অবাধে গাছ নিধন চলছে রাজশাহী অঞ্চলে, হুমকির মুখে পরিবেশ
রাজশাহী অঞ্চলে গাছ কেটে প্রকৃতি ধ্বংস করার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাপা রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, বাপার সহসভাপতি সেলিনা বেগম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া হাসান, অ্যালিজেবল ইয়ুথ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গোলাম নবী, লাইভস্টক সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন, হেলেন খান, নারীনেত্রী শাহিনা বেগম, বাপার দপ্তর সম্পাদক জাহিদ হাসান, প্রচার সম্পাদক কে এম জোবায়েদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রাজশাহী অঞ্চলজুড়ে উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিতভাবে গাছ কাটা হচ্ছে। গাছগুলো কাটছেন উচ্চশিক্ষিত মানুষ, যাঁরা সব সময়ই ক্ষমতার কাছাকাছি থাকেন। এর ফলে এই অঞ্চল অচিরে মরুভূমিতে রূপ নিতে পারে।
বক্তারা আরও বলেন, ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে ড্রেন নির্মাণের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে থাকা অর্জুনসহ প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে শতাধিক পাখি মারা যায়।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের দিকে রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের জন্য রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় থাকা অর্ধশতাধিক ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন গাছ কেটে ফেলা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পুরোনো ১৫টি গাছ কেটে ফেলেছে।
সম্প্রতি চাঁপাইনবাগঞ্জের নাচোলে তাজা গাছ মৃত দেখিয়ে প্রায় ১০০০ গাছ কেটে নিয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। এ ছাড়া পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে গাছ কাটা হয়েছে। এসব গাছ কাটা বন্ধ করা না গেলে এই অঞ্চল বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তাঁরা।
মানববন্ধনে বাপার রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি জামাত খান বলেন, বিএমডিএ গত ২৫ বছর ভূগর্ভস্থ পানি তুলে বরেন্দ্র অঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে। এখন তারা প্রকৃতি ধ্বংস করে লুটপাটে মেতে উঠেছে।
কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার দাপটের কাছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানটি এখন বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে তা নজিরবিহীন।
এ ছাড়া পুঠিয়ায় একশ্রেণির অসাধু জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তার যোগসাজশে ব্যক্তিস্বার্থের জন্য গাছ উজাড় করা হয়েছে। সেখানেও প্রাণ ও প্রকৃতির ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে।
জামাত খান বলেন, বৃক্ষ নিধনে প্রধানমন্ত্রী নিরুৎসাহিত করলেও তা মানছেন না খোদ সরকারি কর্মকর্তারাই। অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।