প্রাণী ও বন রক্ষায় একজোট হয়ে কাজ করবে ২৭ পরিবেশবাদী সংগঠন

দেশজুড়ে একের পর এক হাতিসহ বন্যপ্রাণী হত্যা ও বন উজাড় রোধে বন অধিদফতরের ব্যর্থতার প্রতিবাদে ডাকা আন্দোলনে রবিবার পর্যন্ত যুক্ত হলো ২৭টি সংগঠন।

এসব ঘটনায় বন সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে দ্রুত বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে এসব সংগঠনের অংশগ্রহণে বুধবার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বন ভবনের ফটকে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে সংগঠনগুলোকে নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এ কথা জানানো হয়। সভায় বক্তারা জানান, সংযুক্ত সংগঠনগুলোর সম্মন্বয়ে ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট’-এর নামে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

মঙ্গলবার দিনভর আগারগাঁওয়ের বন ভবন এলাকায় অবস্থান নিয়ে গান, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কনসহ নানান কর্মসূচির মাধ্যমে বন অধিদফতরের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপনের পাশাপাশি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জনসচেতনতা তৈরিরও চেষ্টা করা হবে।

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সাংবাদিক কেফায়েত শাকিলের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জোটের আহ্বায়ক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা-এর যুগ্ম সম্পাদক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।

বক্তব্য রাখেন, পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি রাকিবুল হক এমিল, নোঙর বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুমন শামস, সেভ আওয়ার সি-এর মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, ওশেন এক্সপ্লোরার এস এম আতিকুর রহমান, গ্রীণ ফাইটিং মুভমেন্টের সভাপতি নাবিল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান সমি, ডীপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মাহফুজুর রহমান, বিবিসিএফ-এর যুগ্ম সম্পাদক আরাফাত রহমান, ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম ফর সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট–ওয়াইপিএসড এর প্রতিষ্ঠাতা সাইদুল ইসলাম, প্রবাসী খালেদ রেদওয়ান চৌধুরী প্রমুখ।

মঙ্গলবারের সভা পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটে সংহতি জানানো সংগঠনগুলো হলো—বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, সেভ আওয়ার সি, নোঙর বাংলাদেশ, ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন, সবুজ আন্দোলন বাংলাদেশ, উপকূল বাঁচাও আন্দোলন (উবা), ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার, গ্রীণ ফাইটিং মুভমেন্ট, ব্লু-গ্রীণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, গ্রিন সেভার্স, বাংলাদেশ বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন ফেডারেশন, মেরিন জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক, শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন-তীর, সবুজ কুঁড়ি বাংলাদেশ, ন্যাচার লিভিং পিপল, অভয়ারণ্য, বাংলাদেশ এনিমেল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, কেয়ার ফর পজ, তুরাগ নদী রক্ষা কমিটি, ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম ফর সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল ও বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন।

সংহতি জানানো বিশেষ ব্যক্তিরা হলেন, ঢাবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন, চবির হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক মঞ্জুরুল কিবরিয়া, কীটতত্ত্ববিদ ও জাবির অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ, অভিনেত্রী জয়া আহসান, বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী ফাতিম হাসান খান, আইইউসিএন এশিয়ান হাতি স্পেশালিস্ট টিম সদস্য ড. নাছির উদ্দিন, প্রাণ-প্রকৃতি সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় ৭টি পরিবেশবাদী সংগঠন নিয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট’। অন্য সংগঠনগুলোকেও এই জোটে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান উদ্যোক্তারা।