জলবায়ু পরিবর্তনের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় ইকোসিস্টেমভিত্তিক স্থানীয় পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্তি ও ন্যায্য ক্ষতিপুরণ আদায়সহ সাত দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর ২০১৯)। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবি বাস্তবায়নে সরকারের নীতি-নির্ধারকমহলের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে (৩১ ডিসেম্বর ২০১৯) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন বাংলাদেশ (এনসিসি’বি) ও কোষ্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশীপ (সিডিপি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন সিডিপি’র নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হাসান মাসুম। বক্তৃতা করেন উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী মো. আমিনুর রসূল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, এনসিসিবি’র রিসার্চ এন্ড এডভোকেসি অফিসার মাহবুবুর রহমান অপু, সাংবাদিক নিখিল ভদ্র, উন্নয়ন কর্মী সরকার আল ইমরান প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কিছুটা বিলম্ব এবং ধীরগতিতে হলেও দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহ জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) তৈরি শুরু করেছে। এরই মধ্যে ১২০টি দেশ এই প্রক্রিয়া হাতে নিয়ে নিজেদেরকে প্রযুক্তিগত, কারিগরি এবং জ্ঞানগত দিকসহ বিভিন্নভাবে এগিয়ে নিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের মানুষের অভিযোজনের দক্ষতা অনেক বেশি। বাংলাদেশকে বহুদিন থেকে অভিযোজন করে আসতে হচ্ছে। তাই এই প্রক্রিয়াটি অবশ্যই স্থানীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে করতে কাজ হবে। অভিযোজন পরিকল্পনাটি বিদেশী পরামর্শক নির্ভর না করে অবশ্যই স্থানীয় বিশেষজ্ঞ এবং অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে করতে হবে। একই সাথে এই জাতীয় দলিলের জন্য জনগণের মালিকানা এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত দাবিনামায় বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমঝোতা প্রক্রিয়াতে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারণে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সুশীল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের মতামত ও কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। জলবায়ু’র অভিঘাত মোকাবেলায়
স্বল্পোন্নত দেশগুলির পাশে আর্থিক, কারগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে উন্নত বিশ্বের দেশগুলির কার্যকর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির জন্য বীমা, ঋণ কিংবা অনুদানের পরিবর্তে উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। জলবায়ু বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসীদের জন্য পৃথক তহবিল ও পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। সর্বোপরি প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশসমূহকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।