দেশে বিরল পরিযায়ী পাখি ‘ক্যাস্পিয়ান পানচিল’
বৈচিত্র্যপূর্ণ পাখির দেশ, বাংলাদেশ। নানান ধরনের পাখিদের সবান্ধব উপস্থিতি সগৌরবে দৃশ্যমান এখানে। দেশে দূর-দূরান্তের নির্জনতায় পাখিরা দাপিয়ে বেড়ায়।
রাজধানীসহ দেশের শহরে বাস করা পাখিপ্রেমীদের সৌভাগ্য হয় না সেসব পাখিদের প্রত্যক্ষ করার। কিংবা, তাদের আলোকচিত্র ধারণ করে ডিজিটাল ক্যানভাসে প্রকাশ করার। যারা পাখির ভালোবাসায় এখনো মুগ্ধ হয়ে উঠার সুযোগ পাননি তারাও যেন সেই সুযোগটুকু গ্রহণ করেন।
বন্যপ্রাণীবিষয়ক আলোকচিত্রী শামীম আলী চৌধুরী। দেশের দূর-দূরান্তে ঘুরে ঘুরে পাখির ছবি ধারণ করাই তার নেশা। সম্প্রতি তিনি তুলেছেন প্রায় অদেখা পাখি ক্যাস্পিয়ান পানচিলের ছবি।
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণীর ছবি তোলা শুরু থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে বেরিয়েছি। সেই সুবাদে দেশের দক্ষিণে সুন্দরবনে অসংখ্যবার গিয়েছি শুধু বন্যপ্রাণীর খোঁজে। সুন্দরবনে মূলত করমজল, আন্দারমানিক, হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালি ও কুকিলমনিতেই যাওয়া হয়েছে। এর বাইরে সুন্দরবনের কোথাও যাইনি।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড, পুটনি, দুবলার চর ও মান্দার বাড়িয়ায় অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরে যাওয়া হয়। সেখানেই নতুন জেগে উঠা চর বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড। আমরা ৯ জন বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী বিভিন্ন খাল ঘুরে যখন নদীর মুখে আসি তখন দেখা গেল বেশ কিছু জলজ পাখি নদীর পাড়ে বসে আছে।
আমরা সবাই বোট থেকে নেমে একটা চরে উঠলাম। যার যার মতো পাখির ছবি তুললাম। হঠাৎ ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে দেখা গেল বিরল প্রজাতির পরিযায়ী পাখি ‘Capsian Tern’।
এ পাখি সম্পর্কে শামীম আলী চৌধুরী বলেন, পাখিটির বাংলা নাম ‘ক্যাস্পিয়ান পানচিল’। ইংরেজি নাম Capsian Tern এবং বৈজ্ঞানিক নাম Sterna caspia Pallas 1770. এর রক্ত লাল ঠোঁট, কালচে ডানা ও ৫১ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সামুদ্রিক পাখি।
এরা মূলত উপকূল, মোহন ও বড় নদীতে ছোট দলে বিচরণ করে। শীতকালে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভগের উপকুলে কদাচিৎ পাওয়া যায়।
এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে মাছ ও কাঁকড়া। এদের প্রজননকাল মে থেকে জুন মাস। প্রজননকালে এরা বালুর চরে সামান্য বালু সরিয়ে বাসা বানিয়ে ২-৩টি ডিম পাড়ে। এরা আমাদের দেশে ‘বিরল পরিযায়ী’ পাখি বলে জানান তিনি।