পৃথিবীর মানুষকে দীর্ঘমেয়াদে রক্ষায় রাষ্ট্রসমূহের উদ্যোগ এখনো অপর্যাপ্ত: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘পৃথিবীতে মানুষকে রক্ষা করার জন্য আমরা মনুষ্য সম্প্রদায় ও রাষ্ট্রসমূহ যেসব পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত গ্রহণ করেছি, মানুষকে দীর্ঘমেয়াদে রক্ষা করার জন্য সেগুলো যথেষ্ট নয়।’
এ বিষয়ে উন্নত রাষ্ট্রগুলো, বিশেষ করে যারা গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ বেশি ঘটাচ্ছে, তাদের আরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ) এবং আইডিইবি আয়োজিত ‘কপ ২৬: প্রাপ্তি ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) প্রেসিডেন্ট এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৬ মূল্যায়ন বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কপ ২৬ সম্মেলনকে সফল না বললেও ব্যর্থ বলতে পারি না। আমাদের অনেক প্রত্যাশা থাকে কপ মিটিংয়ের আগে কিন্তু সব প্রত্যাশা পূরণ হয় না।
কপ ২৬–এর ভালো দিক হচ্ছে, সেখানে কয়েকটা বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপিত হয়েছে। যেমন পৃথিবীর ১৪১টি দেশ বনায়ন বৃদ্ধি এবং কয়লা থেকে শক্তি উৎপাদন কমিয়ে ফেলার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে। কিন্তু রাষ্ট্রসমূহ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা পৃথিবীতে মানুষকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য যথেষ্ট নয়।’
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো পৃথিবীর অনেক দেশকে পথ দেখিয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের নিষ্পাপ শিকার।
কারণ, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কোনোভাবেই দায়ী নই। আমাদের জনপ্রতি গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ উন্নত দেশগুলোর তুলনায় নগণ্য। অথচ বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের চেয়ারপারসন। বাংলাদেশের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, ২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের শক্তি উৎপাদনের ৪০ শতাংশ সবুজ প্রযুক্তিতে হবে। এটি অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা।
এটি কেউ আমাদের করতে বলেনি, প্রধানমন্ত্রী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ ঘোষণা দিয়েছেন এবং ২০৫০ সাল নাগাদ আমাদের স্বপ্ন আছে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নিয়ে যাওয়া।
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যখন প্যারিস চুক্তি থেকে সরে আসে, বুঝতে হবে যে যুক্তরাষ্ট্র এই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।
এটি খুবই দুঃখজনক যে যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিল। এটিও খুবই দুঃখজনক যে মুনাফালোভী গোষ্ঠী তেলের চাহিদা যাতে কমে না যায়, সে জন্য সবুজ প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছাতে দিচ্ছে না।’