31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১১:০০ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
প্রাণী বৈচিত্র্য

পাহাড়ে হাতির সংখ্যা কমছে

রাঙামাটি: পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিকে বলা হয় রূপ-বৈচিত্র্যের শহর। একদিকে সুউচ্চ পাহাড়, ঘন সবুজ বন, অন্যদিকে কাপ্তাই হ্রদ।

প্রকৃতি এখানে মিলেমিশে একাকার। পুরো বন যেন শান্তির সুবাতাস ছড়ায়। পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন বণ্য প্রাণীর অভয়াশ্রম।
এর মধ্যে বন্য হাতি, ষাড়, মায়া হরিণ, কালো হরিণ, গয়াল, শূকর, মেছো বাঘ, বন বিড়াল, সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে অজগর, গুইসাপ, গিরগিটি, বনরুই, সজারু এবং পাখির মধ্যে ময়না, টিয়া, শ্যামা, কোকিল, ঘুঘু, কাঠ ঠোকরা উল্লেখযোগ্য।

বর্তমানে রাঙামাটিতে বেড়েছে মানুষের বসবাস। পাহাড়ের তুলনায় সমতল ভূমি কম হওয়ায় মানুষ বসবাসের জন্য স্থান হিসেবে বেঁচে নিচ্ছেন পাহাড়কে। যে কারণে বন উজাড় হচ্ছে। বিলুপ্ত হচ্ছে জলজ এবং বন্য প্রাণী।

এদিকে জেলার রাঙামাটি সদর, কাউখালী, কাপ্তাই, লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, রাজস্থলী উপজেলাগুলোর দূর্গম পাহাড়ি বনে বন্য হাতির বসবাস। বন উজাড়ের কারণে খাবারের খোঁজে হাতি চলে আসছে লোকালয়ে। হামলা চালাচ্ছে মানুষের বসত-বাড়িতে, মারছে মানুষ। মানুষও বাঁচতে হাতির পালের উপর হামলা চালাচ্ছে। রাঙামাটির বন-জঙ্গলকে হাতির আস্তানা বলা হলেও আজ বৃহৎ আকৃতির এই প্রাণীটি বিলুপ্তির পথে।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯-২০১৯ সাল পর্যন্ত আইইউসিএন এর জরিপ মতে, গত ১০ বছরে পাহাড়ে ২০টি হাতি মারা গেছে। এর মধ্যে বান্দরবানের লামা বনবিভাগের এলাকায় ১০টি, বান্দরবান পাল্পউড বনবিভাগের অধীনে ২টি, রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের এলাকায় ৫টি এবং রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের এলাকায় ৩টি।

হাতি হত্যাকে কেন্দ্র করে স্ব-স্ব এলাকার থানাগুলোতে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও এ ঘটনার জন্য কাউকে গ্রেফতার বা মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে হাতির আক্রমণে মারা যাওয়া মানুষ এবং সম্পদহানী হিসেবে এ পর্যন্ত আট লাখ টাকা সহায়তা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছে।

আইইউসিএন ২০১৫-১৬ সালের জরিপে বাংলাদেশের ১২টি এলাকাকে হাতির করিডোর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। করিডোরগুলোর মধ্যে রয়েছে- কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের অধীনে ৩টি, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের অধীনে ৫টি এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের অধীনে ৪টি। এগুলো হলো, উখিয়া-ঘুমধুম সীমান্ত,তুলাবাগান-পানেরছড়া, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি- রাজারকুল। ভ্রমরিয়াঘোনা-রাজঘাট, তুলাতলী-ঈদঘর, খুটাখালী-মেধাকচ্ছপিয়া, খাসিয়াখালী-সাইরুখালী ও সাইরুখালী-মানিকপুর।

পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে- রাঙামাটির কাপ্তাই-চুনতি-বরকল-লংগদু-কাউখালী। গুরুত্বপূর্ণ হাতির করিডোরগুলোতে বন উজাড় করে বসতি নির্মাণ করায় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে। যে কারণে মানুষের আক্রমণে হাতি, হাতির আক্রমণে মানুষ মরছে।

রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার পরিবেশ কর্মী ও আলোকচিত্রী রকি চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, ‘পাহাড় দখল হয়ে যাচ্ছে। বন উজাড় হচ্ছে। যে কারণে পাহাড়ে বন্য প্রাণীদের খাবারের সংকট দেখা দিচ্ছে। ’

পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান বাংলনিউজকে বলেন, ‘রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা হচ্ছে হাতির গুরুত্বপূর্ণ করিডোর। এই এলাকায় প্রায় ৫৫টি হাতি রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই করিডোরগুলোতে মানুষ বর্তমানে পাহাড় কেটে বসতি নির্মাণ করছে। যে কারণে হাতিরা চলাচলে বাঁধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং বন উজাড়ের কারণে খাবার সংকটে পড়ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘যারা বন উজাড় করছে তাদের প্রতিহত করা অত্যন্ত জরুরি। বন এলাকায় ঘর-বাড়ি নির্মাণে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বনকর্মকর্তা আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে প্রায় ১০০-১৫০টি হাতি রয়েছে। একটি হাতির জন্য দৈনিক ২৫০ কেজি খাবার প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রতিদিন হাতির জন্য এত খাবারের পাওয়া খুবই কঠিন। হাতি বেশিরভাগ খেয়ে থাকে গাছপালা ও লতা-পাতা। বন উজাড়ের কারণে হাতির খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত