প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে হাজীগঞ্জের পরিবেশ
চাঁদপুরে বালু ব্যবসা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, উন্মুক্ত স্থানে বালু ব্যবসার কারণে সেখানকার পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব তৈরি হয়েছে। জেলার হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় এ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।
বালু ব্যবসার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তার কিছুই মানা হচ্ছে না। বালু ব্যবসায়ীরা সরকারি দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় কোনো কিছুকে তোয়াক্কা করছে না তারা। গোটা পৌর এলাকা বালুতে ভরে গেলেও স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
খোলা জায়গায় বালু রাখা ও খোলা ট্রাকে বালু পরিবহনের কারণে হাজীগঞ্জ পৌর শহরে দিনরাত বালু উড়ছে। মানুষজন বাড়িঘরে থাকতে পারছে না। অনেকে ঘরভাড়াও দিতে পারছে না।
দোকানপাট খুলতেও সমস্যা হচ্ছে। এমনকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও রোগীরাও ভোগান্তিতে পড়েছেন। দিনের পর দিন এমনটি ঘটে আসছে।
স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বালু ব্যবসায়ীরা হয়ে উঠেছেন আরও বেপরোয়া। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী, কোথাও বালু রাখলে বা পরিবহন করলে ঢেকে রাখতে হবে।
বিধিমালা অমান্য করলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। হাজীগঞ্জে এ বিধিমালা লঙ্ঘিত হলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা এখানে প্রশ্নবিদ্ধ। পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই পৌরসভা কর্তৃপক্ষও বালু ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে। বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, যত্রতত্র উন্মুক্ত স্থানে দেদার বালু বেচাকেনার কারণে পৌরবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাঁরা বিষয়টি নীরবে সহ্য করে যাচ্ছেন। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নেই কারও।
বিষয়টি নিয়ে এলাকার একাধিক ব্যক্তি গত বছর পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন। অভিযোগের অনুলিপি পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরেও দেওয়া হয়। এতে কোনো ফল হয়নি।
পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর জানাচ্ছে, বিধিভঙ্গ করে বালু ব্যবসা করা ব্যক্তিদের একটি তালিকা করা হচ্ছে। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় অভিযান শুরু হবে। স্থানীয় সাংসদও এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছেন।