জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের সমাধান দেখাচ্ছে তরুণরা
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বড় বড় সমস্যার টেকসই সমাধান খুঁজতে কাজ করছে দেশের তরুণরা। বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হোটেলে ‘জেনইউ ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জ ২০২২’ এর ‘ন্যাশনাল পিচিং ইভেন্ট’ হয়, যেখানে অংশ নেয় তরুণদের ১৯টি দল।
প্রত্যেকে দলে ছিল ১৫ থেকে ২৪ বছরের বয়সী তিন থেকে পাঁচজন করে তরুণ। খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা বিভাগের এই প্রতিযোগীরা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে নিজেদের বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা তুলে ধরেন।
দিনভর পিচিং ইভেন্ট শেষে বিজয়ী হয় ঢাকা বিভাগের ‘বিডি হাইওয়ে টারবাইন’ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ‘ক্লাইমেট ক্রু’ নামের দল দুটি।
আগামী সেপ্টেম্বরে গ্লোবাল জেনইউ ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জের ভার্চুয়াল ইভেন্টে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ৩০টি দেশের দুটি করে দল ওই আন্তর্জাতিক পর্বে অংশ নেবে। এর মধ্যে সেরা ১০টি দল ১০ হাজার ডলারের তহবিল পাবে তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য।
যুব উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তরুণদের নেতৃত্বে তার সমাধান খোঁজার চেষ্টায় জেনইউ ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জের বাংলাদেশ পর্ব শুরু হয়েছিল মূলত ২০২২ সালে। ওই বছর দেশের ছয়টি বিভাগে বুটক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।
সেসব ক্যাম্পে অংশ নেওয়া ১৩৩টি দল থেকে ২০টি দলের প্রকল্প বাছাই করা হয় পিচিং ইভেন্টের জন্য। এক হাজার ডলার করে সিড ফান্ডের পাশাপাশি প্রকল্প তৈরির কাজে তাদের সহযোগিতা করা হয়।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত এসব দলের মধ্যে একটি বাদে ১৯টি বৃহস্পতিবার বিচারক প্যানেলের সামনে তাদের ধারণা উপস্থাপন করে।
মেরি কুরি স্কুলের ‘এ লেভেল’ শিক্ষার্থী শ্রবনা নুবাহ সাবির দল ‘টিম ক্লাইমেট ওয়ারিয়র্স’ এই ১৯ দলের একটি। তার দল কাজ করছে বাংলাদেশে খাদ্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে। শ্রবনা বলেন, তারা একটি যন্ত্র তৈরির ধারণা নিয়ে কাজ করেছেন, যেটি খাদ্য বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে সারে (পেস্ট) পরিণত করতে পারে।
ওই সার পরে বাড়ির বাগানসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যাবে। আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা হল ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করা। আমরা সবাইকে আমাদের এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানাব। দেশের রেস্তোরাঁগুলোতেও যোগাযোগ করা হবে।
পিচিং ইভেন্ডের উদ্বোধনী পর্বে অংশ নিয়ে ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, দেশের তরুণদের এসব ভাবনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য খুবই উপযোগী। তরুণদের এমন উদ্ভাবনী ধারণার সঙ্গে ইউনিসেফের অংশগ্রহণ অত্যন্ত বড় একটি বিষয়।
জেনইউ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য কিছু করতে হলে যুবকদের পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিতে হবে। ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত করার দায়িত্ব এই তরুণদের ওপরই বর্তায়।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহায়তায় জেনারেশন আনলিমিটেড, জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম, এসআইওয়াইবি বাংলাদেশ, টেকনোভেশন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।