জলবায়ু বদলে পরিস্থিতি বদলে গেছে কাশ্মীরের
বরফের রানি ‘গুলমার্গ’। জম্মু-কাশ্মীরের গুলমার্গকে এই নামেই ডাকেন কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দারা। ভূস্বর্গ কাশ্মীর মানে শীতকালে বরফে ঢেকে যায় পাহাড়, উপত্যকা।
শীতে তুষারপাত এবং বরফে ঢাকা উপত্যকাকে দেখতে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক ভিড় করেন কাশ্মীরে। শীতকালে বেশিরভাগ মানুষ উত্তর কাশ্মীরের গুলমার্গকে বেছে নেন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে।
তবে এই বছর এখনও শীতের মরশুমে জম্মু-কাশ্মীরে তুষারপাত হয়নি। শীতের বৃষ্টিও থমকে গেছে। বরফশূন্য গুলমার্গ দেখে চলতি বছরে বিস্মিত কাশ্মীরবাসীও। কাশ্মীরে এই সময় চিল্লাই কালান চলে। হাড়হিম ঠান্ডায় ঝুরো বরফে ঢাকা পড়ে যায় উপত্যকা। ৩০ জানুয়ারি অবধি চলে চিল্লাই কালান। এ বছরই তার ব্যতিক্রম দেখা গেছে।
কাশ্মীরের আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর মুখতার আহমেদ জানিয়েছেন, ‘শীতের এই সময়টাতে বৃষ্টি হয় কাশ্মীরে। তারপরেই তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নামতে থাকে। শুরু হয় চিল্লাই কালান। তুষারপাত দেখতে বহু পর্যটকের ভিড় হয় এই সময়। গুলমার্গ, সোনমার্গ বরফে ঢেকে যায়।’
কিন্তু নতুন বছর বরফের দেখা নেই এখনও পর্যন্ত। জলবায়ুর বদলে পরিস্থিতি বদলে গেছে। কাশ্মীরের সমস্ত পুকুর, দিঘি, পাতকুয়ো, জলাশয়, ঝিল, খাল, বিল রয়েছে, সর্বত্র জলস্তর হুহু করে কমছে। এভাবে চারধারের জলাশয়গুলির জল কমে যাওয়া চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে পরিবেশবিদ ও আবহাওয়াবিদদের।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরে উষ্ণ জলস্রোত এল নিনো-র কারণেই ঋতুচক্রে বদল হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে কাশ্মীরের আবহাওয়ায়। শীতের বৃষ্টি আটকে গেছে। তুষারপাতের দেখা নেই।
বিশ্ব উষ্ণায়ণের জেরে জলবায়ু বদলই এর কারণ। এমন দাবদাহের জন্য দায়ী যথেচ্ছ দূষণ, গাছ কেটে নগরোন্নায়ন ও অত্যধিক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ।
২০২৩ ও ২০২৪ এল নিনো-র বছর। ফলে এ বছরেও আবহাওয়ায় নানা বদল আসার সম্ভাবনা প্রবল। প্রশান্ত মহাসাগরের চিলি ও পেরু উপকূল এবং মহাসাগরের মধ্যাঞ্চলে তৈরি হওয়া সেই ‘এল নিনো’-র জেরে এ বার বদল আসতে পারে ভারতের বর্ষার মরশুমেও। উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যেতে পারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।