প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীববৈচিত্র আর বন্যপ্রাণীদের রক্ষার জন্য সরাবিশ্ব যখন একযোগে কাজ করছে তখন বাংলাদেশে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। এমন সময় মাদারীপুরে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির ১১টি বানরকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হলো।
বানর মারার ঘটনায় বর্তমানে স্থানীয়রা এখন বেশ ক্ষব্ধ। ১১টি বানর মেরে ফেলার যৌক্তিকতা কতটুকু তা এখন সবার প্রশ্ন ? প্রাণীদের সংরক্ষণের জন্য সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারপরও এমন ঘটনা সত্যিই মানুষের মনে দাগ কেটে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগুরিয়ার একটি এলাকায়। সেখানেই ১১টি বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বানরকে বিষ খেইয়ে মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
গত মঙ্গলবার ( ৫ মে ২০২০ ) বিকালে এই অমানুষিক ঘটনাটি ঘটায় দুর্বৃত্তরা। আর এই ঘটনার ফলে স্থানীরা এখন ক্ষুব্ধ। স্থানীয়দের ভাষায়, মৃত এই বানরগুলো শত বছর ধরে মানুষের পাশাপাশি চরমুগরিয়া বন্দরে বসবাস করছিলো। সেখানে মঙ্গলবার বিকেলে দুর্বৃত্তরা কয়েকটি বানরকে মারার জন্য বিষ খাইয়ে দেয়। বিষ দেওয়ার ফলে ১১টি বানরের মৃত্যু হয়।
অন্য একটি বানর প্রায় মৃত অবস্থায় সেখানে পড়ে থাকে। পড়ে থাকা বানরটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মৃত বানরগুলোকে স্থানীয়রা মাটি চাপা দিয়ে দেয়। স্থানীয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির ভাস্য অনযায়ী, একটি বেকারি কারখানার মালিক বিষ প্রয়োগ করে বানরগুলোকে মেরে ফেলেছে।
স্থানীয়রা জানান, বানরগুলো খাবারের জন্য অনেক সময় বাসাবাড়িতে হানা দিতো কিন্তু কখনো তারা বানর মারেনি। আড়িয়াল খাঁ নদীবেষ্টিত মাদারীপুরের চরমুগরিয়া অঞ্চল বনজ ও ফলদ গাছে পূর্ণ ছিলো।
মুক্তিযুদ্ধের আগে এ বনে ১০ হাজারের মতো বানর ছিলো বলে স্থানীরা জানান। চরমুগরিয়ায় তখন জঙ্গল ও শতশত গাছ থাকায় বানরগুলো সেখানেই বিচরণ করতো। জেলা বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী , আড়াই হাজারের মতো বানর এখনও চরমুগরিয়ায় আছে।
এদিকে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে বানর মারার বিচার চাওয়া হয়েছে। মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মাসুদ পারভেজ জানান, বানরগুলো মাদারীপুরের ঐতিহ্য। শত বছর মানুষ ও বানর একইসাথে প্রতিবেশীর মতো বসবাস করে আসছে। কিছু অমানুষ বানরগুলোকে মেরে ফেলেছে।
তথ্যানুযায়ী, মাদারীপুর সদর উপজেলার কুমার নদের তীরে নয়াচর এলাকায় ১৮ একর জায়গাজুড়ে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে বানরদের জন্য। কিন্তু ইকোপার্ক নির্মাণ করার পরেও আজও বানরগুলোকে সেখানে নেওয়া হয়নি। সূত্র: জাগোনিউজ