট) কম থাকে, যা তাদের অনুপস্থিতিতে কমাবে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ছাড়া পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা জলের তাপমাত্রার চেয়ে কম হবে।

প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো ওয়াটার বাষ্প, যা গ্রিনহাউস প্রভাবের প্রায় ৩৬-৭০ শতাংশ কারণ সৃষ্টি করে; কার্বন ডাই-অক্সাইড, যা ৯-২৬ শতাংশ কারণ; মিথেন, যা ৪-৯% কারণ; এবং ওজোন, যা ৩-৭ শতাংশ কারণ। সূর্য পৃথিবীর প্রাথমিক শক্তি উৎস হিসাবে, আগত সূর্যালোকের পরিবর্তন সরাসরি জলবায়ু ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে।

সৌর অনাক্রম্যতা ১৯৭৮ সাল থেকে সরাসরি উপগ্রহ দ্বারা পরিমাপ করা হয়েছে, কিন্তু পরোক্ষ পরিমাপ ১৬০০-এর দশকের শুরুর দিকে শুরু হতে পারে। সূর্যের শক্তি পৃথিবীতে পৌঁছানোর পরিমাণে কোনো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নেই।

তাই এটি বর্তমান উষ্ণায়নের জন্য দায়ী নয়। শারীরিক জলবায়ু মডেলগুলো সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সৌর আউটপুট এবং আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপে কেবল বৈচিত্র্য বিবেচনা করে দ্রুত উষ্ণায়নের পুনরুৎপাদন করতে পারে না।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত