27 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সন্ধ্যা ৬:০৬ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঝখানে রেখে তিনটি ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে ইট
পরিবেশ দূষণ

প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঝখানে রেখে তিনটি ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে ইট

প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঝখানে রেখে তিনটি ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে ইট

কোমলমতি শিশুদের প্রথম পাঠের স্থান প্রাথমিক বিদ্যালয়টির সীমানা ঘেঁষেই দাউ দাউ করে জ্বলছে ইটভাটার আগুন। আর সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে এলজিইডির সড়কে চলছে ইট ও মাটির ট্রাক।

বিদ্যালয়ের ১০০ থেকে ১২৫ মিটার দূরে উত্তর পাশে আরও একটি ভাটাতেও পোড়ানো হচ্ছে ইট। আবার সমান দূরত্বে পূর্ব পাশেও রয়েছে অপর একটি ভাটা।



সব মিলিয়ে এ বিদ্যালয়কে মাঝখানে রেখে তিনটি ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে ইট। নীতিমালায় রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে ভাটা করা যাবে না সেখানে এই বিদ্যালয়ের দেড়শ মিটারের মধ্যেই রয়েছে তিনটি ভাটা।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের বহুতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশে বিনা বাধায় গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। সরকারি ইটভাটা নীতিমালার কোনো বিধিনিষেধ তোয়াক্কা না করে প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে এই তিনটি ইটভাটা।

পরিবেশ ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই ইট পোড়াচ্ছে খান ব্রিকস, হাইলাক্স ব্রিকস ও রায়েন ব্রিকস নামে এ তিনটি ভাটা। এছাড়াও আরও কিছু দূরে রয়েছে এমা ব্রিকস ও মুক্তা ব্রিকস। এগুলোরও কোনো অনুমোদন নেই।

বহুতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির সামনে তিন রাস্তার মোড়ের ওপর একটি বাজার ও ৩শ মিটার দূরে একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসাও রয়েছে। চারপাশে হাজার হাজার মানুষের আবাসস্থল।

অথচ এমন একটি অঞ্চলেই একাধিক ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট। ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট এবং সর্বোপরি প্রভাব পড়ছে আশপাশের কৃষি জমির ওপর।

এলাকাবাসী বলেন, এই এলাকায় বেশ কয়েকটি ইটভাটার কারণে ফসলের চাষাবাদ তেমনটা হয় না। মৌসুমী ফল উৎপাদনেও ইটভাটার প্রভাব পড়ে। স্কুলের পাশ দিয়েই সড়ক।

সড়ক দিয়ে ইট আর মাটির গাড়ি সবসময়ই চলাচল করে। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে পাঠাতে হয়। ভাটার কারণে বাচ্চাদের পড়াশোনাতেও ব্যাঘাত ঘটে বলে স্থানীয় অনেকেই দাবি করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লাভলী খাতুন বলেন, স্কুলের সঙ্গেই ইটভাটা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও দেখেছেন। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রহমত উল্লাহ খান বলেন, নাকের ডগা দিয়ে তিন তিনটি ভাটা চলে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, সবারই সমস্যা হয়। ফসলেরও ক্ষতি হয়। কিন্তু কেউ কথা শোনে না।

স্কুলের পেছনে কিভাবে ভাটা চলছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে খান ব্রিকসের স্বত্ত্বাধিকারী পাভেল খান বলেন, আমরা ৭/৮ বছর ধরে ভাটা পরিচালনা করছি। কোনো সমস্যা হয় নাই। কেউ বাধাও দেয় নাই।

হাইলাক্স ব্রিকসের স্বত্ত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম বলেন, এবারই শেষ। সরকার যে আইন করেছে, সেটি পাস হলে আমি আর ভাটার ব্যবসা করবো না।



অপরদিকে সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ঘোড়াচড়া এলাকায় সোনালী ব্রিকস, খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের ঝিনাইগাঁতী এলাকায় সোনালী ব্রিকস-২ ও গজারিয়া এলাকায় সৌহার্দ ব্রিকস।

এ তিনটি ইটভাটা সরকারি নীতিমালা সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করেই পরিচালিত হচ্ছে। আবাসিক এলাকার ১শ মিটারের মধ্যেই ইট পোড়ানো হচ্ছে ভাটাগুলোতে।

স্থানীয়রা বলেন, এখানে যারা ভাটা স্থাপন করেছেন তারা বেশ প্রভাবশালী। অনেক টাকা-পয়সার মালিক। এলাকা আর পরিবেশের ক্ষতি হলেও এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস কেউ পায় না।

লাইসেন্স ছাড়া কিভাবে ভাটা পরিচালনা করছেন এমন প্রশ্ন করা হলে সোনালী ব্রিকসের স্বত্ত্বাধিকারী প্রিন্স কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বলেন, ভাটা মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলার পর এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলবো।

সিরাজগঞ্জ জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা তালুকদার বলেন, ইটভাটা স্থাপনের যে নীতিমালা আছে সে অনুযায়ী বেশিরভাগ ভাটাই পরিবেশের ছাড়পত্র পায় না।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় জেলা প্রশাসকের অনুমোদনও পাওয়া যায় না। অনুমোদন দেননি। সম্প্রতি সরকার বেশ কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করছে। আগামী বছরের মধ্যে সবগুলো ভাটা পরিবেশের ছাড়পত্র পাবে এবং জেলা প্রশাসনের অনুমোদনও পাবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের (বগুড়া) পরিচালক সুফিয়া নাজিম বলেন, ছাড়পত্রহীন ভাটার তালিকা আমরা অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের একটি নির্দেশনা এসেছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোবারক হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে অনুমোদনহীন ইটভাটাগুলোতে প্রাথমিক নোটিশ পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই অবৈধ ভাটায় অভিযান শুরু হবে। নিয়ম বর্হিভূতভাবে কোনো ভাটাই চলতে পারবে না।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত