পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ইট পোড়ানো হচ্ছিল সাভারের উত্তর ও পশ্চিম কাউন্দিয়াসহ তুরাগ নদের তীরে গড়ে ওঠা অধিকাংশ ইটভাটায়।গতকাল বুধবার পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে ছাড়পত্র ছাড়া ইট পোড়ানোর অভিযোগে ৪টি ভাটাকে ৩৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আংশিক ভেঙে দেওয়া হয়েছে তিনটি ভাটার। জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আটক করা হয়েছে দুজনকে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা করেন।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবৈধ ছয়টি ইটভাটা উচ্ছেদ করেছেন । একই সাথে এসব ইটভাটাকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।সেই সাথে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির পাম্পের সাহায্যে কাঁচা ইট বিনষ্ট ও ইট পোড়ানো কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সাভারে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাকছুদুল ইসলাম উল্লেখিত ইটভাটাগুলোয় অভিযান চালান।এসময় তাঁকে সহায়তা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক শাহেদা বেগম ও সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে অভিযান চালানো হয় উত্তর কাউন্দিয়া এলাকার তিতাস ব্রিকস নামের ইটভাটায়। এ সময় ভাটাটির আংশিক ভেঙে দেওয়া হয়। জরিমানাও করা হয় ৫ লাখ টাকা। তাৎক্ষণিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আটক করা হয় ভাটা মালিক ফয়সাল আহম্মেদকে। পরক্ষণে জরিমানা আদায় করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে অভিযান চালানো হয় মিতালী ব্রিকস ও এমএসএম নামের দুইটি ইটভাটায়। এ দুইটি ভাটার চুল্লিও আংশিক ভেঙে দেওয়া হয়। জরিমানা করা ৮ লাখ টাকা। এমএসএম ব্রিকসের মালিক জরিমানার ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন তাৎক্ষণিক। মিতালী ব্রিকস জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় মালিক জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাঁকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুপুর দুইটার সময় পশ্চিম কাউন্দিয়া এলাকার নুরমিন ব্রিকসে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ভাটার ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলামকে আটক করা হয়। অনাদায়ে তাঁকে দেওয়া হয় তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট শাখার ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজিদ আহমেদের নেতৃত্বে উক্ত অভিযান চলে। অভিযান চলাকালীন সময় পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপপরিচালক সাঈদ আনোয়ার, পরিদর্শক মঈনুল হক, আব্দুল গফুরসহ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গুঁড়িয়ে দেওয়া ইটভাটাগুলো হলো- রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দুয়ারা এলাকায় মেসার্স মঈন অধরা ব্রিকস, মেসার্স হেলাল ব্রিকস, মেসার্স সালাম ব্রিকস-২, মেসার্স সততা ব্রিকস, মেসার্স আরএমকে ব্রিকস, থ্রি এ ব্রিকস। যথাক্রমে এদের দুই লাখ, এক লাখ, দুই লাখ, ৫ লাখ, দুই লাখ ও তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপপরিচালক সাঈদ আনোয়ার জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২ ডিসেম্বর থেকে অভিযান চালিয়ে জেলায় মোট ২৬টি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ২৩ টির কার্যক্রম করা হয়েছে বন্ধ।উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দূষণের দায়ে পর্যায়ক্রমে সব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।