32 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১:২১ | ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
আর অর্থায়ন নয় জীবাশ্ম জ্বালানিতে
জলবায়ু পরিবেশগত অর্থনীতি

আর অর্থায়ন নয় জীবাশ্ম জ্বালানিতে

আর অর্থায়ন নয় জীবাশ্ম জ্বালানিতে

কার্বন নিঃসরণ কমাতে ২০টি দেশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেসরকারি খাত কীভাবে অর্থায়ন করবে, তা নিয়েও নতুন উদ্যোগ।

জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন থেকে বিশ্বনেতারা বিদায় নেওয়ার পর কার্বন নিঃসরণ কমাতে আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে নেট জিরোর লক্ষ্য অর্জনে অর্থায়ন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ২০টি দেশ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা আগামী বছর থেকে অন্য দেশে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতের উন্নয়নে আর বিনিয়োগ করবে না।

তবে কয়লাসহ জ্বালানি খাতে বর্তমানে অন্যতম প্রধান বিনিয়োগকারী দেশ চীন ও জাপান এই সমঝোতায় অংশ নেয়নি। এ ছাড়া নেট জিরো অর্জনে বেসরকারি খাত কীভাবে অর্থায়ন করবে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাবে, তা নিয়েও নতুন উদ্যোগ ঘোষণা করা হয়েছে।



বিশ্বের আর্থিক সম্পদের ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে, এমন সাড়ে চার’শ কোম্পানি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধির হার চলতি শতকের শেষে দেড় ডিগ্রিতে সীমিত রাখার লক্ষ্য অর্জনে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সম্পদের পরিমাণ হচ্ছে ১৩০ নিযুত কোটি (ট্রিলিয়ন) ডলার।

ক্রীড়াঙ্গনে ২০৪০ সালের মধ্যে নেট জিরোর লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেই উদ্দেশ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে খেলাধুলার আয়োজনে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন অর্ধেকে নামিয়ে আনার কথাও এদিন ঘোষণা করা হয়।

তবে সম্মেলনস্থলের বাইরে গ্লাসগো শহরের নানা প্রান্তে বিক্ষোভকারীরা ব্যাংক ও অন্যান্য বহুজাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মুনাফালিপ্সার কারণে প্রকৃতি ধ্বংস বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদী কর্মসূচির আয়োজন করে।

সম্মেলনস্থলের বাইরে জলবায়ু সংকটের জন্য ঔপনিবেশিকতা দায়ী বলে ফেস্টুন বহন করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা। তাঁরা বলছেন, কার্বন গ্যাস নিঃসরণ বন্ধের জায়গায় তার ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার নীতি তাঁদের সমাজকে ভেঙ্গে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। খনিজ সম্পদ আহরণ, বাণিজ্যিক কৃষি এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্যোক্তারা তাঁদের ভূমি গ্রাস করছে।

জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অর্থায়নের বিষয়ে কাজ করা আন্দোলনকারী সংগঠন মার্কেট ফোর্সেসও সোচ্চার। তারা দূষণকারী জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে ২০২১ সালে সর্বাধিক বিনিয়োগকারী ব্রিটিশ ব্যাংক বার্কলেজকে লজ্জা দিতে গ্লাসগোতে প্রতিষ্ঠানটির শাখাগুলোর ভবনের দেয়ালে সেঁটে দিয়েছে নানা পোস্টার।

পরিবেশবাদীরা বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন যে বিভিন্ন ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং লোক দেখানো কিছু পরিবেশবান্ধব বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের অতীত দূষণকে আড়াল করতে বা গ্রিনওয়াশিং করতে চাইছে। এবারের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে এসব কোম্পানির বেশ কটিই প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্য হয়েছে।



পরিবেশবান্ধব পরিচয় ব্যবহার করে যেসব কোম্পানি নৈতিক বিনিয়োগকারীদের নজর কাড়তে চায়, সেসব কোম্পানি যাতে জলবায়ুর ক্ষতি করে তা আড়াল করতে না পারে (গ্রিনওয়াশিং), সেটা তদারকির জন্য একটি নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিষ্ঠার কথাও গতকাল কপ ২৬-এ ঘোষণা করা হয়।

ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবেলিটি স্ট্যান্ডার্ড বোর্ড (আইএসএসবি) নামের এই প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালে তার প্রথম সমীক্ষা রিপোর্ট দেবে, যাতে বড় বড় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশগত ভূমিকা তুলে ধরা হবে। ৩৬টি দেশ এই আইএসএসবি গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বলে কপ-২৬ সভাপতির দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

জীবাশ্ম জ্বালানি ও উচ্চ হারে গ্রিনহাউস গ্যাস উদ্‌গিরণকারী শিল্প এবং পরিবেশ বিপন্নকারী প্রকল্পে মুনাফার জন্য বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন শিল্পোন্নত দেশ উৎসাহিত করার নীতি নিয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋশি সুনাক ঘোষণা করেছেন যে তিনি চান অর্থবাজারের হিসাবে লন্ডন নেট জিরোর নীতিগুলো গ্রহণ করবে।

ব্যাংক-বিমা-বিনিয়োগসহ আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন ২০২৩ সালের মধ্যে তাদের কার্যক্রমে কার্বন নিঃসরণে ভারসাম্য আনতে কী কী পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তার পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে। তবে এই নির্দেশনা বাধ্যতামূলক হবে না।

ঋশি সুনাক তাঁর পরিকল্পনা তুলে ধরার জন্য সম্মেলনকেন্দ্রের নির্দিষ্ট সভাকক্ষে যাওয়ার সময় জিবিডি রাইজিং নামের একটি পরিবেশবাদী গোষ্ঠীর একদল তরুণ তাঁর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন যে ব্রিটেন কেন এখনো জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে ভর্তুকি দিয়ে চলেছে।



সুনাক ভর্তুকির কথা অস্বীকার করে বলেন, ভর্তুকি বন্ধ করা হয়েছে। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, কেন জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে কর রেয়াত দেওয়া হয়—এই প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে মঞ্চে উঠে যান তিনি।

পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গ্রিনপিস বলেছে, উদ্যোগটি ভালো হলেও তা শুধুই বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। কেননা, পরিকল্পনায় এমন ফাঁক রাখা হয়েছে, যাতে কোম্পানিগুলো যেভাবে ব্যবসা করছে, সেভাবেই চালিয়ে যেতে পারবে।

বেসরকারি সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান এইড বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর প্রাণঘাতী প্রভাব ফেলছে যে জীবাশ্ম জ্বালানি, সেই জ্বালানিতে নিযুত কোটি ডলারের যে বিনিয়োগ প্রবাহ চলছে, তাতে এই ঘোষণা খুব একটা ব্যত্যয় ঘটাবে না। তারা দাবি করে, এখনই জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে।

বিবিসি স্কটল্যান্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির নতুন কোনো অনুসন্ধান ও উত্তোলন বন্ধ হওয়া উচিত।

ক্রীড়াক্ষেত্রে নেট জিরোর লক্ষ্য অর্জনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) নির্বাহী সচিব প্যাট্রিসিয়া এস্পিনোজা বলেছেন, প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনের চার বছর আগে স্পোর্টস ফর ক্লাইমেট অ্যাকশন ফ্রেমওয়ার্ক যাত্রা শুরু করেছিল এবং বিশ্বের ২৮০টি ক্রীড়া সংগঠন এখন এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত