31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১:৫৭ | ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশ রক্ষায় মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা
পরিবেশ রক্ষা

পরিবেশ রক্ষায় মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা

পরিবেশ রক্ষায় মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা

বিভিন্ন প্রজাতির দেশি–বিদেশি গাছ। মাঝখানে পাথরের টুকরা ছড়িয়ে দিয়ে হাঁটার জায়গা বানানো হয়েছে। চারপাশে দূর্বা ঘাস। এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী একটি উদ্যান।

ভেতরে ছোট্ট একটি নালা। তার ওপর কাঠের তক্তা দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশেই কাঠের একটি বেঞ্চ। সেখানে বসে ছবি তোলার জন্য অনেকেই অপেক্ষা করছেন।

আগারগাঁওয়ের বৃক্ষমেলায় এলে একটু সময় নিয়ে ঘুরতে হবে। স্টলগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখ আটকে যাবে এমন একটি স্টলে। যাঁদের একচিলতে বারান্দা কিংবা ছোট্ট একটু ছাদ আছে, তাঁদের জন্য ছোটখাটো উদ্যান গড়ে তোলার ধারণা নিয়ে গড়া হয়েছে এমন স্টল।

কথা হয় স্টলের অন্যতম উদ্যোক্তা ফার্মিং লাইফ বিডি লিমিটেডের পরিচালক মো. রকিবুল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বছর নেদারল্যান্ডসের একটি মেলায় অংশ নিয়েছিল তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি।

সেখানে অল্প জায়গা ব্যবহার করে কীভাবে নান্দনিক ও রুচিসম্মত বাগান গড়ে তোলায় যায়, সে বিষয়ে চমৎকার সব ধারণা পেয়েছেন। সেই ধারণা থেকেই স্টলের সামনের চত্বরকে সাজানো হয়েছে।

রকিবুল আমিন বলেন, ‘জনসাধারণকে একটা মেসেজ দেওয়া দরকার যে ল্যান্ডস্কেপটা প্রয়োজন। একজন একটা বাড়ি করছেন, সেটির পাশে ছোট্ট একটু জায়গা আছে। সেখানে ল্যান্ডস্কেপ ফুটিয়ে তোলা যায়।’



রাজধানীর শ্যাওড়াপাড়ার বাসিন্দা দীপ্তি রহমান। একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। একটু ফুরসত পেলেই বারান্দায় গাছের পরিচর্যা করেন। পছন্দের ফুল কিংবা ফলের গাছ কিনতে প্রতিবছরই আসেন বৃক্ষমেলায়।

কিন্তু গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে বৃক্ষমেলা বন্ধ ছিল। এ বছর পুনরায় মেলা বসেছে। খবর পেয়ে স্বামী–সন্তানসহ এসেছেন মেলায়। চোখ জুড়ানো এমন স্টলে ছবি তুলছিলেন।

দুই বছর পর মেলায় এসে কেমন লাগছে, জানতে চাইলে দীপ্তি রহমান বলেন, এত সুন্দর পরিবেশে এসে মন ভালো হয়ে গেছে। নানা জাতের আমগাছ নজর কেড়েছে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে কৃষ্ণচূড়ার সবুজ পাতার ফাঁক গলে এখনো উঁকি দিচ্ছে রঙিন ফুল। সারি সারি কৃষ্ণচূড়ার গাছের পাশেই বৃক্ষমেলার মাঠ। এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে সরকারি–বেসরকারি শতাধিক স্টল। উন্মুক্ত জায়গা কিংবা ছাদে যাঁরা বাগান করতে চান, তাঁরা মেলা থেকে কিনতে পারবেন পছন্দের ফুল কিংবা ফলের গাছ।

প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মেলা খোলা। মেলায় ঢুকতে লাগবে না কোনো টিকিট। মাসব্যাপী এই মেলা চলবে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত।

মেলার অধিকাংশ স্টলেই নানা জাতের আমগাছের পসরা। এর মধ্যে রয়েছে জাপানি সূর্য ডিম, কিং অব চাকাপাত, ব্রুনাই কিংসহ দেশি–বিদেশি নানা জাতের আমগাছ।

ছাদবাগানে চাষের উপযোগী এসব গাছে ঝুলছে রংবেরঙের থোকা থোকা আম। মেলায় আসা ক্রেতা–দর্শনার্থীরাও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে গাছগুলো দেখছেন। কেউবা আবার বাহারি রঙের আমের সঙ্গে সেলফি তুলছেন।

গাছের মান ও আকার অনুযায়ী দামেও রয়েছে বৈচিত্র্য। কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির বিক্রেতা বাবুল হোসেন জানালেন, ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিভিন্ন জাতের আমগাছ ড্রামসহ বিক্রি করছেন তাঁরা।

আমগাছের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ। এর মধ্যে আছে কোকো ফল গাছ। এটি দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন উপত্যকার উদ্ভিদ, যার বীজ থেকে চকলেট তৈরি হয়। গাছটি পাওয়া যাবে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়।



ফলগাছের পাশাপাশি মেলা প্রাঙ্গণ রঙিন করেছে বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছ। লাল, কালো, সাদা দেশি–বিদেশি জাতের গোলাপগাছ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় দর্শনার্থীদের।

দেড় শ টাকা থেকে পাঁচ শ টাকায় মিলবে গোলাপের গাছ। মেলায় আছে হলদে, লাল, গোলাপি রঙের থাই জবা। আছে উত্তর আমেরিকার ফুল নন্দিনী। দরদাম করে ১০০ থেকে ২০০ টাকায় কেনা যাবে এসব গাছ।

বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের পাশাপাশি মেলায় বিভিন্ন ধরনের অর্কিড পাওয়া যাচ্ছে। বাসার বারন্দা কিংবা জানালায় ঝুলিয়ে রাখার মতো ডেনড্রোবিয়াম, ক্যাটারিয়া, ভ্যারেন্ডা জাতের অর্কিড পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। এ তো গেল ফুল, ফল আর উদ্যানের বর্ণনা।

রাজধানীর দালানকোঠার গাদাগাদিতে যাদের বারান্দায় এক চিলতে রোদও পড়ে না, তাদের জন্য মেলায় রয়েছে নানা জাতের ইনডোর প্ল্যান্ট। বাহারি পাত্রে স্থাপন করা এসব ইনডোর প্ল্যান্ট কেনার ক্রেতাও আছে অনেক।

ক্যাকটাস–প্রেমীদের জন্য মেলায় রয়েছে অনেক স্টল। যেখানে হরেক পদের বাহারি ক্যাকটাস দেখে মনে হয় শিল্পীর নিপুণ হাতের রংতুলির ছোঁয়া লেগেছে তাতে।

দেশি, ভারতীয় ও থাই এসব ক্যাকটাস দেখে মন ভালো হয়ে যায় মুহূর্তেই। অবশ্য ক্যাকটাসের আকার ও জাতভেদে দামে ভিন্নতা রয়েছে। ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় পছন্দের ক্যাকটাস কিনতে পারবেন ক্রেতারা।

আজকাল বাসাবাড়ির মতো অফিস ডেস্ককে সবুজে সতেজ রাখতে চান অনেকেই। তাঁদের জন্য ব্যবহার উপযোগী গাছ ও বাঁশের টব মিলবে কিছু স্টলে।

ঝুলিয়ে রাখা যায় এমন বেত ও বাঁশের পাত্রে গ্রিন লিফ কেনা যাবে এক হাজার টাকায়। এ ছাড়া অফিস ডেস্কে রাখা যায় এমন ভ্যান, রিকশা, ঘর বানানো হয়েছে বাঁশ দিয়ে। এগুলোতে রাখা যাবে পছন্দসই গাছ। হাজার খানেক টাকায় মিলবে এসব টব।

যাঁরা একটু শৌখিন, ছাদবাগান কিংবা খোলা জায়গায় বাগান করতে চান, তাঁদের জন্য আছে বিভিন্ন ধরনের বনসাই। ঢাকার অদূরের আশুলিয়া থেকে বৃক্ষমেলায় আসা একটি নার্সারিতে দেড় থেকে সাড়ে চার লাখ টাকায় বনসাই পাওয়া যাচ্ছে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত