জলবায়ু সংকোট মোকাবেলায় তহবিল দ্বিগুণ করার দাবি বাংলাদেশের
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈশ্বিক সংকটের বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানের পাশাপাশি এ সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অভিযোজন তহবিল দ্বিগুণ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ বলেছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ রাখতে হলে জীবাশ্ম জালানির বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
দুর্বল অভিযোজন লক্ষ্যমাত্রার খসড়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ বলেছে, বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের লাগাম টানতে হলে যেসব দেশ বেশি কার্বন নির্গমন করে তাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে নেতৃত্ব দিতে হবে উন্নত দেশগুলোকেই।
প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ুবিষয়ক দূত ও দুবাইয়ে চলমান জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে ফসিল ফুয়েলের (জীবাশ্ম জ্বালানির) ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
অনেক দেশ অনেক কথা বলছে। কিন্তু বিজ্ঞান কী বলছে আমাদের তাতে গুরুত্ব দিতে হবে। সিদ্ধান্ত অবশ্যই হতে হবে বিজ্ঞানিভিত্তিক।
অভিযোজনের লক্ষ্যমাত্রার দুর্বল খসড়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু বিষয়ক দূত আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক অভিযোজন লক্ষ্যের যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে তা আমরা পর্যালোচনা করছি। আশা করছি, সমমনা দেশগুলোকে নিয়ে আমরা শেষ দুই দিনে এই খসড়াকে শক্তিশালী করতে পারব।’
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, আমরা নতুন ও অতিরিক্ত সরকারি অর্থায়নে গুরুত্ব দেব। জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের দ্বিগুণ অভিযোজন তহবিল প্রয়োজন।
ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়ে পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ বলেন, এই তহবিল থেকে অর্থ নিতে বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তত। এ ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সংস্থার প্রধান সাইমন স্টিয়েল বলেন, ‘দুবাইয়ে একটি অর্থবহ চুক্তিতে উপনীত হতে হলে আমাদের বাধা সৃষ্টির মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। বৈশ্বিক মূল্যায়ন (গ্লোবাল স্টকটেক) অনুমোদনে সব দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন। এখানে হারজিতের কিছু নেই।
আমি জিতব, আপনি হারবেন— এই মানসিকতা পরিত্যাগ করতে হবে। এখানে একজনের পরাজয় মানে সবার ব্যর্থতা, যা বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
তাই আলোচনার টেবিলে প্রত্যেককে সবার যাতে ভালো হয় সে দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সব দেশের লক্ষ্য হতে হবে বিশ্বের সব মানুষের মঙ্গলের জন্য চূড়ান্ত চুক্তিতে উপনীত হওয়া।’