31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১২:৩৫ | ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশ রক্ষায় টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা একান্ত প্রয়োজন
পরিবেশ রক্ষা

পরিবেশ রক্ষায় টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা একান্ত প্রয়োজন

পরিবেশ রক্ষায় টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা একান্ত প্রয়োজন

পরিবেশদূষণের বিষয়টি এতটাই ভয়াবহ যে এর হাত থেকে রাষ্ট্র ও সমাজের কেউই রেহাই পায় না। আবার এই দূষণ সব সময় রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যেও থাকে না, গোটা অঞ্চল তথা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দরিদ্র দেশগুলোর মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যদিও এতে তাদের ভূমিকা সবচেয়ে কম।

গত ৩১ অক্টোবর বিশ্বব্যাংকের ‘কান্ট্রি ক্লাইমেট ও ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ৩২ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী পরিবেশদূষণ। দূষণে প্রতি ১ লাখের মধ্যে ১৬৯টি শিশু অকালে মারা যায়।



বাংলাদেশের প্রায় শতভাগ মানুষ বেশির ভাগ সময় দূষিত বায়ুর মধ্যে থাকে এবং পানিদূষণের কারণে ডায়রিয়া, কলেরাসহ নানা রোগ বাড়ছে। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মশাবাহিত ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেশের চারটি অঞ্চলকে পরিবেশের দিক থেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে। এগুলো হলো যথাক্রমে বরেন্দ্র, পার্বত্য চট্টগ্রাম, উপকূল ও হাওর এলাকা। কিন্তু সরকারের পরিবেশদূষণ রোধ কার্যক্রমে এসব অঞ্চল অগ্রাধিকার পেয়েছে বলে মনে হয় না।

পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বিচার পাহাড় ও বন ধ্বংস করে নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে গেলেও নদীর পানির প্রবাহ বাড়ানোর কার্যকর উদ্যোগ নেই।

হাওর অঞ্চলে প্রায় প্রতিবছরই বন্যা ফসল ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রেও টেকসই পরিকল্পনার কথা জানা নেই। পরিবেশের দিক থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল। প্রায় প্রতিবছর সেখানে ঘূর্ণিঝড় হানা দেয়। লবণাক্ততার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবিকাও মারাত্মক হুমকির মুখে।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান পরিবেশদূষণ রোধ তথা জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারের নানা কর্মসূচি তুলে ধরেছেন।

যদিও এসব কর্মসূচি পরিবেশ রক্ষায় তেমন ভূমিকা রাখতে পারছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদ শহরাঞ্চল থেকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ।



দেড় কোটি লোকের ঢাকা পৃথিবীর অবাসযোগ্য শহরগুলোর একটি। এখানকার বাতাস ও পানি—দুই-ই দূষিত। এ বছর যে ডেঙ্গু মারাত্মক প্রকোপ দেখা দিয়েছে, তারও পরোক্ষ কারণ পরিবেশদূষণ।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উদ্বেগজনক তথ্য হলো পরিবেশদূষণ আমাদের উন্নয়নের গতিও থামিয়ে দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয় এবং পরিবেশদূষণে জিডিপির ৮ শতাংশ খোয়া যায়।

এই সর্বনাশের বিরুদ্ধে সরকার টেকসই কোনো পদক্ষেপ নিতে পেরেছে, তার প্রমাণ নেই। একসময় ঢাকা শহর থেকে পরিবেশদূষণকারী পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। হালে দোর্দণ্ড প্রতাপে তা ফিরে এসেছে।

পরিবেশদূষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের সব উন্নয়ন হতে হবে পরিবেশ সহায়ক। উন্নয়নের নামে প্রাকৃতিক সম্পদ তথা বন, নদী, জলাভূমি, সৈকত ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না।

শিল্পকারখানা করার ক্ষেত্রে পরিবেশ আইন শতভাগ মেনে চলতে হবে। আইন অমান্যকারীরা যত ক্ষমতাবানই হোক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, পরিবেশ ধ্বংস মানে দেশকে ধ্বংস করা। মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া।

এত সব নেতিবাচক খবরের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট একটি সুখবর শুনিয়েছেন। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমিয়ে এনেছে।

কিন্তু আমাদের এখানেই থেমে থাকলে হবে না। সরকারের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো দুর্গত মানুষকে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে আবহাওয়ার পূর্বাভাসটিও হতে হবে নির্ভুল। গেল ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস নিয়ে বিপত্তি হয়েছিল, যা কোনোভাবে কাম্য নয়।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত