শাপলার রাজত্ব এখন দুর্গম জুরাছড়িতে
বাংলাদেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম যেন সৌন্দর্যের লীলাভূমি। সেই লীলাভূমির একটি রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ। এবার হ্রদের স্বচ্ছ নীল জলে ফুটেছে শাপলা ফুল। আর এই শাপলার রাজ্যে বেড়াতে ছুটে আসছে রাঙামাটিসহ বিভিন্ন এলাকার ভ্রমণপিপাসু প্রকৃতিপ্রেমীরা।
রাঙামাটির দুর্গম উপজেলা জুরাছড়ি। দুর্গমতা ও দূরত্বের কারণে জুরাছড়ি জেলার প্রত্যন্ত এক জনপদ। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসহ নানান কারণে এটি বেশ পরিচিত সারাদেশের মানুষের কাছে। সম্প্রতি জেলা শহর থেকে প্রতিদিনই এই উপজেলার উদ্দেশে মানুষ ছুটে আসছে শাপলা ফুলের ‘রাজ্য’ দেখতে।
কাপ্তাই হ্রদের বিশাল এলাকাজুড়ে শাপলা ফুলের ছড়াছড়ি। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগেই যেন প্রশান্তি মেলে মনে-প্রাণে।
জেলা শহর থেকে প্রতিদিন ভোরে শাপলা দেখতে কেউ বা লঞ্চ, কেউ বা ইঞ্জিনচালিত নৌকা কিংবা স্পিডবোটে করে ছুটে আসছেন। তরুণ-তরুণী, স্বামী-স্ত্রী ও মধ্যবয়স্ক মানুষের আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠছে জুরাছড়ির প্রত্যন্ত এই পার্বত্য জনপদ।
জুরাছড়ি যেতে নৌপথে পাড়ি দিতে হয় কাপ্তাই হ্রদের বিশাল অংশ। এ পথে যেতে যেতে উপভোগ করতে পারবেন আশপাশের পাহাড়ের সৌন্দর্য। দেখতে পারবেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবন-যাপন। পাহাড়ের ভাজে ভাজে বয়ে আসা ঝিরি-ঝরনার পানিপ্রবাহ।
এমনি একজন জুরাছড়িতে ঘুরতে আসা নুকু চাকমা। তিনি জানান, রাঙামাটির বিশাল অংশ জুড়ে কাপ্তাই হ্রদ বিস্তৃত থাকলেও জুরাছড়ির এই অংশটাতে শাপলা ফুল যেন রাজত্ব গড়ে তুলেছে। আমরা অনেকেই প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি।
শাপলার রাজ্য থেকে ঘুরে আসা মোনালিসা চাকমা জানিয়েছেন, আমাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পাহাড়ে। জুরাছড়িতে আমাদের আত্মীয়-স্বজনও রয়েছে। এখন হ্রদে ভরপুর পানি থাকায় শাপলা ফুলের যে রাজ্য গড়ে উঠেছে তা দেখতে প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রত্যেক দিন ছুটে আসছেন। তাই বন্ধুদের সঙ্গে করে তিনিও এসেছেন শাপলা ফুলের এই রাজত্ব দেখতে।
তবে ভ্রমণপিপাসুরা শাপলার ফুলের সৌন্দর্য নষ্ট করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় যুবক রকি চাকমা। তিনি বলেন, ‘অনেকেই জুরাছড়িতে শাপলা ফুল দেখতে আসছেন। কিন্তু তারা শাপলা ফুল হাত দিয়ে ছিঁড়ে ফেলছেন।
এতে ক্রমান্বয়ে ফুলের সংখ্যা যেমন কমছে তেমনি প্রকৃতির সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। তাই প্রকৃতির সৌন্দর্য রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া উচিত।