বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দিন দিন বেড়েই চলেছে।ফলে পৃথিবীর কোন কোন দেশে মরুকরণ আবার কোন কোন দেশে সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। গত ৬৮ বছরের তথ্যাদির ভিত্তিতে নাসা জানিয়েছে, এই বছর জুনে পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল সবচেয়ে বেশি।যার কারণে দ্রুত গতিতে বরফ গলছে গ্রিনল্যান্ড ও হিমালয়ে।
নাসা বলছে, এর জন্য দায়ী ইউরোপে ব্যাপক তাপপ্রবাহ, গোটা সুমেরু ও ইউরেশিয়ার তাপমাত্রা বৃদ্ধি আর পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি। এর আগে প্রায় একই কথা জানিয়েছিল ইউরোপের ‘কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস’।
নাসা দেখেছে, জুনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা যে পরিমান থাকা উচিতছিল,এবার তার চেয়ে ১.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ০.৯৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস উপরে। যার কারণে এ বছর উষ্ণতম গ্রীষ্ম কাটছে গ্রিনল্যান্ডের। যেখানে দেখা যাচ্ছে আগস্টের কাছাকাছি এই অংশের তাপমাত্রা থাকে অনেকটাই কম, সেখানে এবার দেখা যাচ্ছে ১০.৭ ডিগ্রিতে পৌঁছে গেছে উষ্ণতা।
আর সেজন্যে অন্যবারের তুলনায় এবার অনেক দ্রুত বেশি পরিমাণ বরফ গলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, গ্রিনল্যান্ডের বিশাল বরফের প্লেট থেকে এই গ্রীষ্মের শেষেই ৪৪০ বিলিয়ন টন বরফ গলে যেতে পারে।যার ফলে ওই অতিরিক্ত পানি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিবে, যা সহজে ভাসিয়ে দিতে পারবে পেনসিলভেনিয়া অথবা গ্রিসের একটা অংশকে।
নাসার সমুদ্রবিজ্ঞানী যশ উইলি এর মতে, মনুষ্য কারণ ও প্রাকৃতিক নিয়মেই এই বরফ গলছে। প্রতিবছরই এভাবে বরফ গলে, আবার তৈরিও হয়। কিন্তু এ বছর যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তা রীতিমতো উদ্বেগের। এর আগে এত দ্রুত বরফ গলেনি। ২০১২ সালের গ্রিনল্যান্ডে ৪০ হাজার কোটি টনের বেশি বরফ গলেছে, যা ২০০৩ সালের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি।গত ২ আগস্ট মাত্র একদিনে ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন টন বরফ গলেছে। গ্রিনল্যান্ডে যে পরিমাণ বরফ রয়েছে, তা গলে গেলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা প্রায় ২৫ ফুট বেড়ে যাবে।
যে কারণে পৃথিবীর সব সমুদ্রের পানি উপকূলের সীমানা ছাড়িয়ে প্রবাহিত হবে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ার কারনেই গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্রগুলোর পানির উচ্চতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর সব সমুদ্রেই একে অন্যের সঙ্গে রয়েছে মিশে , আর সেই কারণে সমুদ্র উপকূলবেষ্টিত বাংলাদেশ নিশ্চিত হুমকির মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা করা বিশেষভাবে হচ্ছে।
গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহ গলে গত জুলাইয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে ১৯৭ বিলিয়ন টন পানি বাড়িয়েছে। যার ফলে মাত্র এক মাসে সমুদ্রের জলস্তরে বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ০.১ মিলিমিটার বা ০.০২ ইঞ্চি।