31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ১১:১৮ | ১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
গ্রীনহাউজ ইফেক্ট এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি
পরিবেশ গবেষণা রহমান মাহফুজ

গ্রিন হাউজ এফেক্ট কি? এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ ও প্রভাব

গ্রীনহাউজ ইফেক্ট এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি

রহমান মাহফুজ, প্রকৌশলী, পরিবেশ কর্মী, পরিবেশ এবং পরিবেশ অর্থনৈতিক কলামিষ্ট, সংগঠক এবং সমাজসেবী।

’আমাদের ঘর পুড়ছে আর আমরা কিছুই করছি না’ – পরিবেশের উপর বিকল্প নোবেল বিজয়ী পরিবেশবাদী সুইডিশ ১৭ বছর বয়স্ক কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ এর বক্তব্য দিয়েই শুরু করা যাক।

“আমাদের ঘর পুড়ছে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখছি” অর্থাৎ আমাদের বাসস্থান এ পৃথিবী পুড়ছে অথচ আমরা কিছুই করছি না। আমাদের বাসস্থান এ পৃথিবীটা কেন পুড়ছে এবং পুড়ে যাওয়ার আগুন নেভাতে আমাদের করণীয় কি তা জানবার একটা আগ্রহ নিশ্চয় জন্মেছে।

পৃথিবীটা যে পুড়ছে তার কারণকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় “গ্রীনহাউজ ইফেক্ট”। সম্ভাবতই প্রশ্ন জাগতে পারে এই “গ্রীনহাউজ ইফেক্ট” কি? কেন এ ইফেক্ট হয় বা কেন একে গ্রীনহাউজ ইফেক্ট বলা হয়?

গ্রীনহাউজ ইফেক্ট
গ্রীনহাউজ ইফেক্ট

গ্রীনহাউজ বা সবুজ ঘর হল এমন একটি ঘর যার দেওয়াল এবং ছাদ প্রধানত স্বচ্ছ পদার্থ যেমন কাঁচ বা শক্ত পলিথিন দ্বারা তৈরি, যার ভিতর শাক-সবজী চাষাবাদের উপযুক্ত ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ তৈনি করা হয়।

শীতল আবহাওয়ায় উপযুক্ত উষ্ণতার অভাবে শাক-সবজী, ফুল-ফল-মূল চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটে, এ সকল গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ ঠান্ডা সহিঞ্চু নয় বা ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না।

তাই শীত প্রধান দেশে শাক-সবজী, ফুল- মূল-ফল চাষের জমির উপর স্বচ্ছ কাঁচ বা পলিথিন দ্বারা এমন ঘর তৈরি করা হয় যাতে সূর্যের আলো স্বচ্ছ বস্তুর ভিতর দিয়ে এরূপ বদ্ধ ঘরে প্রবেশ করতে পারে, কিন্তু তদ্বারা উৎপন্ন তাপ ভেতর থেকে বের হতে পারে না, ফলে অল্প সূর্যের আলোতেও যথেষ্ঠ তাপ উৎপন্ন হয়ে শাক-সবজী, ফুল-ফলকে উপযুক্ত উষ্ণতা প্রদান করে এবং ভিতরে বাহিরে বায়ু চলাচল করতে না পারায় ঐ সকল বদ্ধ ঘরের বাহিরের শীতল আবহাওয়াও ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না।

মূলতঃ রোমান শাসন আমল থেকেই নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উদ্ভিদ জন্মানোর ধারণা ছিল। রোমান সম্রাট টাইবেরিয়াস প্রতিদিন শশা আর বিভিন্ন রকমের শাক-সবজী খেতেন। ফলে বছরের প্রতিদিন তার খাবার টেবিলে শশার ব্যবস্থার জন্য তার বাগান পরিচর্যাকারী কৃত্রিম উপায়ে সবজী চাষাবাদের (গ্রীনহাউজ পদ্ধতির অনুরূপ ব্যবহার) ব্যবস্থা করত।

চাকাযুক্ত মালবাহী গাড়িতে তখন শশা চারা রোপন করা হতো যা রোদে রোদে রাখা হতো, পরে রাতে গরম রাখার জন্য বদ্ধ ঘরে আলোর মধ্যে নিয়ে যাওয়া হতো।

গ্রীনহাউজ ইফেক্ট হলো শীতপ্রধান দেশে সবজী উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্রীনহাউজ বা সবুজ ঘরের মত প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া একটি প্রক্রিয়া যা ভূপৃষ্ঠ বা বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করতে সহায়তা করে।

সহজভাবে বললে- পৃথিবীটিকে যদি আমরা একটি শস্য ক্ষেত্রের সাথে তুলনা করি তবে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০-১৫ কিঃমিঃ উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত কতকগুলো গ্যাস পৃথিবীটিকে স্বচ্ছ কাঁচের দেওয়ালের মত স্তরে স্তরে ঘিরে অবস্থান করছে যা গ্রীনহাউজ বা সবুজ ঘরের সাথে তুলনীয়।

গ্রীনহাউজ ইফেক্ট এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি
গ্রীনহাউজ ইফেক্ট এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি

সূর্য থেকে ভূ-পৃষ্ঠে আসা উচ্চ শক্তির (Sort wave and low frequency’s UV and visible) আলোক রশ্মি বাযুমন্ডল ভেদ করে কয়েকটি প্রক্রিয়ায় ভূ-পৃষ্ঠে পৌঁছায়। আলোক রশ্মি বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করলে তাতে অবস্থান করা মেঘ ও বিদ্যমান ধুলিকণা দ্বারা ২৫% প্রতিফলিত হয়ে মহাশূণ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

১৯% মেঘ ও গ্যাস দ্বারা (ওজন জাতীয়) শোষিত হয়, ২০% মেঘ ও গ্যাস দ্বারা এবং ৬% বায়ুমন্ডল দ্বারা মহাশূণ্যে প্রতিফলিত হয়। ফলে কিছু শক্তি ক্ষয় হয়ে ৫৫% ভূ-পৃষ্ঠে পৌঁছায়। ভূ-পৃষ্ঠে আসা আলোক রশ্মির ৪৯% ভূ-পৃষ্ঠ দ্বারা শোষিত হয় এবং ৬% বায়ুমন্ডলে কম শক্তিতে (Infrared ray- Long wave and high frequency’s invisible ray) প্রতিফলিত হয়।

ভু-পৃষ্ঠ দ্বারা শোষিত আলোক রশ্মিও পরবর্তীতে বাযুমন্ডলে প্রতিফলিত হয় অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠে আসা উচ্চ শক্তির (Sort wave) ৫৫%ই বাযুমন্ডলের Infrared zone এ কম শক্তির বিকিরণ (Long wave) রূপে প্রতিফলিত হয়।

প্রতিফলিত এ কম শক্তির বিকিরণ উক্ত গ্যাসসমূহ দ্বারা সৌর মন্ডলে ফেরত যেতে বাঁধা প্রাপ্ত হয় এবং খুব সামান্যই মহাশূণ্যে ফেরত যায়, অবশিষ্ট সবই উক্ত গ্যাসসমূহ দ্বারা শোষিত হয়।

শোষিত বিকিরণ তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। বায়ুমন্ডলে প্রতিফলিত কম শক্তির বিকিরণ পূনঃপূনঃ ভূ-পৃষ্ঠে প্রতিফলিত ও শোষিত হয়ে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।

বায়ুমন্ডলে গ্রীনহাউজ গ্যাসের যত বৃদ্ধি ঘটছে ভূ-পৃষ্ঠ দ্বারা প্রতিফলিত কম শক্তির বিকিরণ ততই পূনঃপূনঃ প্রতিফলিত ও শোষিত হয়ে বায়ুমন্ডলের তথা ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা যুগপৎ বৃদ্ধি করে চলেছে

এই গ্যাসগুলোকে বলা হয় গ্রীনহাউজ গ্যাস এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০-১৫ কিঃমিঃ উচ্চতা পর্যন্ত পৃথিবীর চারদিকে স্বচ্ছ কাঁচের দেওয়ালের ন্যায় সৃষ্ট গ্যাসের স্তর যা গ্রীনহাউজর মত ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে তুলছে তাই হলো গ্রীনহাউজ ইফেক্ট।



বায়ুমন্ডলে-গ্রীনহাউজ-গ্যাসের-বৃদ্ধি
বায়ুমন্ডলে-গ্রীনহাউজ-গ্যাসের-বৃদ্ধি

গ্রীনহাউজ গ্যাসগুলি হলো প্রধানতঃ জলীয় বাষ্প (H2O vapor), কার্বনডাইঅক্সাইড (CO2), মিথেন (CH4), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O), ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন ওজোন (Ground level O3), ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (CFCl3)।

প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবী সৃষ্টি লগ্নে পৃথিবীর কোন বায়ুমন্ডল ছিল না। পৃথিবী থেকে কিছু গ্যাস নির্গত হতে থাকে এবং ঐ সকল গ্যাসের মধ্যে পরস্পর বিক্রিয়ার ফলে পৃথিবীর বায়ুমন্ডল সৃষ্টি হতে থাকে যা এখনও চলমান রয়েছে।

পৃথিবীর সৃষ্টির শুরুর দিকের বাযুমন্ডলকে পৃথিবীর  প্রিস্টিন (Pristine) বা আদিম বাযুমন্ডল বলা হয়। আদিম বায়ুমন্ডলে ছিল এমোনিয়া (NH4), মিথেন (CH4) ও সামান্য পরিমান কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) এবং খুবই সামান্য পরিমান অক্সিজেন (O2)।

এই গ্যাসসমূহের বিক্রিয়ার ফলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হতে শুরু করে এবং ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রাও বাড়তে থাকে। এতে পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ব শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। মূলতঃ গ্রীনহাউজ গ্যাস ব্যতীত পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বই সৃষ্টি হতো না।

কারণ গ্রীনহাউজ গ্যাস ছাড়া ভূ-পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা -১৮° সেলসিয়ায়স (০° ফারেনহাইট), অপর দিকে গ্রিণ হাউজ গ্যাসসহ বর্তমানে ভু-পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ১৫° সেলসিয়াস (৫৯° ফারেনহাইট) ।

মানুষের কর্মকান্ডের ফলে বিশেষ করে ১৭৫০ সালের শিল্প বিপ্লবের পর থেকে বাযুমন্ডলে গ্রীনহাউজ গ্যাসের পরিমান দ্রুততর ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

১৭৫০ সালে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড-এর ঘনত্ব ছিল ২৮০ পিপিএম, ১৯৫৮ তে ৩১৫ পিপিএম, ২০০৫ সালে ৩৮০ পিপিএম, ২০১০ সালে ৩৯০ পিপিএম এবং মে, ২০২০ এ দাড়িয়েছে ৪১৭.১৬ পিপিএম।

সহজে অনুমেয় গ্রীনহাউজ গ্যাসের পরিমান দ্রুততর ভাবে বেড়েই চলেছে। (PPM – parts per million = milligrams per liter (mg/L) অর্থাৎ প্রতি লিটারে মিলিগ্রাম পরিমান)।

সভ্যতা বিকাশের নামে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, মানুষের অপরিমিত চাহিদা, অধিক থেকে অধিকতর সুবিধা প্রাপ্তির উচ্চাকাক্সক্ষা ও আরাম প্রিয়তার ফলে ক্রমবর্ধমান ভাবে গ্রীনহাউজ গ্যাসের বৃদ্ধি ঘটে চলেছে।

ফলে গ্রিনহাউস ইফেক্ট এর সক্রিয়তাও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পৃথিবী নামক এ গ্রহটি ক্রমশঃই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, জ্বলছে আমাদের ঘর আমাদের বাসস্থান, আমাদের পৃথিবী, সাথে সাথে হিমবাহ/বরফ গলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ডুবে যাচ্ছে নিন্মভুমি, তলিয়ে যাচ্ছে দ্বীপাঞ্চল আর দ্বীপ রাষ্ট্রসমূহ, মানুষের বাসস্থান হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে সাগরের অতল গভীরে।

ইতোমধ্যে র্পূব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সলোমনদ্বীপূঞ্জের সমূদ্র উপকূলের অনেক নিন্মভূমি ও অনকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ সমূদ্রে তলিয়ে গিয়েছে।

বিশ্বের উষ্ণতা এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের আশংকা বাংলাদেশ ভূখন্ডেরও এক-তৃতীয়াংশ এলাকা যা সমূদ্র উপকূলর্বতী রয়েছে ২১০০ শতাদ্বীর মধ্যে সমূদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছে এবং তখন বাংলাদশেরে ১ হতে ৩ কোটি উপকূলবাসীকে সমূদ্র উপকূলীয় এলাকা হতে অন্যত্র সরাতে হবে।

এছাড়াও তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে, ঋতুর পরবির্তন ঘটছে, শীতের সময় শীত না হয়ে অন্য সময় হচ্ছে বা কম হচ্ছে, বৃষ্টির সময় বৃষ্টি না হয়ে অন্য সময় হচ্ছে, অল্প সময়ে হঠাৎ অধিক বৃষ্টি হচ্ছে।

এতে অসময়ে বন্যা হয়ে ফসলি মাঠসহ মানুষের জানমাল অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, ঋতুর পরিবর্তনের ফলে কৃষি পঞ্জিকা ঠিক রাখা যাচ্ছে না যা কৃষি উৎপাদনে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলছে, ইত্যাদি।

ফলে বর্তমানে ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা যে গতিতে বাড়ছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ২০৫০ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা এক বিপর্যয়কর অবস্থায় উপনিত হবে বলে বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যৎ বাণী করছেন।

তাই পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে হলে অবশ্যই গ্রীনহাউজ গ্যাসসমূহের নিঃসরণ কমাতে হবে, ক্রমান্বয়ে নিঃসরণ শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসতে হবে এবং বাযুমন্ডলে নিঃসরিত গ্রীনহাউজ গ্যাসের নিঃসরণ ও নিঃসরিত গ্যাসের পরিমান হ্রাসকরণ প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে।

গ্রীনহাউজ গ্যাসসমূহের মধ্যে কার্বনডাইঅক্সাইড (CO2) এককভাবেই পৃথিবীর গ্রীনহাউজ ইফেক্ট এর তীব্রতার পরিবর্তনে ৫৫% অবদান রাখে বলে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যান্য গ্যাসের মধ্যে ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (CFCs) ২৫%, মিথেন (CH4) ১৫%, নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) ৫% অবদান রাখে।

নিম্নের ছকে বায়ুমন্ডলে গ্রীনহাউজ গ্যাসসমূহের ১৭৫০ সাল ও বর্তমান সময়ে পরিমাণ বৃদ্ধির তুলনা বর্ণিত হল:

গ্রীনহাউজ গ্যাসের নাম বাযুমন্ডলে (ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৫ কি:মি: উচ্চতা পর্যন্ত) পরিমাণ (পিপিএম) মন্তব্য
১৭৫০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বর্তমানে পরিমান (পিপিএম) শতকরা বৃদ্ধির হার
CO2 ২৮০ ৪১৭.১৬* ১৩৭.১৬ ৪৮.৯৯ * মে ২০২০ সালে নির্ণয় করা হয়েছে (Source: CO2.earth) ।
CH4 ০.৭০০ ১.৮৬৯**  ১.১৬৯ ১৭০.৪ ** ২০১৮ সালে নির্ণয় করা হয়েছে (Source: WMO Bulletin, Published on 25 November 2019)
N2O ০.২৭০ ০.৩৩৩১১** ০.০৬১১ ১২৩
Ground level, O3 ০.২৩৭ ০.৩৩৭*** ০.৩৩৭ ৪২ *** ২০১৩ সালে নির্ণয় করা হয়েছে (WIKIPEDIA: Greenhouse gas) ।
CFCl3 ০.৮৮০*** ০.৮৮০ # বায়ুমন্ডলে কোনও একটি গ্যাসের পরিমাণ/ ঘনত্ব নির্ণয় করতে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের পরিমাণ নির্ণয় ও কয়েক বছর পর্যবেক্ষণ করা হয়। তারপর বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্ত ফলাফল গড় করে পৃথিবী ব্যাপী মোটামুটি পরিমাণ বিষয়ে নিশ্চিত হতে হয়। সব দেশে এবং সকল স্থানে একই গ্যাসের পরিমাণের ভিন্নতা রয়েছে। তাই এর জন্য অনেক বছর সময়ের প্রয়োজন হয়। আবার আন্তর্জাতিক একেক সংস্থা একেক গ্যাসের পরিমাণ নির্ণয় করে যা প্রথমে বিজ্ঞান ভিত্তিক জার্নালে প্রকাশিত হয় এবং বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্তির পর পরিমাণের নিশ্চয়তা পায়। এমন ২ টি সংস্থার নাম উদাহরণ স্বরূপ দেওয়া হলো,Intergovernmental Panel on Climate Change (IPCC) এবং

National Oceanic and Atmospheric Administration (NOAA)

বায়ুমন্ডলে CO2 এর বৃদ্ধি মূলত মানুষের ক্রিয়াকলাপের কারণে। এ গ্যাসের প্রধান উৎস হলো শিল্প, পরিবহন, স্থান গরম বা শীতলী করণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, রান্নার জ্বালানী ইত্যাদিতে জীবাশ্ম জ্বালানী (Fossils fuels) যেমন প্রেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, লুব্রিক্যান্ট, কয়লা, গ্যাস ইত্যাদির ব্যবহার।

এতদ্ব্যতীত বৃক্ষনিধন ও বন উজাড় করণেও বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড-এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বায়ুমন্ডলে অতিরিক্ত CO2 এর বৃদ্ধির ৬৫% আসে জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে এবং বাকী ৩৫% বৃক্ষনিধন, বন উজাড় করণের কারণে।

মিথেন (CH4) এর পরিমাণ বৃদ্ধির প্রধান কারণই হচ্ছে কৃষি কাজ, পশু পালন, পোকামাকড়ের ক্রিয়াকলাপ, বর্জ্য/পচনশীল বস্তু মাটিচাপা দেওয়া, কয়লা, জীবাশ্ম জ্বালানী খনি থেকে উত্তোলন, রান্না, বিদ্যুৎ, সার উৎপাদনে, গাড়ির জ্বালানী হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার।

বায়ুমন্ডলে নাইট্রাস আক্সাইড N2O এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় প্রধানতঃ ভূমির ব্যবহারে রূপান্তরের কারণে। জীবাশ্ম জ্বালানীর দহন, প্রাণী ও উদ্ভিদ দেহের পুড়ে যাওয়া বা পচন, ভূমি ভরাটের ফলে গাছ-গাছালির পচন, কৃষিকাজ ইত্যাদির ফলেই বায়ুমন্ডলে অতিরিক্ত N2O এর বৃদ্ধি ঘটছে।

ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (CFCl3) এক প্রকার কম ফুটন্ত দ্রাবক জাতীয় কৃত্রিম ভাবে তৈরি গ্যাস যা শীতলকরণ যন্ত্র যেমন ফ্রীজ, এয়ারকন্ডিশনে এবং এরোসোলে ফ্রিয়ন (Freon) গ্যাস হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

এর অনু খুবই শক্তিশালী, এ গ্যাস ওজোন স্তরের ওজোনকে ধ্বংস করে তাতে গর্তের (Ozone hole) সৃষ্টি করে যার মাধ্যমে সূর্যের নীলবেগুনী রশ্মি (Ultraviolet Ray) সরাসরি পৃথিবীতে পৌঁছায়।

নীলবেগুনী রশ্মি পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্কিন ক্যানসারসহ নানাবিধ জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। CO2,  N2O, CH4  তুলনায় ক্লোরোফ্লোরো কার্বন বিশ্ব উষ্ণতার জন্য ব্যাপক ভাবে দায়ী।

ক্লোরোফ্লোরো কার্বনের অনু খুবই শক্তিশালী। এক অনু ক্লোরোফ্লোরো কার্বন এক অনু কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে ৩,৮০,০০,০০০ গুণ, এক অনু মিথেন হতে ১৫,২০,০০০ গুণ এবং এক অনু নাইট্রাস অক্সাইড হতে ১০,০০০ গুণ শক্তিশালী।

ক্লোরোফ্লোরো কার্বন CFCl3 (trichlorofluorocarbon) ওজোন (O3) ধ্বংসের রাসায়নিক বিক্রিয়াটি নিন্মে দেয়া হলো:

CFCl3 + hν   →   CFCl2 + Cl.       (hv = 240 nm wave length)
Cl.  +   O3   →   ClO.  +   O2
ClO. +   O   →    Cl .  +    O2.

এরূপ একটি চক্র বিক্রিয়ায় (Cycle reaction) এক পরমাণু Clo. যৌগিক (Redical ) ১,০০,০০০ অনু ওজন (O3) ধ্বংস করে। তাই ওজোন স্তরের ওজোন ধ্বংসকারী অন্যান্য গ্যাস সাথে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন উৎপাদন ও ব্যবহার সীমিতকরণের নিমিত্তে ১৯৮৭ সালে জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে মন্ট্রিল প্রোটোকল স্বাক্ষরিত হয়।

তখন থেকে উন্নত দেশগুলোতে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন এর ব্যবহার বর্তমানে শূণ্যের কোটায় নেমে এসেছে। আমাদের মত দেশগুলিতেও ধীরে ধীরে ব্যবহার সীমিত হয়ে আসছে।

গবেষনায় দেখা গেছে, মন্ট্রিল প্রোটোকলের ফলে গত দুই দশকে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে সৃষ্ট ওজোন গর্তের আকৃতি ক্রমশঃই হ্রাস পাচ্ছে।

ওজোন হোল (Ozone hole)
ওজোন হোল (Ozone hole)

ওজন (O3) বায়ুমন্ডল দুই স্তরে বিদ্যমান। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বায়ুমন্ডলের ২০-৩০ কিঃমিঃ উচ্চতার ওজোন খুবই ভাল ওজোন যা সূর্যরশ্মির Ultraviolet radiation শোষন করে পৃথিবীর প্রাণীকূল ও উদ্ভিদকূলের উপকার করছে।

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০-১৫ কিঃমিঃ পর্যন্ত উচ্চতায় যে ওজোন বিদ্যমান তা হলো ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন ওজোন (Ground level, O3) যা খুবই বিপজ্জনক বায়ুদূষন ঘটায়, যার ফলে ভূ-পৃষ্ঠে Photochemical smog তৈরি হয়। Photochemical smog হলো বিষাক্ত গ্যাস যা প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবন হানি ঘটাতে পারে।

১৯৫২ সালের লন্ডনে সংঘটিত smog এর ফলে মাত্র চার দিনে ৪,০০০ লোক প্রাণ হারায়।
১৯৫২ সালের লন্ডনে সংঘটিত smog এর ফলে মাত্র চার দিনে ৪,০০০ লোক প্রাণ হারায়।

আমেরিকায় প্রতি বছর smog এর কারণে ২৪,০০০ লোক মারা যায়। আমেরকিার নিউইর্য়ক, লসএঞ্জেলস, ক্যালিফোনিয়া  ইত্যাদির মত শহর একাধিক বার smog এ আক্রান্ত হয়ে লক্ষ লক্ষ লোকের মৃত্যুর কারণ ঘটায়।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ১৯৪৩ সালের ২৬শে জুলাই নিউইর্য়ক শহরে জুড়ে হঠাৎ smog সৃষ্টি হয়ে যখন অন্ধকার নেমে আসে এবং শহরবাসীর শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়, তখন তাদের ধারণা জন্মে যে জাপানীরা রাসায়নিক অস্ত্র দ্বারা তাদের শহর আক্রমণ করেছে।



Photochemical smog at Los Angeles, on 29 January 2004
Photochemical smog at Los Angeles, on 29 January 2004

জলীয় বাষ্প (H2O) সবচেয়ে ক্ষতিকর গ্রীনহাউজ গ্যাস। জলীয় বাষ্পের অনুগুলো ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত কম শক্তির বিকিরণ তীব্রভাবে শোষণ করে।

জলীয় বাষ্পের পরিমাণের কোন নিয়ন্ত্রণ সীমা নেই। আকাশে এর পরিমাণ যত বেশী থাকবে ভূ-পৃষ্ঠে তত বেশী গরম অনুভূত হবে। আবার ভূ-পৃষ্ঠ যত বেশী গরম হবে জলীয় বাষ্প তত বেশী পরমিাণে উৎপন্ন হবে

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, জলীয় বাষ্প (H2O) উৎপাদন মানুষের সরাসরি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। অন্য গ্রীনহাউজ গ্যাসসমূহ (CO2,  N2O, CH4, CFCl3, Ground level O3) এর উৎপাদন/নিসরণ যা মানুষের পক্ষে বেশীর ভাগ অংশই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তা হলে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির গতি ব্যাপকভাবে হ্রাস করা সম্ভব এবং অতিরিক্ত উৎপাদিত/ নি:সরিত গ্রীনহাউজ গ্যাস মানুষের সবুজ কর্মসূচীর মাধ্যমে শূণ্যের কোটায় আনা সম্ভব।

তবে যেহেতু গ্রীনহাউজ গ্রাসসমূহের মধ্যে CO2 গ্রীনহাউজ গ্যাসের নিঃসরণ ব্যাপক অংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে CO2 এর উৎপাদন/ নিসরণ শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনার জাতিসঙ্ঘের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিম্নের ছকে গ্রীনহাউজ গ্যাসের খাত ভিত্তিক নিসরণের পরমিান ও নিয়ন্ত্রণের উপায়/কর্মসূচী বিবৃত হলো :-

খাত পরিমাণ (%) উৎপন্ন গ্রীণ হাউজ গ্যাসসমূহ কারণসমূহ

প্রতিকারের উপায়

যানবাহন 13 প্রধানত CO2, CH4, N2O, GL, O3,.
এবং শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ীতে বাড়তি CFCl3
১)জীবাস্মা জ্বালানী (পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কয়লা ইত্যাদি) এর প্রজ্জ্বলন।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার।

১) ডিজেল, প্রেট্রোল, অকটেন, কয়লা ইত্যাদি জীবাশ্মা জ্বালানী চালিত গাড়ির ব্যবহার আস্তে আস্তে বন্ধ করতে হবে। তার পরিবর্তে সৌর বিদ্যুৎ বা কম জ্বালানী খরচ হয় এরূপ গাড়ির প্রচলন করতে হবে।
২) সকল গাড়িতে Catalytic Convertor ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৩) আপাতত যতটুকু সম্ভব ছোট ছোট গাড়ি এককভাবে বা ২/৩ জনের জন্য ব্যবহার না করে অনেকে মিলে একত্রে বড় গাড়ি ব্যবহার করতে হবে, যেমন কার ব্যবহার না করে বড় বড় বাসের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এত যানজটও হ্রাস পাবে।
৩)দূর ভ্রমণে রেল গাড়ি, বড় বড় বাস ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৮) অফিসে, স্কুলে, বাজারের মত স্বল্প দূরত্বে বাই সাইকেল এর ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং পায়ে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তার জন্য অফিস, স্কুল, খেলার মাঠ, বাজার ইত্যাদি সর্বস্থানে সিকিউর সাইকেল পার্কিং নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বিঘেœ নিরাপদ হাঁটার জন্য ফুটপাত নিশ্চিত করতে হবে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন 26 CO2, CH4, N2O, GL O3 এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িত বাড়তি CFCl3 ১)জীবাস্মা জ্বালানী (পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কয়লা ইত্যাদি) এর প্রজ্জ্বলন।
২) সৌর জ্বালানী প্রজ্জ্বলন।
৩)শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার।
১) ডিজেল, প্রেট্রোল, কয়লা ইত্যাদি জীবাস্মা জ্বালানীর এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবর্তে সৌর বিদুুৎ, জল বিদ্যুৎ (পাহাড়ী নদীর পানি পতিত করে, সমূদ্রের জোয়ারের পানি কৃত্রিম বাঁধ/ডুবো বাঁধ দ্বারা আটকিয়ে পানি পতিত করে, সমূদ্রের ঢেউ দ¦ারা বা পানির স্রোত ব্যবহার করে পুপলার ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা), উইন্ডমিল দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা।
২) চিমনিতে Particulate mater Removal এর জন্য Settling Chamber, Cyclone Collectors,  Electrostatic Precipitous, Coal burring PP, Wet cleaning process এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
শিল্প কল কারখানা 19 CO2, CH4, N2O, GL, O3 এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িত বাড়তি CFCl3 ১)জীবাস্মা জ্বালানী(পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কয়লা ইত্যাদি) এর প্রজ্জ্বলন।
২) শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার।
১) জীবাস্মা জ্বালানী (পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কয়লা ইত্যাদির ব্যবহার ক্রমান্বয়ে হ্রাস করতে হবে।
২) চিমনিতে Particulate mater Removal এর জন্য Settling Chamber, Cyclone Collectors,  Electrostatic Precipitous, Coal burring PP, Wet cleaning process এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৩) সকল শিল্প কলকারখানায় ISO 14001:2004(E) ( Environmental Management System) নিশ্চিত করতে হবে।
কৃষি খাাদ্য ও পশু পালন 14

প্রধানত CH4, N2O, খড় দিয়ে রান্না ও খোলা আকাশের নিচে শুষ্ক খড়, আগাছা পোড়ানোতে CO2, GL O3, এবং খাদ্য- দ্রব্য সংরক্ষণ কাজে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবহারের CFCl3

১) কৃষি যন্ত্রে, সেচ যন্ত্রে জীবাশ্মা জ্বালাণী, বিদ্যুৎ এর ব্যবহার কমাতে হবে।

২) রাসায়নিক সার, কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে।

৩) কৃষিজাত দ্রব্যাদির, আগাছা, বর্জ্য সরাসরি খোলা আকাশের নীচে পোড়ানো।

৪) মিউনিসিপ্যাল বর্জ্য ও মেডিক্যাল বর্জ্য খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখা, পোড়ানো।

৫) শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে CFCl3 এর ব্যবহার।

৬) গবাদি পশু ও পাখির মল- মূত্র হতে।

১) কৃষি যন্ত্রে, সেচ যন্ত্রে জীবাস্মা জ্বালানী, বিদ্যুৎ এর ব্যবহার কমাতে হবে।
২) রাসায়নিক সার, কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ করে জৈবসার ব্যবহার করতে হবে এবং পরিবেশ বান্ধব প্রদ্ধতি ব্যবহার করে পোকা দমন করতে হবে।
৩) কৃষিজাত দ্রব্যাদির, আগাছা, বর্জ্য সরাসরি খোলা আকাশের নীচে পোড়ানো (Open burning) বন্ধ করে পরিবেশ বান্ধব প্রদ্ধতিতে অবসায়ণ/জৈবসার প্রস্তুত করতে হবে।
৪) মিউনিসিপ্যাল বর্জ্য ও মেডিক্যাল বর্জ্য Recycling and পদ্ধতিতে অপসারণ করতে হবে।
৫) শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে CFCL3 এর ব্যবহার সর্মপূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।
৬) গবাদি পশু ও পাখির মল- মূত্র দিয়ে জৈব সার ও রান্না-বান্নার গ্যাস এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যহার করতে হবে।
বন ও গাছপালা 17 প্রধানত CH4, N2O, কিন্তু বৃক্ষ নিধনের ফলে CO2 এর ব্যবহার হ্রাস পায় এবং তাতে বায়ুমন্ডলে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১) গাছপালার ডাল- পালা ও লতা-পাতা, আগাছার পচন, সরাসরি খোলা আকাশের নীচে পোড়ানো। গাছ কাটা, বন উজাড় করণের ফলে ।
২) পাহাড় কাটা, ভূমি ভরাট।
৩। বনে আগুন লাগানোর ফলে।
৪) গাছ খাদ্য উৎপাদনে CO2 ব্যবহাররের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের CO2 এর পরিমাণ হ্রাস করে, কিন্তু গাছ কাটা, বন উজাড় করণের ফলে তা হ্রাস পায়।
১) বৃক্ষ নিধন, বন উজাড়, পাহাড় কাটা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
২) আগুন দিয়ে বন পুড়িয়ে কৃষি জমিতে বা তৃনভূমিতে পরিণত করা রোধ করতে হবে।
৩) বৃক্ষরোপন আন্দোলন বেগবান করতে হবে।
বর্জ্য ও বর্জ্যজল 3 CH4, N2O জীব ও উদ্ভিদের দেহের পচন ১) পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা প্রদ্ধতি ( EMS) অনুসরণ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
২) নন-অরগানিক বর্জ্য Recycling, Reuse এর ব্যবস্থা করাএবং অরগানিক বর্জ্য থেকে গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তরল বর্জ্য পরিশোধনের মাধ্যমে Reuse I disposal করতে হবে।
বিল্ডিং ও কারখানা তৈরি 8 CO2, CH4, N2O, GL O3, CFCl3 ১) ইট পোড়ানো, জমি ভরাট ও জমির ব্যবহার।
২) শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার।
৩) পোকা মাকড়ের বংশ বৃদ্ধি।
সবুজ বিল্ডং প্রকৌশল প্রদ্ধতিতে বিল্ডিং কারখানা নির্মাণ করতে হবে যেমন পোড়ানো বিহীন হলো ইট ব্যবহার, কাঠের ব্যবহার হ্রাস করণ, দিনের আলো ব্যবহার নিশ্চিত করণ, শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নুন্যতম করার লক্ষ্যে বিল্ডিং কারখানার ভিতরে পর্যাপ্ত বায়ু প্রবাহ নিশ্চিত করণসহ পরিবেশ ঠান্ডা রাখার জন্য চারদিক খোলা রাখা ও পর্যাপ্ত বৃক্ষরোপনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে অবকাঠামো নির্মান করতে হবে।

আমরা সকলে সচেতন ও সচেষ্ট হলে জাতিসংঘের ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রীনহাউজ গ্যাসের নিঃসরণ শূণ্যের কোটায় আনা সম্ভব হবে। আমরা সবাই সচেতন ও সচেষ্ট হব, গ্রীনহাইজ গ্যাসের নিঃসরণ শূণ্যের কোটায় আনব, পৃথিবী নামক এই গ্রহটিকে মানুষের বাসযোগ্য রাখব- এই প্রত্যাশা র’ল।

Referance:
1. Atmospheric Pollution, History, Science and Regulation, Mark Z. Jacobson, Cambridge Uni. Press, 2003
2. Environment: Problems and Solutions, DK Asthana, Meera Asthana, Chand Pub. India, 1999.
3. Environmental Chemistry, AK De, 4th Edition, New Age International (Pvt)Ltd, India, 2000
4. Air Pollution, MN Rao, HVN Rao, Tata-McGraw-Hill, India, 1989.
5. Wikipedia.

অধিক জনপ্রিয় কিছু সংবাদের কলাম। বিস্তারিত পড়তে হেড লাইনটিতে ক্লিক করুনঃ

  1. “গ্রেটা থানবার্গ” বছরের সেরা মানুষ- টাইমস
  2. নীল অর্থনীতি এবং বাংলাদেশের সমুদ্র বিজয় – এক অপার সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দ্বার উন্মোচিত
  3. করোনা বিধ্বস্ত অর্থনীতি – পূন:উদ্ধারে করনীয় কি ?
  4. গ্রীন ব্যাংকিং – পৃথিবী নামক এ গ্রহটিকে বাসযোগ্য রাখার ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
  5. ওজন গর্ত (Ozone hole) – এক বিস্ময়কর আবিস্কার এবং পৃথিবীর বেঁচে যাওয়া
  6. এল নিনো-দক্ষিনস্থ পর্যাবৃত্ত চক্র তাপ ইঞ্জিন (El Niño-Southern Oscillation heat engine) বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে
  7. বিমান হতে বীজ বোমার মাধ্যমে বছরে রোপণ করা যায় ১ বিলিয়ন গাছ
“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত