পরিবেশ রক্ষায় শব্দদূষণ রুখতে স্কুলে স্কুলে পরিবেশ ক্লাব গঠনের দাবি
বিভিন্ন প্রচার ও অনুষ্ঠানে এবং যানবাহনের মাধ্যমে আমরা শব্দদূষণের প্রতিযোগিতা করি। এর থেকে প্রতিকারে আমাদের আগে প্রতিবেশ ঠিক করতে হবে।
এ জন্য প্রত্যেক স্কুলে পরিবেশ ক্লাব গঠনের পাশাপাশি শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো দরকার। তাহলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
শনিবার (১২ মার্চ) সকালে বরগুনা জেলার সার্কিট হাউজের সভাকক্ষে, ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্প’এর আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে এ অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা।
বরগুনা জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সঞ্জয় কুমার দাসের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা তথ্য অফিসার সেলিম মাহমুদ। প্রকল্প সম্পর্কে সার্বিক ধারণা দেন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) গবেষণা পরিচালক ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রভাষক আবদুল্লাহ আল নাঈম।
সভায় বক্তব্য দনে বরগুনা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক মাহবুব হাসান, জেলা স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুদ্দিন শাহীন, গ্লোবাল ল থিংকার্স সোসাইটির সিইও মেহরাব অনিক, বাপার সদস্য আল-আমিন, ট্রাকচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম হাওলাদার, ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ বাবলু প্রমুখ।
সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘শব্দদূষণ হত্যাকারীর ভূমিকা পালন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, ৩০ শতাংশ মানুষ শব্দদূষণের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
এরমধ্যে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ছাত্ররাই। প্রচার কাজে মানুষ অনেক পরিমাণে শব্দদূষণ করে। এর থেকে প্রতিকার জরুরি।’
সঞ্জীব কুমার দাস বলেন, ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবার আগে আমাদের প্রতিবেশ ঠিক করতে হবে। সবাই যদি পরিবেশ নিয়ে সচেতন হয় তাহলে আমরা এ শব্দদূষণ থেকে রক্ষা পাবো।’
মাহবুব হাসান বলেন, আমাদের সমাজে শব্দদূষণের প্রতিযোগিতা চলে। নির্বাচনের সময় প্রচারের কাজে খুবই বিকট শব্দ উৎপন্ন করে- যার মাত্রা অনেক বেশি। বিভিন্ন স্কুলে যদি পরিবেশ ক্লাব তৈরি করা যায়, তাহলে এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা নিজেরাই শব্দদূষণের উৎস। আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজেরা শব্দদূষণের প্রতিযোগিতা শুরু করি। রাস্তাঘাটে অযথা ফোন দিয়ে অধিকমাত্রায় শব্দদূষণ করি। এ ক্ষেত্রে ড্রাইভারদের সচেতন করা জরুরি। তাদের জন্য আলাদা সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম রাখতে হবে।
মেহরাব অনিক বলেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের যে আইনগুলো রয়েছে— সেগুলো সাধারণ মানুষকে জানানো জরুরি। এ বিষয় নিয়ে সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।
আল-আমিন বলেন, মাইকিংয়ের শব্দে মানুষের অনেক ধরনের অসুবিধা হয়, যা থেকে নিস্তার পেতে হলে মাইকিংয়ের সময় নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
এ কে আজাদ বাবলু বলেন, ড্রাইভাররা যে সবসময় অযথা হর্ন বাজায় তা কিন্তু নয়। অনেক সময় বাধ্য হয়েই তাদের হর্ন বাজাতে হয়। রাস্তায় কীভাবে চলাচল করতে হবে, বিশেষ করে শহর এলাকায় এরকম ন্যূনতম জ্ঞান অধিকাংশ মানুষের নেই। সবাই যদি আইন মেনে চলতো তাহলে সুবিধা হয় না।
সভা শেষে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে পরিচালিত টিম বরগুনা শহরে শব্দদূষণের মাত্রা জানতে ৫ স্থানে সাউন্ড লেভেল মিটার স্থাপন করে। এ মেশিনটি প্রতি এক মিনিট পরপর তথ্য দেবে। যার মাধ্যমে শব্দদূষণের ২৪ ঘণ্টার মাত্রা জানা যাবে।