নাজেহাল অবস্থা বরিশালের পরিবেশ ব্যবস্থা
বিভাগীয় শহর বরিশালের বর্তমান পরিবেশ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিশেষ করে অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে এ শহরের মানুষ স্বাস্থ্যগতভাবে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকালে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে ‘বরিশালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি ‘বেলা’ এ সভার আয়োজন করে।
অধ্যাপক (অব.) গাজী জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক কথা মুখে বলি কিন্তু কাজ করি না।
মনে প্রাণে দেশকে ভালোবেসে যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারি তবেই দেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের স্বপ্ন স্বার্থক হবে। পরিবেশ আমাদের সবার, তাই এই পরিবেশ রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের সবার। আমরা যদি নিজে বাঁচি, পরিবেশকে বাঁচাই, তবেই আমাদের দেশ বাঁচবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মদ, পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. তোতা মিয়া।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রানের নির্বাহী পরিচালক ও বেলার নেট মেম্বার মো. রফিকুল আলম। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- উন্নয়ন সংগঠক কাজী জাহাঙ্গীর কবির, অ্যাডভোকেট হিরন কুমার দাস মিঠু, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ চৌধুরী, বিডি ক্লিনের বরিশালের বিভাগীয় সমন্বয়ক মাসুদুর রহমান, অ্যাডভোকেট এ কে আজাদ, অধ্যাপক শিবানী চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহিদা আক্তার, প্রফেসর শাহ সাজেদা, বি এন ডি এন এর সভাপতি আনোয়ার জাহিদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিভাগীয় শহর বরিশালের বর্তমান পরিবেশ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিশেষ করে অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে এ শহরের মানুষ স্বাস্থ্যগতভাবে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমন অবস্থার জন্য জনগণের অসচেতনতা এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর আধুনিক ব্যবস্থাপনার অভাবকেই দায়ী করেছেন বক্তারা।
তারা আরো বলেন, এ পর্যন্ত বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান বরিশালের জনবসতি এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে। এ সব শিল্প প্রতিষ্ঠান একদিকে যেমন মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে, পাশাপাশি বায়ু, পানি, মাটি ও পরিবেশ-প্রতিবেশ ব্যবস্থাও সংকটের মুখে ফেলেছে।
প্লাষ্টিক বর্জ্য বর্জনের পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার তাগিদ দিয়েছেন বক্তারা। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের সুপারিশও করেছেন তারা।