বাংলাদেশে ‘গোল্ডেন রাইস’ দ্রুত ছাড় করার অনুরোধ করেছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট
বাংলাদেশে ‘গোল্ডেন রাইস’ দ্রুত ছাড় করার অনুরোধ করেছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। বুধবার কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে দেখা করে তারা এ অনুরোধ জানায়। জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে গোল্ডেন রাইস অনুমোদনের বিষয়টি বর্তমানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন আছে। পাশাপাশি গোল্ডেন রাইস অনুমোদনের বিষয়ে পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের আপত্তির কথাও তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী।
বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইরির এশিয়া প্রতিনিধি নাফিস মিয়া এ তথ্য জানান। কৃষিমন্ত্রী ইরির প্রতিনিধিদলের কাছে লবণ, খরাসহ বিভিন্ন ঘাতসহনশীল (স্ট্রেস টলারেন্ট) ধানের জাত উদ্ভাবন ও গবেষণায় আরও বেশি সহযোগিতা চান।
প্রতিনিধিদলটি এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। ভারতের বারানসিতে অবস্থিত ইরি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসে স্থাপিত বিশ্বমানের গবেষণাগারে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা দ্রুত ধানের জাত উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন বলে জানায় প্রতিনিধিদল।
বৈঠকে কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাশ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, ইরির বাংলাদেশ প্রতিনিধি হোমনাথ ভান্ডারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যনিরাপত্তা টেকসই করতে লবণ, খরাসহ বিভিন্ন ঘাতসহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। ইতিমধ্যে দেশের বিজ্ঞানীরা উন্নত মানের অনেকগুলো জাত উদ্ভাবন করেছেন। আরও জাত দরকার। এ বিষয়ে আমরা ইরির সহযোগিতা চাই।
২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক ধান সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করা হবে বলে জানান ইরির এশিয়া প্রতিনিধি নাফিস মিয়া।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দেশে খাদ্যসংকট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই মুহূর্তে মাঠে ধানের অবস্থা ভালো। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৯০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
হাওরে ৪ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে আগাম বন্যায় প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সময়মতো বাঁধ রক্ষা, অনুকূল আবহাওয়া ও যন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে ধান কাটার ফলে ইতিমধ্যে হাওরের ধান ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে দেশে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশে শর্ষের আবাদ বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কমাতে কাজ চলছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আগামী তিন–চার বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হবে।