25 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ৬:৫৮ | ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
জলবায়ু বিপদাপন্ন দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত অনুদান-ভিত্তিক সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধি করতে হবে
জলবায়ু পরিবেশগত অর্থনীতি

জলবায়ু বিপদাপন্ন দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত অনুদান-ভিত্তিক সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধি করতে হবে

জলবায়ু বিপদাপন্ন দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত অনুদান-ভিত্তিক সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধি করতে হবে

বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশের অভিযোজনের জন্য পূর্বাভাসযোগ্য এবং পর্যাপ্ত অনুদান-ভিত্তিক সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধি করতে হবে। উন্নত দেশগুলো ২০২০ ও ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি ডলার সংগ্রহের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো, তা বজায় রাখতে হবে।

গত তিন বছরের (২০২০-২০২২) ঘাটতি পূরণ করতে ধনী রাষ্ট্রগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা এবং ঋণের তুলনায় অনুদান-কে অগ্রাধিকার দেয়ার উপর জোর দিয়েছে বক্তারা।

বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে যৌথভাবে এ সংলাপের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড, অ্যাকশন এগেইনস্ট হাঙ্গার, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস। এসময় বক্তারা ধনী দেশ এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদেরকে দেশের সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের জন্য প্রয়োজন ভিত্তিক, বাধ্যতামূলক হিসাবে ন্যায্যতার সাথে জলবায়ু অভিযোজন অর্থ প্রবাহকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান।



সংলাপের শুরুতে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড কান্ট্রি ডিরেক্টর মনীশ কুমার আগরওয়াল বলেন, জলবায়ু অভিযোজনের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল প্রাপ্তির অভাবে চরম মূল্য চোকাতে হচ্ছে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে।

স্বাগত বক্তব্যে সুইডেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন) নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম তার বক্তব্যে উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়ন হিসাবে প্রতি বছর ১শ বিলিয়ন ডলার প্রদানের জন্য উন্নত দেশগুলোর জলবায়ু কর্মপ্রচেষ্টার উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরুপ প্রভাবের সঙ্গে মানিয়ে চলার জন্য উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবিলম্বে অভিযোজন অর্থায়ন এবং প্রাইভেট ফাইন্যান্স বাড়াতে হব। অভিযোজন শুধুমাত্র একটি সরকারের একার দায়িত্ব নয়।

জলবায়ু ঝুঁকির মূল্য নির্ধারণের অসুবিধা এবং নীতিগত বৈসাদৃশ্যও অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। অভিযোজন প্রচেষ্টাগুলোর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে জলবায়ু সুবিচারকে কেন্দ্রে রাখতে হবে।’

অ্যাডাপটেশন গ্যাপ রিপোর্ট ২০২৩-এ বর্ণিত তথ্য উপস্থাপন করে কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জ্যোতিরাজ পাত্র বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু অভিযোজন প্রচেষ্টার অপ্রস্তুত এবং অপ্রস্তুত অবস্থাকে উন্মোচিত করেছে। রেকর্ড ভঙ্গকারী তাপমাত্রা এবং গুরুতর জলবায়ু চরমপন্থা বিশ্বের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেললেও, অভিযোজন অর্থায়ন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক অপ্রতুল।

বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর যে পরিমান অভিযোজন অর্থায়ন প্রয়োজন তা বর্তমান আন্তর্জাতিক পাবলিক ফাইন্যান্স প্রবাহের চেয়ে ১০-১৮ গুণ বেশি। যা পূর্বে অনুমান করা হিসেব থেকেও কমপক্ষে ৫০ শতাংশ বেশি।

জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আরও বেড়েছে, ফলে অর্থের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া বেসরকারি খাত এই তহবিলে অর্থ দান করতেও ইচ্ছুক নয়।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) বাস্তবায়নে ২০২৩-২০৫০ সালের জন্য ২০৩ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়নের প্রয়োজন চিহ্নিত করেছে।

জলবায়ু সহনশীলতা গড়ে তুলতে প্রতি বছর $৮.৫ বিলিয়ন হারে, বহিরাগত উত্স বা আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল এবং উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত $৬.০ বিলিয়ন সহ অভিযোজন রূপান্তর করতে বর্তমান ব্যয়ের সাতগুণ প্রয়োজন হবে।’

ব্র্যাক-কেএফডাব্লিউ ক্লাইমেট ফান্ড সেক্রেটারিয়েট ড. মোঃ গোলাম রাব্বানীর সঞ্চালনায় এক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ডিপুটি ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. মিজান আর খান , ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) প্রফেসর সামিয়া আহমেদ সেলিম, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন খান, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের প্রধান সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, ইউএনডিপির লজিক (লোকাল গভার্ণমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ) প্রকল্পের সমন্বয়কারী আজাদ রহমান এবং ফ্রেন্ডশিপ-এর পার্টনারশিপ ডেভেলপমেন্টের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক প্রমুখ।

জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ ড. মিজান আর খান উল্লেখ করেন, ‘বর্তমানে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) দিকে পরিচালিত জলবায়ু অর্থায়নের প্রায় ৭০ শতাংশ অনুদানের পরিবর্তে ঋণের আকারে রয়েছে। এছাড়া উন্নত দেশগুলোর সরকারী অনুদান প্রকৃতির কারণে বেসরকারী খাতের আগ্রহকে রোধ করে ৷



আশ্চর্যজনকভাবে, অভিযোজন প্রচেষ্টাকে পাশ কাটিয়ে এই তহবিলের প্রায় ৫৩ শতাংশ অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স (ওডিএ) প্রশমনকে অগ্রাধিকার দেয়। বাঁকানো ধরনের বরাদ্দের ফলে জলবায়ু অর্থায়নের মাত্র ৭-৮% অভিযোজন প্রকল্পে পৌঁছেছে ‘

তরুণ জলবায়ু কর্মী সোহানুর রহমান বলেন, ‘অঙ্গীকারের ফাঁকা বুলিতে বিশ্ব এখন ক্লান্ত। আমরা আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে অনুদানভিত্তিক পর্যাপ্ত অর্থায়ন দাবি করছি। জলবায়ু অর্থায়নে চাপিয়ে দেয়া ঋণ কিংবা দান-খয়রাত নয়, আমরা ন্যায্যতাভিত্তিক হিস্যা চাই।

প্যারিস চুক্তির অধীনে করা প্রতিশ্রুতি পূরণের সাথে সাথে জেন্ডার রুপান্তরমূলক, ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত তহবিল নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য উন্নত বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক আর্থিক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাগুলোকে পুনর্নির্মাণের সময় এসেছে।’

বিশেষজ্ঞ বক্তারা অভিযোজন অর্থায়নের ব্যবধান দূরীকরণে একটি বহুমুখী পদ্ধতির সুপারিশ করেছেন যা আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ উভয় স্তরে সরকারী এবং বেসরকারী উভয় ক্ষেত্রেই অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন উৎসকে লক্ষ্য করতে হবে।

জলবায়ু অভিযোজনের জন্য একটি শক্তিশালী আর্থিক কাঠামো তৈরি করতে বিভিন্ন তহবিল চ্যানেলগুলোর মধ্যে পরিপূরকগুলোকে কাজে লাগানোর উপর জোর দেন বক্তারা।

সমাপনী বক্তব্যে অ্যাকশন এগেইনস্ট হাঙ্গার-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব মোহাম্মদ আকমল শরীফ টেকসই অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তরুণরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন এবং তারা তা করে দেখাচ্ছেন। তবে, এ ক্ষেত্রে দরকার যথাযথ অর্থায়ন ও সহযোগিতা।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত