34 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৯:৫২ | ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
টেংরাগিরি ইকোপার্কের বৃক্ষ নিধন করছেন দস্যুরা
পরিবেশগত অর্থনীতি বাংলাদেশ পরিবেশ

টেংরাগিরি ইকোপার্কের বৃক্ষ নিধন করছেন দস্যুরা

টেংরাগিরি ইকোপার্কের বৃক্ষ নিধন করছেন দস্যুরা

বরগুনার তালতলী উপজেলায় অবস্থিত টেংরাগিরি ইকোপার্ক। কয়েকদিন ধরে টেংরাগিরি ইকোপার্কের বৃক্ষ নিধনের পর বিক্রির উদ্দেশ্যে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে বন বিভাগ অফিস-সংলগ্ন খাল দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তালতলী উপজেলা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে সোনাকাটা ইউনিয়নে সুন্দরবনের একাংশের বনভূমি নিয়ে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য টেংরাগিরি ইকোপার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। টেংরাগিরি ইকোপার্কের পাশে আরেকটি পর্যটন আকর্ষণ সোনাকাটা সমুদ্রসৈকত অবস্থিত।



সুন্দরবনের পর এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল, যা দিনে দুইবার জোয়ার-ভাটায় প্লাবিত হয়। লবণাক্ত ও মিষ্টি মাটির অপূর্ব মিশ্রণের কারণে এই বনে রয়েছে বিলুপ্তি প্রজাতির অসংখ্য সারি সারি গাছ, পশু-পাখি ও সরীসৃপ প্রাণী।

টেংরাগিরির সবুজ ঘন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, সৈকতের তটরেখায় লাল কাঁকড়াদের ছুটোছুটি, পাখির কলকাকলি ও শেষ বিকেলের দিগন্ত রেখায় সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য যেকোনো পর্যটকদের মুগ্ধ করার মতো। আর তাই তো নাগরিক কোলাহল এড়িয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাগরের বিশালতার মাঝে হারিয়ে যেতে অনেক ভ্রমণপিপাসুরা দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ঘুরতে আসেন।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ বন বিভাগের কিছু অস্বাধু কর্তাদের যোগসাজশে প্রতিনিয়ত সরকারি বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে। সরকারি বৃক্ষ নিধনে নেওয়া হচ্ছে না কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ।

টেংরাগিরি এলাকার মাহবুব, শানু, রফেজসহ আরও কয়েকজন জেলে বলেন, এই বন আমাদের সম্পদ। কিন্তু এই বন রক্ষা করতে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। আগে গোপনে বনের গাছ কেটে নিত বনদস্যুরা। এখন প্রকাশ্যে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গাছ কেটে ট্রলারবোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছেন তারা।



প্রায় ৪ হাজার ৪৮ হেক্টর জায়গাজুড়ে পূর্ব পশ্চিমে ৯ কিলোমিটার ও উত্তর দক্ষিণে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত টেংরাগিরি এই বনের বিস্তৃতি। বনের পূর্ব দিকে রয়েছে কুয়াকাটা, পশ্চিমে সুন্দরবন আর হরিণবাড়িয়া, উত্তরে রাখাইন এবং দক্ষিণে উন্মুক্ত বঙ্গোপসাগর।

প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই বনটি কেওড়া, গরান, সিংরা, হেতাল, গেওয়া, ওড়াসহ বিভিন্ন শ্বাসমূলীয় গাছ-গাছালিতে সমৃদ্ধ। এছাড়া আছে মিঠা পানির পুকুর, অসংখ্য ছোট ছোট খাল, বন বিভাগের রেস্ট হাউজ ও পিকনিক কর্নার। টেংরাগিরির বনের গহিন অরণ্যের ভেতর দিয়ে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ নিরিবিলি সোনাকাটা সমুদ্রসৈকত।

সৈকতে দাড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের চমৎকার দৃশ্য সৌন্দর্যপ্রিয় যে কাউকে মুগ্ধ করবে। আর চাইলে ট্রলারে করে গহিন বনের জীববৈচিত্র্য ও সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্ছ্বাস উপভোগ করতে পারবেন। তবে গাছ অবাধে বৃক্ষ নিধনে হুমকিতে পড়েছে এ বনের অস্তিত্ব।

পরিবারসহ বেড়াতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সামীউল ইসলাম বলেন, টেংরাগিরিতে ৪/৫ বছর পর এসেছি। এ বনের আগের জৌলুশ নেই। বনের ভেতরে হাঁটলে এখন শুধু গাছের গোড়া দেখা যায়।



গাছ কেটে ফেলায় কমে যাচ্ছে পশুপাখিও। এখানের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় স্থায়ীভাবে বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ এখনই প্রয়োজন।

সহকারী বন সংরক্ষণ আল মামুন বলেন, বিষয়টি আমার কানেও এসেছে। আমি ইতোমধ্যে তদন্তের জন্য বন বিভাগের বিট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। বনের বৃক্ষ নিধনের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত