পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গাছপালার বিচিত্র ব্যবহার রয়েছে। গাছপালা থেকে আমরা নানা ধরনের ফল, শাক-সবজি ও খাদ্যশস্য পেয়ে থাকি।
আমাদের প্রতিদিনের রান্নায় যেসব মসলা ব্যবহৃত হয় তা মূলত আমরা গাছপালা থেকেই পেয়ে থাকি। ওষুধ হিসেবেও গাছপালা অনেক বেশি কার্যকরী। তাছাড়া, বসতবাড়ির শোভা বা সৌন্দর্যবর্ধনেও গাছপালার কোনো জুড়ি নেই।
বিপুল বৃক্ষরাজি মূলত বায়ুমণ্ডলকে বিশুদ্ধ ও শীতল রাখতে সাহায্য করে। যেখানে গাছপালা ও বনভূমি বেশি থাকে সেখানে ভালো বৃষ্টিও হয়ে থাকে। ফলে চাষাবাদ ও জমির ফসলও ভালো হয়। গাছপালা মাটির উর্বরা শক্তি বাড়াতেও বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
তাছাড়া, ভূমির ক্ষয়রোধ, ঝড়-বৃষ্টি ও বন্যা প্রতিরোধেও গাছপালা সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যে কোনো দেশের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশে বনভূমির পরিমাণ তার চেয়েও অনেক কম। গত চার দশকে দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে এ হার সবচেয়ে বেশি। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা ব্যাপকহারে বনভূমি উজাড় করে বসতবাড়ি তৈরি করেছে।
পাশাপাশি জ্বালানি ও ঘরের সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহারের জন্যও অসংখ্য বনভূমি কেটে সাবাড় করেছে। বনভূমি কম থাকার কারণে আমাদের দেশ প্রতি বছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ছে। বন্যা, খরা, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একশ্রেণির মানুষ অকারণে প্রতিদিনই অসংখ্য গাছ কেটে প্রকৃতি ধ্বংসের নেশায় মেতে উঠেছে। পাশাপাশি পাহাড় কাটা ও পাহাড় পোড়ানোও থেমে নেই। এতে করে দিন দিন প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব অপরিসীম। যদি গাছপালা না থাকত তাহলে আমাদের চারপাশের পরিবেশ উষ্ণ হয়ে উঠত। পৃথিবী মরুভূমিতে পরিণত হতো।
তাই ইচ্ছেমতো গাছ কাটা ও বন উজাড় বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে হলে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই।